শিশু হত্যার অভিযোগে সৎ মা আটক, বাবা পলাতক
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সাড়ে চার বছর বয়সী নাঈম হোসেন নামের এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে সৎ মা জাহানারা বেগমের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি গতকাল রোববার বেলা ১১টায় উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের গিলাকুড়ি গ্রামে ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ওই সৎ মাকে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে সৎ মাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত নাঈমের মাতৃকূলীয় আত্মীয়স্বজন ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছেন।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে নাঈমের বাবা জলিল শেখের ১ম স্ত্রী তিন সন্তান রেখে মারা যায়। পরে বিয়ে করেন নিহত নাঈমের মা লিপি বেগমকে। প্রায় ৪ বছর আগে নিহত নাঈমের মা নিহত নাঈম ও তার ৬ বছর বয়সী বোনকে রেখে মারা যায়। পরে বাবা জলিল শেখ ৩ বছর আগে অভিযুক্ত জাহানারা বেগমকে বিয়ে করেন। জাহানারা বেগমের ৮ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান হয়েছে। নাঈমের মাতৃকূলীয় আত্মীয়স্বজন, স্থানীয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত জাহানারা বেগমের বিয়ে হওয়ার পরে একটি সন্তান হয়। এরপর থেকেই অভিযুক্ত সৎ মা জাহানারা বেগম সৎ সন্তান নাঈম ও জান্নাতিকে নানাভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। এর জের ধরে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে তার বাবার অনুপস্থিতিতে নাঈমকে বাসার ভেতরে বেধরক মারপিট করে। পরে নাঈম নিস্তেজ হয়ে পড়লে প্রতিবেশীদের ডাক দেন। প্রতিবেশীরা এসে ঘরের মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারপিটের কালচে দাগ ও মাথায় রক্তাক্ত অবস্থায় ক্ষত দেখতে পান তারা। এ ঘটনার পরে স্থানীয় লোকজন সৎ মা জাহানারা বেগমকে আটক করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে গতকাল বিকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত জাহানারা বেগমকে আটক করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই বাবা জলিল শেখ গা ঢাকা দিয়েছেন।
প্রতিবেশী নাজমিন আক্তার নাজু বলেন, সৎ মা জাহানারা বেগম আমাদের এসে ডাকা ডাকি করলে তাদের বাসায় গিয়ে নাঈমকে মেঝেতে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারপিটের কালচে দাগ ও মাথায় রক্তাক্ত গভীর ক্ষত দেখতে পাই। নিহত নাঈমের মামা ফিরোজ হোসেন বলেন, আমার ভাগিনা নাঈমকে তার বাবাসহ সৎ মা প্রায় প্রায় কারণে অকারণে মারধর করত। আজকেও তাকে চরমভাবে ইট ও পাথর দিয়ে মারধর করে মেরে ফেলে বাথরুমের মধ্যে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা বাড়ি থেকে মৃত অবস্থায় বেড় করে আনে। তাকে সৎ মা জাহানারা বেগম তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে ফেলেছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আরিফ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে শিশু নাঈমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের শরীরের কালচে মারপিটের দাগ ও মাথায় গভীর ক্ষত দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নাঈম এই পরিবারের ছেলে সন্তান হওয়ায় সম্পত্তি ভাগাভাগির কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। আমরা তদন্ত করছি। এরইমধ্যে তার সৎ মা জাহানারাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তার বাবা জলিল শেখ পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
