খোকসায় বিয়ের আগের রাতে কনের বাড়ি থেকে গহনাসহ সর্বস্ব লুট

কুষ্টিয়ার খোকসার গ্রামে বিয়ের আগের রাতে কনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে বিয়ের কনেসহ ৫ নারীর সব গহনা ও বিয়ের খরচের সব টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। গত শনিবার দিনগত গভীর রাতে উপজেলা শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়াডের ইসলামপুর গ্রামের বিধান রায়ের বড় মেয়ে সাথি রানীর বিয়ের আগের রাতে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

১০-১২ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত বিয়ে বাড়ির আলোকসজ্জার বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে দিয়ে ডাকাতি শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ডাকাতরা সর ঘরে তল্লাসী চালায়। ডাকাতরা বিয়ের কনের নাকের নাক ফুল, গলার মালা, হাতের কাকনসহ প্রায় ৩ ভরি স¦র্ণের গহনা নিয়ে যায়। এছাড়া বিয়ে উপলক্ষে আসা নারী আত্মীয়দের চার জনের প্রায় ৪ ভরি স¦র্ণের গহনা ও বিয়ে খরচের নগদ প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকাও নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাতেই থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

ভুক্তভোগী বিধান রায় জানান, রাত ২টার পর হঠাৎ বাড়ির আলোকসজ্জার আলো নিভে যায়। এ সময় তিনি বাড়ির উঠানে নেমে আসেন। এ সময় বিয়ের প্যান্ডেলের কাপড়ের আড়াল থেকে ৫-৬ জন লোক এসে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর তার চোখ ও হাত বেঁধে ফেলে। তাকে দিয়ে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকদের ডাকে তুলতে বাধ্য করে। এরপর ডাকাতরা বিয়ে বাড়িতে আসা অতিথি ও বাড়ির নারীদের মারপিট শুরু করে। ঘরে ঘরে তল্লাসি চালিয়ে মেয়ের বিয়ের গহনাসহ আত্মীয়-স্বজনদের কয়েক ভরি স¦র্ণের গহনা লুটে নেয়। প্রায় এক ঘণ্টা পর ডাকাতি শেষে ডাকাত দল চলে যায়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর তার স্ত্রী এসে তার হাত মুখ চোখের বাঁধন খুলে দেন। তিনি আরও জানান, ডাকাতদের প্রত্যেকের হাতে ধারালো অস্ত্র ছাড়াও কয়েকটি বন্দুক ছিল। ডাকাতরা মেয়ের গহনা, বিয়ে খরচের টাকা তো নিয়েছে আত্মীয়দের ৫-৬ লাখ টাকার গহনা নিয়ে গেছে। তাকেসহ বাড়ির নারীদের মারপিট করেছে।

বিয়ের পাত্রীর মা লিপি রানী রায় জানান, দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি একটি ঘরে শুয়েছিলেন। স্বামী বিধান রায় ছিলেন ঘরের বারান্দায়। ডাকতরা তার স্বামীকে আটকে মারপিট শুরু করলে তিনি ঘরের দরজা খুলে উঠানে নেমে আসেন। ডাকাতরা বিয়ের আসর খরচের টাকাও নিয়ে গেছে। বিয়ের কনের নাক ফুলটিও রেখে যায়নি। ডাকাতির হামলার শিকার বিয়ের কনে সাথি রায় উপজেলা সদরের সাইদুর রহমান মন্টু মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। গতকাল রোববার দিনগত রাতে একই উপজেলার জানিপুর ইউনিয়নের চর দশকাহুনিয়া গ্রামের স্কুল শিক্ষক সমীর বিশ্বাসের সঙ্গে তার বিয়ে হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই ডাকাতরা গহনাসহ সর্বস্ব লুটে নিয়ে গেল।

খোকসা থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, তিনি নিজে রাতেই ঘটনা স্থলে গিয়েছিলেন। ওনারা মেয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে থানায় আসতে চেয়েছেন। এ ছাড়া নিরাপত্তা রক্ষায় ঘটনাস্থলে পুলিশ রাখা হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানিকতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ সেখানে থাকবে।