মিরসরাইয়ে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মিরসরাই প্রতিনিধি

ন্যায্য মজুরিসহ ১৪ দফা দাবিতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মর্ডান সিনটেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে মর্ডান সিনটেক্স কারখানার সামনে দাবি আদায়ের নানা স্লোগানে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় কারখানা এলাকায় সেনাবাহিনীর গাড়ি টহল দিতে দেখা গেছে। এছাড়া আন্দোলনরত শ্রমিকদের ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশ আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। বিক্ষোভকারী শ্রমিকেরা জানান, বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি নিয়ে শনিবার সকাল থেকে কর্মবিরতি দিয়ে তারা কারখানার বাইরে আন্দোলন করেন। এ সময় কারখানার কর্মকর্তারা আশ্বাস দেন, মালিকপক্ষের সঙ্গে আন্দোলনরত শ্রমিকদের প্রতিনিধি নিয়ে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবে। শ্রমিকদের ১৪ দফা দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ইনক্রিমেন্ট বাড়িয়ে ইনক্রিমেন্টের এডজাস্ট টাকাগুলো দিতে হবে এবং জুনিয়র অপারেটর যারা আছে তাদের সবার বেতন সর্বনিম্ন ১৮ হাজার করতে হবে ও ঈদ বোনাস দিতে হবে। সরকারি বন্ধতে কারখানা বন্ধ দিতে হবে এছাড়া যদি কাউকে ডিউটি করতে হয় সেক্ষেত্রে হাজিরা ডাবল দিতে হবে।

দুপুরের খাবার অফিস কর্তৃপক্ষ খাওয়াতে হবে। একজনকে দিয়ে তিনজনের কাজ করানো যাবে না। জনবল বাড়াতে হবে। শ্রমিকদের হেনস্তা বন্ধ করতে হবে। বেতন প্রতিমাসের ১-৫ তারিখের মধ্যে দিতে হবে। টিফিন টাইম লাঞ্চ টাইম পরিপূর্ণ কাটাতে দিতে হবে এবং লাঞ্চের সময় প্রত্যেকটা গেট ১ ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। কেউ যদি চাকরি থেকে বিদায় নিতে চায় তা হলে তাকে পরিপূর্ণ মর্যাদা দিয়ে বিদায় দিতে হবে কোনো হেনস্তা করা যাবে না। বৈষম্য দূর করে সবাইকে সমান মর্যাদা দিতে হবে। প্লান্টের ক্যান্টিনে বাড়তি দাম কমাতে হবে। সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে হবে। আন্দোলনরত কারখানার জুনিয়র অপারেটর তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, এখানে কর্মক্ষেত্রে প্রতি পদে পদে বৈষম্যের সম্মুখীন হতে হয় শ্রমিকদের। আমরা ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

কারখানা শ্রমিক মেহেদী হাসান, এসএম মিলন সানি, আরাফাত আহমেদ জানান, গতকাল কারাখানার কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলনে প্রায় ৪ শতাধিক শ্রমিক অংশ নিয়েছে। আমাদের ১৪টি দাবি রয়েছে সেগুলো পূরণে কর্তৃপক্ষ সাড়া না দিলে আন্দোলন চলমান থাকবে। মর্ডান সিনটেক্স লিমিটেড জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল শাখার ম্যানাজার (এইচ আর) ইয়াসির আরাফাত বলেন, তাদের অন্যতম দাবি হচ্ছে বেতন নিয়ে। কিন্তু আমাদের যখন ইন্টারভিউ হয় তখন আমরা শ্রমিকদের বলে দিই তোমাদের ৮ ঘণ্টার স্যালারি ডিউটি হবে ১২ ঘণ্টা। টোটাল এমাউন্ট তখন বলে দেওয়া হয়। এখানে ওভারটাইমসহ এড করা। শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের পারফরম্যান্স অনুযায়ী বেতন বাড়বে। পারফরম্যান্স ভালো হওয়ার ভিত্তিতে বেতন বাড়ে।

মর্ডান সিনটেক্স লিমিটেড জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল শাখার জিএম সফল বড়ুয়া জানান, আমাদের অফিসিয়ালি আগে এসব জানানো হয়নি। হঠাৎ আন্দোলনে নেমেছে শ্রমিকরা। আমাদের সঙ্গে তারা আগে বসেননি। কিছুক্ষণ আগে তারা আমাদের আধা ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য। সব দাবি একজন কর্মকর্তা হিসেবে ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বলতে পারি হুট করে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না। একসঙ্গে মেনে নেয়া সম্ভব না। এগুলার জন্য বসার জায়গা আছে, আলোচনার বিষয় আছে। আমরা অনুরোধ করছি আমাদের সঙ্গে বসার জন্য এবং একটি নির্দিষ্ট সময় দেয়ার জন্য। শ্রমিকদের উচিত কোম্পানির অগ্রগতির পাশে থাকা।