রপ্তানি বিপর্যয়ে কমেছে বিষমুক্ত শুঁটকির দাম
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নাটোর প্রতিনিধি

ভারতে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নাটোরে কমেছে বিষমমুক্ত শুঁটকির উৎপাদন; সেইসঙ্গে দামও কমেছে স্থানীয় বাজারে। শুধুমাত্র স্থানীয় বাজারের শুঁটকি মাছ বিক্রি করে টিকে আছেন উৎপাদনকারীরা। তবে রফতানি শুরু না হলে শুঁটকির ভালো দাম পাওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন মৎস্য কর্মকর্তারা।
সরেজমিনে চলনবিলের সিংড়ার নেঙ্গুনের শুঁটকি পল্লিতে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে নারী শ্রমিকরা মাছ কুটা, ধোঁয়া ও শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাজার থেকে আসা কাঁচা মাছগুলো কেটে পরিষ্কার করে কোনো ধরনের বিষ না দিয়েই শুঁকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে সেখানে। নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাশে শুঁটকি পল্লী হওয়ায় মোটরসাইকেল ও ছোট যানবহনে গিয়ে যাত্রীরা তাদের পছন্দের শুঁটকি কিনছেন। চলনবিলের নানা প্রজাতির মাছের শুঁটকি ১৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে এখানে। নিরাপদ শুঁটকি সাশ্রয়ী দামে পেয়ে খুশি ক্রেতারা।
বগুড়া শহরের শাহজাহান আলী জানান, তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে প্রতি সপ্তাহে নাটোরে যান। ফেরার পথে শুঁটকি পল্লির সামনে থেকে শুঁটকি কেনেন। এখনকার উৎপাদিত শুঁটকিতে বিষ প্রয়োগ করা হয় না। এ ছাড়া দামও সহনীয় পর্যায়ে। তিনি আরও জানান, নাটোরের উৎপাদিত নিরাপদ ছোট ও মাঝারি মাছের শুঁটকি নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের ব্যবসায়ীরা ভারতে রফতানি করতেন। চলতি বছরে এখনও কোনো প্রকার শুঁটকি রফতানি না হওয়ায় ছোট ও মাঝারি মাছের শুঁটকির দাম কমে এসেছে। এতে করে এসব মাছের শুঁটকির উৎপাদন কমেছে এই পল্লিতে। রফতানি না থাকায় স্থানীয়দের চাহিদা অনুযায়ী শুঁটকি উৎপাদন করে টিকে আছেন ব্যবসায়ীরা। শুঁটকি উৎপাদনকারী বাবু বলেন, ‘প্রতি বছর এইখানকার শুঁটকি ভারতে রফতানি হতো। চলতি বছর এক কেজি শুঁটকিও রপ্তানি হয়নি। ফলে উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন তারা। তিনি আরও বলেন, ‘রফতানিকারকরা ছোট মাছের শুঁটকি কেজিতে ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় কিনতেন। এখন সেগুলো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নাটোর জেলা মৎস্য অফিসার মো. ওমর আলী জানান, চলতি বছর চলনবিলের মাছের উৎপাদন কম হওয়ায় শুঁটকি উৎপাদন কমার আশঙ্কা রয়েছে। আর সরকার উদ্যোগ নিয়ে পুনরায় রফতানির ব্যবস্থা করলে শুঁটকি উৎপাদনকারীরা ভালো দাম পাবেন বলে জানান তিনি। গত বছর চলনবিলের সিংড়া উপজেলার অংশ থেকে ৩২০ মেট্রিক টন শুঁটকি মাছ উৎপাদন হয়।
