সাঁথিয়ায় বৃদ্ধাকে নির্যাতন, ছেলে ও পুত্রবধূসহ কারাগারে পাঁচ

প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কাজী বাবলা, পাবনা

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার হাঁপানিয়ায় গর্ভধারিনী মা কে নির্মম নির্যাতনের ঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হলে উপজেলা প্রশাসন গতকাল রোববার সকালে অসুস্থ মা কাঞ্চন খাতুনকে (৭৫) উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এর আগে গত শনিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার হাঁপানিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নির্যাতক ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৫), পুত্রবধূ সোনালী (৪০), ছেলের শ্যালক মনিরুজ্জামান (৩৫), শ্যালিকা ফরিদা খাতুন (৩৭) এবং মুরশিদা খাতুনকে (৩৩) আটক করেছে যৌথ বাহিনী। রোববার দুপুরে আটকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার হাঁপানিয়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ভারসাম্যহীন বয়স্ক স্ত্রী কাঞ্চন খাতুনকে গত শনিবার তার পুত্রবধূ সোনালী খাতুন ও পুত্র নজরুল ইসলাম অমানুষিক নির্যাতন করে। যা ভিডিও ধারণ করে স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে পরে। ভাইরাল হওয়া ফেসবুক ভিডিও থেকে দেখা যায় প্রথমে বৃদ্ধ শাশুরি কাঞ্চন খাতুনকে (৭৫) পুত্রবধূ সোনালী জঙ্গলে ফেলে মারপিট করছে। দ্বিতীয় দফায় পুত্র নজরুল ইসলাম মাকে গলা টিপে ধরছে। এক পর্যায় ছেলে মাকে উঁচু তরে তুলে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে। বৃদ্ধ মা চিৎকার করে কান্না করছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে সাধারণ মানুষের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠতে থাকে। এ ঘটনায় বৃদ্ধা কাঞ্চন খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়ে। গতকাল রোববার সকালে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিজু তামান্না বৃদ্ধা কাঞ্চন খাতুনকে উদ্ধার করে সাঁথিয়া নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এর আগে গত শনিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পাঁচজনকে আটক করে। আটককৃতদের রোববার পাবনা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে গত শনিবার রাতে বৃদ্ধা কাঞ্চনের মেয়ে আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে সাঁথিয়া থানায় মামলা করেছেন।

এলাকাবাসী ও কাঞ্চন খাতুনের মেয়ে আম্বিয়া জানান, তার মা মানুষিক ভারসাম্যহীন। তাকে মাঝে মধ্যে ভাবি সোনালী ও ভাই নজরুল নির্যাতন করত। নজরুল ইসলাম স্ত্রীর কথায় মাকে মারপিট করে। স্ত্রীর কথা না শুনলে ভাইকেই মারপিটের স্বীকার হতে হয়। তিনি এঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিজু তামান্না জানান, রোববার নির্যাতিত অসুস্থ মাকে সাঁথিয়া হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। গত শনিবার মাকে মারপিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় স্থানীয়রা সমস্যার সৃষ্টি করলে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর টিম উপস্থিত হয়। পরে সেনা বাহিনীর সহায়তায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়। আটকদের প্রথমে সেনা ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ করে থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, বৃদ্ধা মাকে নির্যতনের ঘটনায় ছেলে ও পুত্রবধূসহ ৫ জনকে আটক করা হযেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার থানায় মামলা হয়েছে। রোববার দুপুরে আটকদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।