বিলুপ্তির পথে দক্ষিণের তামা-কাঁসা-পিতল শিল্প
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

বরগুনার আমতলী উপজেলা জুড়ে হারিয়ে যাওয়ার পথে কাঁসা ও পিতলের তৈরি থালা-বাসন ও অন্যান্য তৈজসপত্র। হারিয়ে যাওয়া সিরামিক, মেলামাইন ও কাচের তৈরি নিত্যনতুন গৃহস্থালিসামগ্রী পিতল-কাঁসার ব্যবহার ছিল একসময় অপরিসীম। আমতলী উপজেলার সকল ইউনিয়নের তামা, পিতল-কাঁসার জিনিসপত্র ঘরে ঘরে নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী হিসেবে দেখা যেত। কিন্তু আধুনিকতার (প্লাস্টিক,এ্যালুমেনিয়াম ও স্টীল) ছোঁয়ায় ও দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে এসবের ব্যবহারে ভাটা পড়েছে। এগুলো ঐতিহাসিক আসবাব হিসেবে বাঙালির ঘরে ঘরে কাঁসা-পিতলের জিনিস ঐতিহ্য বহন করেছে যুগ যুগ ধরে। গৃহস্থালি জিনিসের একমাত্র ভরসা ছিল কাঁসা-পিতল। এখন তা বলতে গেলে উঠেই গেছে। তবে পল্লী অঞ্চলে কিছু সচ্ছল ও বনেদি পরিবারে কাঁসা-পিতলের জিনিস ব্যবহার করতে দেখা যায়। আমতলীতে কাঁসা-পিতলের জিনিসের ব্যবহার এখনও টিকে আগে হাতে গোনা কয়েকটি বাড়িতে।
কাঁসা বা পিতল দিয়ে বাসন কোসন প্রস্তুতকারক কারিগর বা কাঁসারি ঘর এখন আর আমতলীতে একটিও নেই। অথচ একটা সময় ছিল যখন বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এখানে এসে পিতল-কাঁসার নকশা খঁচিত থালা-বাসন কলস বদনা কিনে নিয়ে যেত। আজ তার কোনোটিই নেই। আমতলী উপজেলা জুড়ে অনেক কষ্টে তারা এই পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। এ রকমই একটি পরিবার পাওয়া যায় উপজেলার গাজীপুর বাজার এলাকায়।
বাবুল কর্মকার ও তার পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা কাঁসার জিনিসের ব্যবহার বাদ দেননি। কাঁসা ও পিতলে তৈরি জিনিসের অনেক দাম। এগুলো এখন ঢাকা ও বরিশাল সদর ছাড়া পাওয়া যায় না। সেখান থেকে কিনে আনতে হয়। আমতলী বাজারের ব্যবসায়ী ও হাঁড়ি পাতিল বিক্রেতা কমল চন্দ্র বলেন, আমার ব্যবসার বয়স ৪০ বছর। এ অঞ্চলের পরিবারগুলো অনেক আগে কাঁসা-পিতলের জিনিস ব্যবহার করত। কাঁচ, মেলামাইন, সিরামিক ও প্লাস্টিক পণ্যের দাপটে কাঁসা-পিতল হারিয়ে গেছে।
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে এ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আর দেখা যায় না। এখন কিছু কিছু জায়গায় দোকানীদের কাছে পাওয়া যায়। তবে তামা, পিতল ও কাঁসা একেবারেই হারানোর পথে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব, আমতলী শাখার সভাপতি এসএম সুমন রশিদ বলেন, আমতলী এবং উপকূলীয় এলাকায় কাঁসার তৈরি বিভিন্ন ধরনের জিনিসের ব্যবহার দেখা যেত। কালের বিবর্তনে এখন তা হারিয়ে গেছে।
