ঈশ্বরগঞ্জে ব্রিজ ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল
দুর্ভোগে ১৪ গ্রামের মানুষ
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মো. ইসহাক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ)

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বটতলা গ্রামে অবস্থিত বেইলি ব্রিজটি দীর্ঘদিন ধরে ভেঙে পড়ে আছে। এক বছরেরও বেশি সময় পার হলেও স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় চর-আলগী, আতকাপাড়া, পূর্বপাড়া, মরিচারচর, টান মলামারী, শান্তিনগরসহ ১৪টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ কার্যত অবরুদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
জানা যায়, ব্রিজটি ১৯৯০ সালের দিকে নির্মিত হয়। ২০২৩ সালে প্রথমবার ভেঙে গেলে স্থানীয়রা নিজস্ব অর্থায়নে একটি সাঁকো তৈরি করেন। পরবর্তীতে প্রশাসনের উদ্যোগে স্টিলের কালভার্ট বসিয়ে মেরামত করা হলেও ২০২৪ সালের প্রবল বর্ষণে আবারও ধসে পড়ে ব্রিজটি। পরবর্তীতে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হলেও সেটিও ভেঙে গিয়ে অচল হয়ে গেছে। ফলে বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় পুরো এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সবজি ও ফসল উৎপাদনে সমৃদ্ধ এ অঞ্চলের কৃষকরা বাজারে পণ্য নিতে না পেরে মাঠেই ফসল নষ্ট করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এতে তারা চরম লোকসানের শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া ব্রীজ সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সাঁকো পার হতে না পেরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। রোগী পরিবহনসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজে ভোগান্তির যেন শেষ নাই।
এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর ধরে একই দুর্ভোগে আছেন তারা। স্থানীয় এক কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ফসল মাঠেই পচে যাচ্ছে।
বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না। অসুস্থ মানুষকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। অথচ প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিচ্ছে, কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
আতকাপাড়া গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা আহসানুল হক সিয়াম বলেন, যদি একটা স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। আমরা এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবো। কোমলমতি শিশুরা স্কুলে যেতেও আর ভয় পাবে না। আমার আশা প্রশাসন এটি দ্রুত সমাধান করবেন।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা রহমান বলেন, আমি উপজেলার অর্থায়নে সাকু করে দিয়েছি। আর সড়ক ও জনপদ বিভাগ আমাকে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয় তারা ব্রিজের প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খায়রুল বাসার মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, তবটতায় নতুন একটি ব্রীজের জন্য এরমধ্যেই আমরা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আশাকরি এই অর্থবছরের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন করতে পারব। এলাকাবাসীর দাবি, অচিরেই স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। দাবি পূরণ না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
