মেঘনায় মাছ শিকারে প্রস্তুত কমলনগরের ১৫ হাজার জেলে

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

ডিমওয়ালা মা ইলিশ রক্ষায় মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছধরার ওপর সরকারের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ শনিবার মধ্যরাতে (রাত ১২টায়)। দীর্ঘদিন পর মাছ শিকারের এ বাধা কেটে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার জেলে পরিবারগুলোতে। এজন্য মাছ শিকারের জন্য প্রস্তুত রয়েছেন উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার জেলে। এরইমধ্যে ওই জেলেরা নৌকা মেরামত ও জাল বোনাসহ মাছধরার প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সেড়ে ফেলেছেন। ফের কেনা-বেচার প্রস্তুতি নিচ্ছেন আড়াতদারসহ মাছ বেপারীরা।

উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইলিশ মাছের প্রজনন অবাধ করার লক্ষে মৎস্য সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ অনুযায়ী মৎস্য অধিদপ্তর মেঘনা নদীর চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এলাকায় ৪ অক্টোবর ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত সব ধরনের মাছধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

এ সময় ইলিশ পরিবহন, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ ছিল। মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ বিষয়ক জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন টাস্কফোর্স কমিটি সরকারি এ নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর করেন। এ সময় নদীতে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালা করা হয়। একই সময়ে মা ইলিশ শিকারে বিরত রাখার জন্য নিবন্ধিত জেলেদেরকে সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা (ভিজিএফ) দেওয়া হয়েছে।

জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ নিষিদ্ধ সময়ে নৌকা মেরামত ও জাল বুনে বেকার সময় কাটিয়েছেন তারা। মধ্যরাতে এ নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারে নামতে তারা জাল আর নৌকা নিয়ে নদীতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন ও সংরক্ষণ বিষয়ক উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা জানান, ইলিশের প্রজনন অবাধ করার লক্ষে ঘোষণা করা নিষেধাজ্ঞা মধ্যরাতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এরপর থেকে মাছ শিকারে নদীতে যেতে আর কোনো বাধা নেই। তবে, জাটকা শিকার বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, উপজেলায় নয়টি ইউনিয়নে প্রায় ১৫ হাজার জেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১৩ হাজার জেলে নিবন্ধিত। নিষিদ্ধ সময়ে তাদের মধ্যে থেকে প্রায় ১১ হাজার জেলের মাঝে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে অভিযান সফল দাবি করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, নিষেধাজ্ঞার এ সময়ে জেলেরা অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মেঘনা নদীতে মাছধরা থেকে বিরত থাকায় ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এ বছর লক্ষ্মীপুরে ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার টন। যা গত বছরের চেয়ে ৫০০ টন বেশি।