মেঘনায় মিলছে না বড় ইলিশ

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর

মা ইলিশের প্রজনন নিশ্চিত করতে নদীতে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত শনিবার মধ্যরাতে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইলিশ শিকারে নদীতে নেমে পড়েছেন জেলেরা। এর ফলে দেশের অন্যতম প্রধান ইলিশের মোকাম চাঁদপুরের মাছ ঘাটগুলো আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে। মাছের আড়ত ও বাজারগুলোতে ফিরে এসেছে আগের কর্মচাঞ্চল্য। শহরের পাল বাজার, বিপনিবাগ ওয়ারলেস, বাবুরহাট, নতুন বাজার ও পুরান বাজারের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, ২০০-৬০০ গ্রাম ইলিশ বেশি উঠেছে।

গতকাল রোববার চাঁদপুরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই ইলিশ বেচা-কেনাকে ঘিরে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে। তবে ঘাটে আশানুরূপ ইলিশ আসছে না। ৬-৭টি টলার এসেছে। তাতে ইলিশ কম আসে। ইলিশের তুলনায় পাঙ্গাস, বোয়াল, আইড়সহ অন্যান্য মাছ বেশি পাওয়া যায় বলে জেলেরা জানান।

যদিও নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামা জেলেরা এখনও খুব বেশি বড় আকারের ইলিশ পাচ্ছেন না, তবে ছোট ও মাঝারি সাইজের অনেক ইলিশ উঠেছে।

গতকাল রোববার বড় স্টেশন মাছ ঘাটে ২৫০ মণ ইলিশ উঠছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এক কেজি সাইজের ইলিশের দাম ২৫০০-২৬০০ টাকা। ৫০০-৬০০ গ্রাম ইলিশের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছ কম পাওয়ায় ২০০ গ্রাম ওজনের ছোট ইলিশের হালি (৪টি) সাড়ে ৪০০-৭০০ টাকায় বক্রি হয়েছে। বড় স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, মৎস্য কেন্দ্রের মাছের আড়তে কর্মচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। মাছ কেনা-বেচার হাকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে মাছের আড়ত।

মেঘনা নদীর ইলিশের চেয়ে চাঁদপুরের পদ্মা নদীর ইলিশের স্বাদ বেশি বলে খ্যাতি থাকায় জেলেরা পদ্মায় বেশি সময় দিয়েছে। বাজারে আসা মাছের মধ্যে এক কেজির নিচের কম ওজনের ইলিশই বেশি।

জেলে মুকবুল জানান, মেঘনায় ছোট ইলিশ পাওয়ায় তিনি পদ্মার গভীরে গিয়ে ছিলেন, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত বড় মাছ পাননি। মাঝারি আকারের ১০টি ইলিশ পেয়েছেন, যা দিয়ে নৌকার তেল খরচ ওঠানোই কষ্টকর হবে।

আড়তদার ঈসমাইল হোসেনের বড় স্টেশন আড়তে গতকাল রোববার আড়াইশো মণ ইলিশ উঠেছে বলে জানান। নদীতে ইলিশের বিচরণ বাড়াতে খনন এবং দূষণ বন্ধের ওপর জোর দেন।

চাঁদপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবেবরাত সরকার আশা প্রকাশ করেন, সামনে ইলিশের ভালো মৌসুম আসছে, তখন দাম কমবে। প্রথম দিন হিসেবে আশানুরূপ ইলিশ উঠেনি ঘাটে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র দাস জানান, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফল হয়েছে। অভিযানে অবৈধ জাল জব্দ ও জেলেদের আটক করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলেদের সচেতন করা হয়েছে এবং ভিজিএফ সহায়তাও দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করেন, সফল অভিযানের ফলে জেলেরা এবার ভালো মাছ পাবেন।