কেশবপুরে বাড়ছে হলুদের আবাদ
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মশিয়ার রহমান, কেশবপুর (যশোর)

যশোরের কেশবপুর উপজেলায় চলতি বছর মশলাজাতীয় ফসল হলুদের ব্যাপক চাষ হয়েছে। বাজার মূল্য বেশি থাকায় চাষিদের মধ্যে এ মশলা জাতীয় হলুদ চাষে আগ্রহ বেড়েছে। তারা হলুদ চাষ করে সোনালি স্বপ্ন বুনছেন। উপজেলার বন্যামুক্ত উঁচু এলাকা মজিদপুর ইউনিয়নের বাগদহা, মির্জাপুর, শ্রীফলা, প্রতাপপুর, বায়সা, হাসানপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর, কাবিলপুর, হাসানপুর, ত্রিমোহিনি ইউনিয়নের চাদড়া, মির্জানগর, বরনডালি, গোপালপুর, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের জাহানপুর, ভালুকঘর, বেগমপুর, মঙ্গলকোট ইউনিয়নের বসুন্তিয়া, কেদারপুর, পাঁজিয় ইউনিয়নের কমলাপুর, গড়ভাঙ্গা, বেলকাটি, সাগরদত্তকাটি এলাকায় জমিতে এই মশলাজাতীয় কৃষিজাত পণ্য হলুদের চাষ হয়েছে ব্যাপক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, হলুদ রোপণে খরচ একেবারে সীমিত। বীজভেদে কাঠাপ্রতি খরচ হয় মাত্র ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। বীজ হলুদ ৭ থেকে ৮ কেজি মূল্য ৫০০ টাকা। উৎপাদন হয়ে থাকে কাঠাপ্রতি ৫ থেকে ৭ মণ। কাঁচা হলুদ প্রকারভেদে বিক্রয় হয়ে থাকে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ দরে। বর্তমান বাজারে প্রতি কাঠায় সর্বনিম্ন লাভ হয় ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা। হলুদ চাষের সময় কাল ৯ মাস। তিনি আরও বলেন, হলুদ ক্যান্সার রোধক, হজম ভালো করে। এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তক মসৃন হয়, ব্যাড কোলেস্টেরল নষ্ট করে, ফ্যাটিলিভার ভালো হয়। রূপচর্চায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার মজিদপুর গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান, আয়ুব আলী, কেদারপুর গ্রামের কৃষক আবদুল মাজেদ, কাবিলপুর গ্রামের প্রভাষক মনোতষ দাস, তাপস দাস, জাহানপুর গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম, গড়ভাঙ্গা গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম হোসেন, সিদ্দিকুর রহমান বলেন, হলুদ চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়।
হলুদ বিভিন্ন রোগ নিরাময় করে। কৃষকের হলুদ বাগান সবুজ গাছে মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কৃষকরা আরও জানান, হলুদ চাষে পোকা থেকে মুক্ত থাকতে পারলে অনেক লাভ হয়, যার কারণে এ উপজেলায় হলুদ চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। তবে এই সময় হলুদে বিভিন্ন রোগ আক্রমণ করে থেকে। বিশেষ করে পরিকল্পনা অনুযায়ী হলুদ পচা রোগ, শ্বাসনালী বা কচিডগা পোকার আক্রমণের জন্য নিয়মিত ওষুধ দিতে হবে। পানি যাতে জমে না থাকে, তার জন্য পানি সরানো নালা করতে হবে। রোগের ওষুধ হিসেবে দানা কোস্টার ও তরল টিল্ট ব্যবহার করলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
কেশবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত বছর কেশবপুর উপজেলায় হলুদ চাষ হয়েছিল মাত্র ৬৭০ বিঘা জমিতে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ১২০ বিঘা, যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কেশবপুর উপজেলার কৃষকের মশলাজাতীয় ফসলের চাষের আগ্রহ আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এ বিষয়ে হলুদ চাষি কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
