চলনবিলে শুঁটকি পল্লীতে মাছ সংকট
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এসএম তফিজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ

ঐতিহ্যবাহী চলনবিলে এবার বিভিন্ন প্রজাতের মাছ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে শুঁটকি শিল্প পল্লীতে শুঁটকি মাছ উৎপাদনে হুমকির মুখে পড়েছে। শুঁটকি চাতাল শ্রমিকেরা বেকার হওয়ার উপক্রম হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের প্রায় ২৩টি জলাশয় ও ১৬টি নদীর সমন্বয়ে দেশের বৃহত্তম এ চলনবিলের অবস্থান। এ চলনবিল ঘিরে সিরাজগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা শুঁটকি শিল্প পল্লীতে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে।
এসব শুটকি চাতালগুলোতে ভোর থেকেই শত শত নারী-পুরুষ মাছে লবণ মাখানো, উল্টে-পাল্টে দেওয়া, শুকানো, বাছাইসহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। এসব চাতালে দেশি প্রজাতির রুই, কাতলা, পাবদা, পুঁটি, চিতল, মাগুর, শিং, কৈ, বাঘাইড়, বোয়াল, গজার ও টেংরা মাছ শুঁটকি করা হয়। এ বছর এসব মাছের সংকট দেখা দেওয়ায় নানা রকমের শুটকি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ চলনবিল অঞ্চলের উৎপাদিত শুঁটকি খেতে খুবই সুস্বাধু। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর শুঁটকি পল্লী থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুঁটকি সরবরাহ করে থকে ব্যবসায়ীরা। এ বছর সরবরাহ অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে এবং গত বছর চলনবিলে প্রায় ৮০০ টন শুঁটকি উৎপাদন করা হয়েছিল।
এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ হাজার টন। শুঁটকির ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিদিন একটি শুঁটকির চাতালে ৩০০ মণ মাছের চাহিদা রয়েছে। কিন্ত স্থানীয় বাজার ও মৎস্য আড়ত ঘুরে ৪০-৫০ মণের বেশি মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে শুঁটকি উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এরইমধ্যে অনেক চাতাল বন্ধ হয়ে গেছে এবং মাছের অভাবে ব্যবসা গুটিয়ে অনেকে চলে গেছেন। এতে শুঁটকি কাজে জড়িত অনেক শ্রমিকে বেকার হয়ে পড়েছেন। জেলা মৎস্য বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, চলনবিলে শুঁটকির কদর দেশ-বিদেশেও। তবে মা মাছ নিধন, কীটনাশক ব্যবহার ও প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস হওয়ায় এ বিলে মাছের উৎপাদন প্রতি বছর কমে যাচ্ছে।
এ বিলে এবার আরও সংকট বেড়েছে। মাছ সংকটের কারণে উৎপাদনও কম হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়ভাবে ব্যবস্থা না নিলে শুঁটকি পল্লী টিকে রাখা সম্ভব নয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
