ঈশ্বরগঞ্জে অবৈধ অটোরিকশার দৌরাত্ম্য বেড়েছে

প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  মো. ইসহাক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ)

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার গ্রামীণ সড়ক ও মহাসড়কে অবাধে চলাচল বেড়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা ও ইজিবাইকের। এতে নিত্য যানজটের কবলে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারী, স্কুল শিক্ষার্থী ও স্থানীয় মানুষদের। ঘটছে ছোট-বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। এসব গাড়ির নেই কোনো রেজিস্ট্রেশন, কাগজপত্র ও অনুমোদন। গ্রামীণ সড়ক ও মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত এসব গাড়ি চলাচলের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না চালকরা। সরেজমিন দেখা যায়, সড়ক আইন অমান্য করে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক ও ঈশ্বরগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক পথে বেপরোয়াভাবে অটোরিকশাগুলোর দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এসব গাড়ি প্রায়শই চলছে উল্টো পথে এতে বেগ পোহাতে হচ্ছে দ্রুতগতির যানবাহনগুলোর। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে যানজট। দুর্ঘটনায় কেউ প্রাণ হারাচ্ছে, কেউ আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছে।

অন্যদিকে ব্যাটারিচালিত গাড়িগুলো গিলে খাচ্ছে বিদ্যুৎ। এসব ব্যাটারিচালিত গাড়িগুলোতে বিদ্যুৎ এর অবৈধ লাইন নিয়ে চার্জ দেওয়া হয়। ফলে বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে অনেক, বেড়েছে লোডশেডিং। রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

জানা গেছে, সাধারণত একটি ইজিবাইকের জন্য চার থেকে পাঁচটি ১২ ভোল্টের ব্যাটারি প্রয়োজন। আর প্রতি সেট ব্যাটারি চার্জের জন্য গড়ে ৯০০ থেকে এক হাজার ১০০ ওয়াট হিসেবে পাঁচ থেকে ছয় ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ হয়। এতে অনায়াসে পাঁচণ্ডছয় ঘণ্টা চালানো যায়। সে হিসেবে প্রায় ৬০ লাখ ইজিবাইক বা ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জের জন্য জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হওয়ার কথা। কিন্তু ৮০ ভাগ গ্যারেজে চুরি করে ও লুকিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এসব ব্যাটারি রিচার্জ করায় সরকার দৈনিক প্রায় ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশের জেলা প্রশাসন বা ট্রাফিক বিভাগের কাছে ইজিবাইক কিংবা অটোরিকশার কোনো পরিসংখ্যান নেই।

বেশির ভাগ চালকই সামান্য অর্থের বিনিময়ে অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক লাইন থেকে গাড়িগুলোতে চার্জ করিয়ে নিচ্ছেন। তারা এই গাড়িগুলো যে গ্যারেজে রাখছেন সে জায়গা থেকেই রাতভর একটি গাড়ির শুধু চার্জের জন্য গ্যারেজ মালিককে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা করে দিচ্ছেন।

পথচারী নজরুল ইসলাম বলেন, ঈশ্বরগঞ্জে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা চালকদের নেই কোনো প্রশিক্ষণ বা লাইসেন্স। ফলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাজার, বাস স্টেশন, তীব্র যানজটসহ সড়কে শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হচ্ছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে, প্রায় সময়ই ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা। তাই প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, অতিদ্রুত অবৈধ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালাউদ্দিন বিশ্বাস জানান, পৌরসভা থেকে লাইসেন্স মনিটরিং টিম করা হয়েছে। তারা ২৮ তারিখের পর কাজ শুরু করবে।