শীতকালীন আগাম সবজির ফলন ও দামে খুশি কৃষক
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভাণ্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহ। মোরেলগঞ্জ উপজেলা ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রান্তিক চাষিরা শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। টানা বৃষ্টির পর জমির মাটি উর্বর থাকায় আগাম সবজি চাষ শুরু করেছেন অনেকে। এরইমধ্যে এসব সবজি বাজারের অনেকটা চাহিদা পূরণ করতে শুরু করেছে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা। ইউনিয়নের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, করলা, বেগুন, লাউ, পটল, বরবটি, পালন শাক, লাল শাকসহ বিভিন্ন আগাম শীতকালীন সবজি মাঠে চাষ হচ্ছে। কৃষকরা রোদে পুড়ে সবজির খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ অঞ্চলের মাঠে সারা বছরই সবজি চাষ হয়ে থাকে। এ কারণে এই মোরেলগঞ্জ এলাকাকে সবজি নগরী বলা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে মোরেলগঞ্জে আগাম শীতকালীন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় মোট ১৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে মূলা ১১০ হেক্টর, ফুলকপি ২১৫ হেক্টর, বাঁধাকপি ২১৫ হেক্টর, করলা ২৪০ হেক্টর, লালশাক ১৫ হেক্টর, পালংশাক ৫ হেক্টর, টমেটো ৩ হেক্টর, লাউ ৪০ হেক্টর, বরবটি ৫ হেক্টর, শিম ৩৫ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১৩০ হেক্টর, বেগুন ১০৮ হেক্টর, ধনিয়াপাতা ২৯৩ হেক্টর এবং ৬৭ হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ফলন ধরা হয়েছে সাড়ে ২৭ টন। প্রতি কেজির গড় মূল্য ৫০-৫৫ টাকা ধরলে এবার মোরেলগঞ্জে ৩০০ কোটি টাকার বেশি শীতকালীন সবজি উৎপাদন হবে।
মোরেলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটি সভাপতি এসএম সাইফুল ইসলাম কবির বলেন, কৃষককে সার, বীজ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সময় সহযোগিতা করে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন সিড কোম্পানি পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যে সার ও বীজ দিয়ে গরীব কৃষকদের সহযোগিতা করতে হবে। এক সময়ে লবণাক্ততার কারণে তার ইউনিয়নের ধান চাষাবাদ ছাড়া অন্য কোনো ফসল হতো না। এখন বেড়িবাঁধের কারণে মিষ্টি পানিতে কৃষক নতুন নতুন ফসল ফলিয়ে কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছে।
সরকারিভাবে অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণ, বিনা সুদে লোন, এ ক্ষেত্রে চাষাবাদে কৃষকের আরও আগ্রহ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন। এতে কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও আগাম সবজি চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। আগামী দিনে কৃষকরা যেন আগাম সবজি চাষে আরও আগ্রহী হয় সে ব্যাপারে আমাদের মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আশা করছি আগামীতে এই সবজি চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে। মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার এ বছর ১৫০০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন সবজি চাষ হচ্ছে।
এসব সবজির মধ্যে আছে শিম, লাউ, মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। বাজারে আগাম শীতকালীন সবজির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে আবার সেগুলো বেশি দামে বিক্রিও করতে পারছে কৃষকরা। এতে কিছুটা ঝুঁকি থাকলেও আগাম সবজি চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। আগামী দিনে কৃষকরা যেন আগাম সবজি চাষে আরও আগ্রহী হয় সে ব্যাপারে আমাদের মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আশা করছি আগামীতে এই সবজি চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।
