চোর আখ্যা দিয়ে দুই কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দোকানে চুরিতে জড়িত সন্দেহে দুই কিশোরকে রাতভর নির্যাতন চালানোর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গত সোমবার রাত ১২টার পরে নির্যাতনের শিকার এক কিশোরের মা বাদী হয়ে দোকান মালিক আজাদসহ তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৪-৫ জনকে। মামলায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে দোকান মালিকের ভাই হাসানকে গ্রেপ্তার করে দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি খন্দকার জিয়াউর রহমান। গ্রেপ্তার হাসান আলী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের তারাপুর বাজার এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে।
সূত্র জানায়, তারাপুর বাজারে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা রয়েছে একই এলাকার আবুল কালাম আজাদের। সেখানে স্থানীয় কিশোর-তরুণরা অবসর সময়ে ক্যারাম খেলে। গত রোববার সন্ধ্যায় আজাদের দাদি মারা যান। সংবাদ পেয়ে তিনি দোকান বন্ধ করে দাদির বাড়িতে যান। রাত ১১টার দিকে দোকানে ফিরে দেখেন, পেছনের দরজা খোলা। ড্রয়ার থেকে টাকা-সিগারেটসহ কিছু পণ্য খোয়া গেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজখবর নেওয়ার পর তিনি একই এলাকার দুই কিশোরকে সন্দেহ করেন। পরবর্তীকালে রাত ২টার দিকে ফোন করে তাদের ডেকে আনেন আজাদ। দোকানে আটকে রেখে ওই দুজনের ওপর কাঠ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়।
এক পর্যায়ে দুই কিশোরের কাছ থেকে চুরির স্বীকারোক্তি আদায় করে তারা। মারধরের ৪৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গত সোমবার দুপুরে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, কয়েকজন মিলে এক কিশোরের হাত-মুখ ও গলা চেপে ধরে রেখেছেন। আরেকজন বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করছে। এ ঘটনায় সকালে বাজারের পাশের একটি করাতকলে এ নিয়ে সালিশ বসান জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল করিম বিশ্বাস। সেখানে ব্যবসায়ী আজাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই কিশোরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করার পর এক কিশোরের মা ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দুজনকে বাড়ি নিয়ে আসেন। মামলার বাদী এক ভুক্তভোগীর মা বলেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমার ছেলে ও তার বন্ধুকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে আজাদ, হাসান, মিজানসহ আরও অনেকেই। আমি সঠিক বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছি। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।'
