নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এমকে রানা, পটুয়াখালী

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন আগুনমুখা, দাঁড়ছিরা ও ডিগ্রি নদীর ভাঙনে চরম হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতিনিয়ত গ্রাস করছে বসতবাড়ি, ফসলি জমি, বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ অবস্থায় ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। গতকাল বৃহস্পতিবার শত শত মানুষ নদীর তীরে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। পরে চালিতাবুনিয়া বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্থানীয়রা। এ কর্মসূচিতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে অংশ নেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক গাজী ঈসা, ইউপি সদস্য মো. আল-আমিন সরদার, ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম সিকদার, ইউপি সদস্য ও চালিতাবুনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ অলিউল্লাহ, মমতাজ উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল মান্নান মল্লিক, সৈয়দ হাফিজুর রহমান, গাজী মোশাররফ হোসেনসহ অনেকে। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন রাঙ্গাবালীর অন্যতম জনবহুল এলাকা। নদীভাঙনে পুরো ইউনিয়ন বিলীন হওয়ার পথে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এখানে শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়বে। ইউপি সদস্য সাইদুল ইসলাম সিকদার বলেন, প্রতিনিয়ত নদী ভাঙনে গ্রাম ও বাজার হারিয়ে যাচ্ছে। সরকারিভাবে কিছু ড্রেজিং বা অস্থায়ী কাজ হলেও তা টেকসই হচ্ছে না। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণই একমাত্র সমাধান। শিক্ষক আব্দুল মান্নান মল্লিক বলেন, আমাদের বিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়াশোনা করছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে পুরো প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। স্থানীয় গৃহবধূ লতিফা বেগম বলেন, আমাদের বসতবাড়ি নদীতে চলে যাচ্ছে। কোথাও আশ্রয়ের জায়গা নেই। সরকার যদি বাঁধ না করে, আমাদের হয়তো অন্যত্র চলে যেতে হবে। এ বিষয়ে কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহ্ আলম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা সম্পন্ন হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে। তবে বর্তমানে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এত বিশাল অংশে কাজ করা সম্ভব নয়।মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রাঙ্গাবালীর চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নকে বাঁচাতে হলে দ্রুত নদী ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া এ বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব নয়। বক্তারা আরও জানান, সরকারিভাবে প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও বাস্তবায়নে গড়িমসি ও দুর্বল পরিকল্পনার কারণে কাজ টেকসই হয় না। ফলে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প নদীতে ভেসে যায়। চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন আজ নদীভাঙনের ভয়াবহ হুমকির মুখে। এলাকাবাসীর দাবি, এখনই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে পুরো ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে বিলীন হয়ে যাবে। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।