খেলার মাঠে দোকানপাট দ্রুত অপসারণ দাবি

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এমকে রানা, পটুয়াখালী

পটুয়াখালী শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার মাঠ। কয়েক বছর ধরে এই মাঠই শহরের শিশু-কিশোর, তরুণদের খেলাধুলা ও বিনোদনের একমাত্র উন্মুক্ত জায়গা। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানও হয় এখানে। কিন্তু এখন সেই মাঠ ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে অস্থায়ী দোকানের চাপে।

গত কয়েক মাসে মাঠের ভেতরে বসেছে অন্তত শতাধিক দোকান। বিকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে এসব দোকান। এতে খেলাধুলা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মাঠের স্বাভাবিক পরিবেশও।

খেলোয়াড় তরুণ রিফাত হোসেন বলেন, আমরা প্রতিদিন বিকালে ফুটবল খেলতে আসি। আগে মাঠটা বড় ছিল, এখন দোকান বসার কারণে জায়গা কমে গেছে। অনেক সময় খেলতে গিয়ে দোকানের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে খেলার আনন্দ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে। বর্ষার মৌসুমে জেলার অন্য মাঠগুলো খেলায় অযোগ্য হয়ে পড়লে ছোট শিশুরা বাবা মায়ের সঙ্গে আসে এই মাঠে। কিন্তু এখন দোকানের ভিড়ে তাদের খেলার জায়গা নেই। ফলে তাদের বসে থাকতে হয় মা বাবার কোলেই।

অন্যদিকে, দোকানদারদের মতে মাঠে দোকান বসারও কিছু ইতিবাচক দিক আছে। ঝালমুড়ি বিক্রেতা সুমন বিশ্বাস বলেন, দুই মাস হলো আমি ব্যবসা শুরু করেছি। ভ্যানের ওপর দোকান, খেলা হলে সরিয়ে ফেলি। আগে সন্ধ্যার পর মাঠ ফাঁকা থাকত, এখন অনেক পরিবার আসে। এতে আমাদেরও আয় হচ্ছে। তবে উদ্যোক্তাদের অনেকের মধ্যেও উদ্বেগ আছে। দোকান বাড়তে থাকায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে স্বীকার করেন- স্থায়ী দোকানি মো. স্বপন। তার ভাষায়, এখন অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। কিন্তু দোকান যদি এভাবে বাড়তেই থাকে, তাহলে মাঠ সংকুচিত হবেই। এতে খেলা আর বিনোদনের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আহসান হাবীব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহিদ মিনার মাঠ শুধু খেলার মাঠ নয়, এটা শহরের ফুসফুস। যেখানে মানুষ মুক্তভাবে নিশ্বাস নেয়। এখানে দোকান বসানো বন্ধ করতে হবে। না হলে তরুণ প্রজন্মের সুস্থ বিকাশ বাধাগ্রস্ত হবে। পটুয়াখালী পৌর প্রশাসক জুয়েল রানা বলেন, শহিদ মিনার মাঠে অস্থায়ীভাবে কিছু দোকান বসানোর অনুমতি দিয়েছে পৌরসভা। তবে এতে যেন পরিবেশ ও খেলাধুলার জায়গা সংকুচিত না হয়, সেটি আমরা খতিয়ে দেখছি। খুব শিগগিরই মাঠ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অপরিকল্পিতভাবে দোকান বসানোয় সংকুচিত হচ্ছে পটুয়াখালীর একমাত্র উন্মুক্ত খেলার মাঠ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খেলাধুলা ও শিশুদের বিকাশের পরিবেশ। স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মাঠের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে।