নওগাঁ শহরে মশার উপদ্রব
* উপদ্রব এমন ভাবে বেড়েছে যে ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমতো পড়াশুনা করতে পারছে না। সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। মশা কামড়ানোর পর সেই স্থানে ফুলে যন্ত্রণা করে। বাসা-বাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না কেউই
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আব্বাস আলী, নওগাঁ

নওগাঁ পৌরসভায় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পৌরবাসী। বাসা-বাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না কেউই। মশার কয়েল, ধোয়া ও স্প্রে সব কিছুই যেন মশার কাছে হার মানছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও যেন রেহাই নেই। এতে বাড়ছে ডেঙ্গু। সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে- ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৫৬ জন আক্রান্ত। অক্টোবরে ১২০ জন এবং সেপ্টেম্বর ১১৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত ৩২১ জন। নওগাঁ পৌরসভা প্রথম শ্রেণির ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজারের ওপর।
পৌরসভায় যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। অধিকাংশ ড্রেনে নেই ঢাকনা। এতে ময়লা আর্বজনায় চাপে ড্রেনের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। আর্বজনায় মশা ও মাছি জন্ম নেয়। নিয়মতি ড্রেন পরিস্কার না করা এবং যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার কারণে মশার উৎপাত বেড়েছে। পৌরসভার মশক নিধন কার্যক্রমের অভাবে মশার বিস্তার চরম আকার ধারণ করেছে। এতে পৌরবাসী মশার উপদ্রবে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। উপদ্রব এমন ভাবে বেড়েছে যে ছাত্র-ছাত্রীরা ঠিকমতো পড়াশুনা করতে পারছে না। সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে না। মশা কামড়ানোর পর সেই স্থানে ফুলে যন্ত্রণা করে। বাসা-বাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না কেউই। মশার কয়েল, ধোয়া ও স্প্রে সব কিছুই যেন মশার কাছে হার মানছে। দিনের আলোতেও মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে কয়েল ব্যবহার করতে হচ্ছে। মশার কয়েল কিনতে বাড়তি টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে।
শহরের মাষ্টারপাড়ার বাসীন্দা শামিম বলেন- সন্ধ্যার আগেই ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করতে হয়। তারপর যেন রেহাই নেই। কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। এমন অবস্থা যে কয়েলের ওপরও মশা ঘুরাঘুরি করে। দিনেও কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। আর মশা যেখানে কামড়ায় সেখানে জ্বালা যন্ত্রনা করে ও ফুলে উঠে। কয়েল কিনতে প্রতিদিন ১০ টাকা খরচ হয়। যদি এমন অবস্থা চলতে থাকে তাহলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা আছে। শহরের ডিগ্রী মোড় এলাকার শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন বলেন- এতো বেশি মশার উপদ্রব বেড়েছে যে ঠিকমতো পড়াশুনা করা যায়।
কয়েল জ্বালিয়ে মশারির ভেতরে পড়তে হচ্ছে। শহরের কোমাইগাড়ী মহল্লার আসফাক উদ্দিন বলেন- বাসা থেকে কিছুদূরে পৌর ময়লার ভাগাড়। এ এলাকায় মশা নিধনের তেমন একটা কার্যক্রম চোখে পড়ে না। পৌরসভার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় মশক নিধনের কার্যক্রম করা হলেও বাকিগুলোতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না। বছর বছর বাড়ানো হয় পৌরকর।
অথচ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত পৌরবাসী। নওগাঁ পৌরসভা প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন- মশক নিধনের জন্য তিনটি ফগার মেশিন ও তিনটি হ্যান্ড স্প্রে মেশিন আছে। গত দুই বছর থেকে পৌরসভায় মশক নিধনের বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে পৌর রাজস্ব আয় থেকে মশক নিধনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পৌরসভার প্রতিটি মহল্লায় পর্যায়ক্রমে মশক নিধনের কাজ করা হয়। তবে ফগার মেশিনের চেয়ে হ্যান্ড স্প্রে মেশিনে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। হ্যান্ড স্প্রে দিয়ে মশার লাভা ধ্বংস করা হচ্ছে।
