গুরুদাসপুরে ৪০০ বছরের গায়েবি ও শাহী মসজিদ এখন প্রাচীন নিদর্শন

প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

নাটোরের গুরুদাসপুরে গায়েবি মসজিদ বা শাহী মসজিদ। নাটোর শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে গুরুদাসপুর উপজেলার ৬নং চাপিলা ইউনিয়নের বৃ-চাপিলা গ্রামে এ মসজিদ অবস্থিত। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা শাহী মসজিদ ‘গায়েবি মসজিদ’ নামেও পরিচিত। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদটি চারশত বছরের পুরোনো। মুঘল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মসজিদটি স্থাপন করেন মুনশি এনায়েতউল্লাহ। চাপিলা একসময় ছিল মুঘলদের প্রশাসনিক কেন্দ্র। মুঘল শাসনামলে বাদশাহ শাহজাহানের ছেলে সুজা বাংলার গভর্নর নিযুক্ত হন। সে সময় চাপিলা গ্রামে মুঘল সেনাদের ফাঁড়ি ছিল। মুঘল শাসন আমলে মানুষেরও বসবাস ছিল চাপিলায়। সে সময় নামাজের জন্য এখানে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়। এক সময় মুঘল সেনাসহ চাপিলা এলাকার বাসিন্দারা অন্যত্র চলে যায়। কালক্রমে ধ্বংস হয় চাপিলার বসবাস যোগ্য নগরী। তারপর বহুদিন লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল এ অঞ্চল। ১৯৪৭ সালের এর পর এ এলাকায় নতুন করে বসতি গড়তে থাকে বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত মানুষ এসে নতুর করে বসবাস শুরু করে। সে সময়ই জঙ্গল পরিষ্কারের সময় এলাকার মানুষ খুঁজে পায় মসজিদটি। অপরূপ সৌন্দর্যের এ মসজিদটির নাম ‘বৃ-চাপিলা শাহি জামে বড় মসজিদ’। তবে দীর্ঘ সময় মসজিদটি জঙ্গলে ঢেকে ছিল যার জন্য সে সময়ই লোক মানুষের মুখে রটে যায়, এক রাতের মধ্যে নির্মিত হয়েছে মসজিদটি; যা থেকে কালক্রমে গায়েবি মসজিদ নামটি ছড়িয়ে পড়ে নাম। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের মসজিদটির দেয়ালের প্রস্থ ৪ ফুটের মতো। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসে মসজিদটি দেখতে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করে। প্রায় চারশ বছরের পুরোনো মসজিদটি সংস্কার করে বর্ধিত অংশে আধুনিকতার ছাপ আনা হয়েছে। তবে কিছু অংশে রেখে দেওয়া হয়েছে পুরোনো নকশা ও কারুকাজ। এলাকাবাসী মনে করে, যথাযথ মসজিদটি ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটনকেন্দ্র। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মূল মসজিদের পেছনে সম্প্রসারণ করা হয়েছে, সেখানে এখন প্রতিদিন শতাধিক মুসল্লি নামাজ পড়তে আসেন, পাশাপাশি জুমার দিনে নারীসহ হাজার মুসল্লির সমাগম ঘটে, মূল মসজিদের পাশে পরবর্তীতে নারীদের নামাজের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে, এছাড়াও মসজিদটি পরিদর্শন করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়তই নারী-পুরুষের সমগম ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুস সামাদ বলেন, কোন রকমের টিকে থাকার নাটোরের গুরুদাসপুরের ঐতিহাসিক এই প্রাচীন প্রত্নতান্ত্রিক নিদর্শনটির অস্তিত্ব বজায় রাখার লক্ষ্যে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানান এলাকাবাসীসহ মুসল্লিরা।