প্রেমের টানে মাদারীপুরের তরুণীকে বিয়ে করলেন চীনের যুবক
প্রকাশ : ৩০ জুলাই ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরের কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তারের (১৯) প্রেমের টানে চীনের নাগরিক সিতিয়ান জিং নামের এক যুবক মাদারীপুরে এসেছেন। বর্তমানে বিয়ে করে তিনি মাদারীপুরে শ্বশুড়বাড়িতে আছেন। এদিকে ভিনদেশি জামাইকে একনজর দেখার জন্য সুমাইয়ার বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকার উৎসুক লোকজন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার সাইদুর মুন্সির মেয়ে সুমাইয়া আক্তার সিতিয়ানকে প্রথম টিকটকে দেখে ভালো লেগে যায়। এরপর ইউটার্চের মাধ্যমে তাদের মধ্যে কথা চালাচালি হয়। দুজনই সফটওয়ারের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের কথা একে অন্যকে জানাতেন। সুমাইয়ার সঙ্গে মাত্র চার মাস প্রেম করে বাংলাদেশে চলে এসেছেন সিতিয়ান। ২৪ জুলাই চীন থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর ২৬ জুলাই মাদারীপুর মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন তিনি। সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল মুন্সি ও আরও দুই আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে তাকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। এরপর ২৭ জুলাই সিতিয়ান ও সুমাইয়া বিয়ে করেন।
সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। এদিকে চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং ও মা ওয়াং ইং দম্পতির ছেলে সিতিয়ান জিং (২৬)। ছেলের সাংহাই শহরে সিতিয়ানের রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউটার্চের মাধ্যমে আমাদের কথা বলা শুরু হয়। কথা বলতে বলতে আমরা একে অন্যের প্রেমে পড়ে যাই। কিন্তু মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে সিতিয়ান বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনও ভাবিনি। ও প্লেনে ওঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসতেছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করেনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি। ও তার মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। ওরাও মুসলিম।
ওর (ছেলের) মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই সিতিয়ান বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছে। এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি ও এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এরই মধ্যে আমার সব কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইল ফোনে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন সিতিয়ান। এব্যাপারে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে, তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাব। আমার পরিবার সব জানে।
তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছে।
প্রতিবেশীরা বলেন, আমরা আগে কখনও সামনাসামনি চীনের মানুষ দেখিনি। সুমাইয়ার জন্য তা দেখতে পেলাম। সুমাইয়াকে ভালোবেসে ওই ছেলে চীন থেকে এসেছেন। বাংলা কথা বলতে পারেন না। তবুও আমাদের সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলেন। মনে হচ্ছে ছেলেটি ভালো হবে। আর শুনলাম সুমাইয়াকেও চীনে নিয়ে যাবে। আসলে এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় আর ঘটেনি। এমন ঘটনায় এলাকার মানুষ খুব খুশি।
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল মুন্সি বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে চীনের নাগরিক সিতিয়ান জিংয়ের মোবাইলে প্রেম হয়। এরপর সে বাংলাদেশে এসে আমার মেয়েকে বিয়ে করে। এখন সে আমাদের এখানেই আছে। ও খুব ভালো। এক মাস থাকবে এবং পরে আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। এতে আমরা খুব খুশি।
