চুয়াডাঙ্গায় চর্মরোগের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শরীফ উদ্দীন, চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় ছোঁয়াচে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন সদর হাসপাতাল ও উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভিড় বাড়ছে আক্রান্ত রোগীদের। চিকিৎসকরা বলছেন, স্ক্যাবিস ভয়াবহ নয়, তবে পরিবারে একজনের শরীরে এটি হলে বাকি সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
চুয়াডাঙ্গার গ্রাম থেকে শহরে এখন আতঙ্কের নাম চর্মরোগ স্ক্যাবিস। গত কয়েক সপ্তাহে শহর থেকে গ্রামগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়ছে ছোঁয়াচে চর্মরোগ খোস-পাঁচড়া।
এক পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে দ্রুতই গোটা পরিবারে ছড়িয়ে পড়ছে। এ আক্রান্ত রোগীদের অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন, আবার অনেকেই জানেনই না এ রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে। সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ হাতের আঙুলের ফাঁকে, পায়ের চামড়ায় তীব্র চুলকানি। পরে তা সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
আক্রান্ত পরিবারের দর্শনা শ্যামপুর গ্রামের লোনা খাতুন বলেন, আমার আগে এ রোগ হয়েছে। তারপর আমার দুই বছরের শিশু কন্যার হয়েছে। চুলকানি আর ঘা হয়েছে সারা শরীরে। হাসপাতালে বেড়েছে ভিড়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসা নিচ্ছেন নানা বয়সী রোগী। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। দৈনিক গড়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন অন্তত ২০০ জন।
আক্রান্তরা জানান, তাদের অ্যালার্জির জন্য হাসপাতালে এসেছেন। অনেকেই দুই থেকে তিন বছর এ ধরনের অ্যালার্জিতে ভুগছেন। ডাক্তারের কাছে গিয়েও সমাধান মিলছে না তাদের। হাসপাতালে আসা রোগীদের ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বর্তমানে এ রোগে আক্রান্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুত নেই। পাশাপাশি নানা পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. লাইলা শামীমা শারমিন বলেন, ‘আমি প্রতিদিন প্রায় ১০০ রোগী দেখি। তার মধ্যে মোটামুটি ৩৫ শতাংশ রোগী স্ক্যাবিসে আক্রান্ত। স্ক্যাবিসের জন্য নির্দিষ্ট ট্রিটমেন্ট আছে। যখন এর ওষুধ না দিয়ে অন্যভাবে ট্রিটমেন্ট করা হচ্ছে, তখন এটি আরও বেড়ে যাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস বলেন, সরকারিভাবে চুলকানির জন্য লোশন জাতীয় যে ওষুধ সেটি আমরা সরকারিভাবে পাই। এটি আমরা জনগণকে দিচ্ছি। এরজন্য হাইজিন মেইনটেইন করতে হবে, সচেতন হতে হবে। সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে আমার মনে হয় রোগের প্রাদুর্ভাব কমবে। গত এক মাসে জেলার ৪ উপজেলায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
