ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার হয়নি
আতঙ্কে ধলাই তীরের মানুষ
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত খরস্রোতা ধলাই নদীর পাশের জনপদের লোকজনের দুঃখ বলে পরিচিত। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আসে এ নদীটি। ত্রিপুরা থেকে প্রতি বৎসর বর্ষাকালে উজান হইতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে পলি মাটি চলে আসে। আর এ পলি মাটিতে ধলাই নদী তলদেশ ভরাট হওয়ায় বন্যায় নদী তীরবর্তী গ্রামের বাড়িঘর খেতের ফসল তলিয়ে গিয়ে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়।
ধলাই নদী এলাকা রহিমপুর, মুন্সীবাজার ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়ি বাঁধে বন্যা পরবর্তী সময়ে প্রায় ৭ মাস অতিবাহিত হলেও বেড়িবাঁধগুলো স্থায়ীভাবে মেরামতের কাজ এখনো শুরু হয়নি। ফলে নদীর পাড়ের মানুষেরা চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন। নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাঁধগুলো দ্রুত মেরামত করা না হলে অল্প বৃষ্টিতে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছরের বন্যায় ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙে কয়েক দফা বন্যা হয়েছে। বন্যায় ফসল ও ঘরবাড়ি হারিয়েছেন ধলাই নদী ও শাখা নদীর তীরবর্তী গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ঘরবাড়ি, জমির ফসল হারিয়ে লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েন। ফলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত ও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ভাঙাগুলো যেভাবে মেরামত করা হয়েছে সেগুলো ও ঝুঁকিপূর্ণ থাকলেও বন্যা পরবর্তী ৭ মাস চলে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এগুলো স্থায়ীভাবে কাজ এখনো শুরু করেনি।
নদীভাঙন এলাকার লোকজন জানান, বর্ষাকাল চলে আসছে বষধলাই নদীর অন্ততপক্ষে ১৩টি ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙা বাঁধ মেরামত করা জরুরি প্রয়োজন। বন্যা পরবর্তী দীর্ঘদিন চলে গেলেও এখনো বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়নি। শুষ্ক মৌসুমে কাজ না করালে আমরা ফের বন্যায় প্লাবিত হবো। তারা আরো বলেন, এখন নদীর পানি কম কাজ করালে চুরি করতে পারবেনা ঠিকাদার। নদীতে পানি হলে কাজ শুরু করবে। আর একটু কাজ করে বলবে নদীর স্রোতে সব তলিয়ে গেছে। ধলাই নদীর চৈত্রঘাট এলাকার নাজমুল ইসলাম বলেন, গত বছর এলাকায় দিয়ে ধলাই নদী ভেঙে সবকিছু নিয়ে গেছে। এখনও নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এই অংশে ভাঙন দেখা দিবে। রহিমপুর ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ধলাই নদী হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে এবং ভাঙন বাঁধ স্থায়ীভাবে মেরামত করা জরুরি। বর্ষা শুরুর আগে স্থায়ী মেরামত না হলে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে এই অংশে আবারও নদীভাঙন দেখা দিবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানাচ্ছি ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করার জন্য। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ জানান, এই অর্থ বছরে ধলাই নদীর ভাঙা বাঁধ মেরামত করা হবে। অনেকগুলো কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। কিছু কাজর চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ রয়েছে সেগুলো মেরামত করা হবে।