হাজীগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষে আহত ৩৫

প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জামায়াত বিএনপি উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। উভয়পক্ষের আহতদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেককে গ্রামে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের পালিশারা গ্রামে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব কাজী জসিম জানান, গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে নিয়ে বিকৃতকর একটি ছবি শেয়ার করেন। গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে এ নিয়ে উত্তেজনা চলছে।

গতকাল শুক্রবার সকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা মাওলানা ইলিয়াসকে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এতে ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল মিজী, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নেছার আহম্মেদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল কুদ্দুস, ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি কামালসহ প্রায় ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এরমধ্যে ৫ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বাকি ৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। ইউনিয়ন জামায়াতের আমির ও পালিশারা শাহমিরান মিরা বাড়ী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমার ব্যক্তিগত ফেইসবুক থেকে একটি ছবি আমার অসাবধানবশত : শেয়ার হয়েছে। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন জানানোর পর আমি ডিলেট করে দিই।

তিনি বলেন- আমার মোবাইলটি ঘরে থাকে, অনেক সময় বাচ্চারা ব্যবহার করে, এতে বাচ্চারাও শেয়ার করতে পারে। ঘটনা যা হয়েছে, আমি ফেইসবুকে পোস্ট করে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তার পরেও গতকাল শুক্রবার সকালে বসার কথা ছিল। আমার উদ্দেশ ছিল আমি ক্ষমা চাইব। কিন্তু তারা বসার আগেই আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে এতে ১০-১৫ জন গুরুতর আহত হয়।

গন্ধর্ব্যপুর উত্তর ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব বলেন, আমাদের আহতেরা হলেন- ৪নং ওয়ার্ড পালিশারা গ্রামের জামায়াতের আমির হাফেজ আহমেদ, সেক্রেটারি ফয়সাল, মোহাম্মদুপর ১নং ওয়ার্ড জামায়াতের আমির আনোয়ার হোসেন, ইউনিয়ন জামায়াতের সাবেক আমির হাফেজ আবদুল মোতালেব, জামায়াতের কর্মী শরীফ, সাদ্দাম, মনু, রাশেদ, রাজু। তারা চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মাস্টার ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের হামলা ও মারধরের বিষয়টি উপজেলা বিএনপির নেতাকে অবহিত করা হয়েছে। এখন দলীয় যে নির্দেশনা আসবে, আমরা ওই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করব।

উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মোজাম্মেল হোসেন পরান বলেন, আমি বিষয়টি নিজে ডিল করেছি। যা হয়েছে, এ জন্য ক্ষমা চাওয়া হয়েছে। তার পরেও হামলা করাটা দুঃখজনক।

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমএ রহিম পাটওয়ারী বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানার ছবিকে নিয়ে মাওলানা ইলিয়াস ফেইসবুকে পোস্ট করে। বিষয়টি আমাদের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানালে জাময়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছে। হাজীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, দুইগ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।