নেত্রকোনার প্রথম নারী সাংবাদিক কবি নাসিমা সুলতানার মৃত্যু

প্রকাশ : ২১ জুলাই ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নেত্রকোনা প্রতিনিধি

কবি-ছড়াকার ও সমাজসেবী নাসিমা সুলতানা শফি আর নেই। তিনি শনিবার গভীর রাতে রাজধানী ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনিসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। তিনি প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরীর স্ত্রী। এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে নেত্রকোনা সাংবাদিক ফোরামণ্ডঢাকা, নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব ও প্রতিভা প্রকাশ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

নাসিমা সুলতানা শফি ছিলেন নেত্রকোনার প্রথম নারী সাংবাদিক। স্বাধীনতার পর তিনি ‘বেগম’ পত্রিকায় প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেছেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গনে অতি সুপরিচিত নাম। ষাটের দশকে তার ছোট গল্প, ছড়া-কবিতা ‘উত্তর আকাশ’, ‘বেগম’ ও স্থানীয় বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সত্তর দশকে বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার, সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ শফি বিক্রমপুরীর সাথে বিয়ে হলে তাঁর লেখালেখি ভিন্নমাত্রা পায়। বাংলাদেশ শিশু একাডেমী থেকে প্রকাশিত নাসিমা সুলতানা শফির লেখা ছড়াগ্রন্থ ‘শিউলি বেলীজুঁই’ ব্যাপক পাঠকনন্দিত হয়। এ ছাড়া তাঁর লেখা ‘মজার ছড়া’, ‘খোকা খুকুর ছড়া’, ‘মিষ্টি মধুর ছড়া’, ‘টাপুর টুপুর সারা দুপুর’, ‘দূর আকাশে চাঁদের দেশে’, ‘চাঁদনি রাতে পরির সাথে’, ‘ফুলের বাসে পরি আসে’, ‘দূর্বাঘাসে সূর্য হাসে’, ‘বাতাস দোলে শাপলা ফুলে’ যাচ্ছে গাড়ি চাঁদের বাড়ি’, ‘গাঁয়ের ছায়ামায়ের মায়া’ মেঘের নায়ে অচিন গাঁয়ে’ এবং ‘জোসনা ঝরে খোকার ঘরে’-এ ১৩টি ছড়াগ্রন্থও সবার মন জয় করেছে। এছাড়া তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘তবুও স্বপ্নের পাখিরা ওড়ে’, নান্দনিক গল্পগ্রন্থ ‘প্লাবিত জোছনা’, ‘মনের ভেতরমন’, মিষ্টি প্রেমের উপন্যাস ‘হৃদয়ে ভালবাসা’, কিশোর উপন্যাস‘ রইশ্যারশান’ এবং শিশু কিশোর গল্পগ্রন্থ ‘রাজুর বন্ধু ব্যাঘ্রমামা’, ‘খুকু ও ভূত’ ও ‘তুতুল মিতুল ও বিড়াল ছানা’ পাঠকের কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। নাসিমা সুলতানা শফি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি ছিলেন দীর্ঘদিন। এছাড়া তিনি নাসিমা শফি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেগম ফাতেমা আরশেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া, বিক্রমপুরে আল-মদিনা জামে মসজিদ ও মাদরাসা এবং নেত্রকোনার পাঁচকাহুনিয়ায় প্রতিষ্ঠা করেছেন ফাতেমা আমীর আলী দারুল উলুম মাদরাস ও মসজিদ।