কমলগঞ্জে ধলাই নদীর বাঁধ ভাঙনের মুখে
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
স্বপন দেব, মৌলভীবাজার

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ধলাই নদীর ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিরক্ষা বাঁধে জিও ব্যাগ স্থাপনের কাজ চলছে। এর অন্যপাশে রহিমপুর ইউনিয়নের মৃর্ত্তিঙ্গা চা বাগানের স্টিল ব্রিজের সন্নিকটে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। বালু উত্তোলনে নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ও ব্রিজের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় স্থানীয়রা মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপরও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ধর্মপুর ও রামচন্দ্রপুর এলাকার ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ, দুটি ব্রিজ ও পরিবেশ-প্রতিবেশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, রহিমপুর ইউনিয়নের মৃর্ত্তিঙ্গা স্টিল ব্রিজের সন্নিকটে ধলাই নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে জিও ব্যাগ স্থাপন কার্যক্রম চলছে। এর একই স্থানে নদীর মাঝখান থেকে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে অন্যপাশে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিগত প্রায় দুই মাস ধরে ব্রিজের সন্নিকট থেকে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় এক ইজারা গ্রহীতা। এতে স্টিল ব্রিজ এবং নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে জিও ব্যাগ স্থাপন কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে। নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ও দুটি ব্রিজের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় স্থানীয়রা গত নভেম্বর মাসে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক বরাবরে গণদরখাস্থ দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ধর্মপুর ও রামচন্দ্রপুরে মাত্র দেড় কিলোমিটারের মধ্যে ধলাই নদীর উপর দুটি স্টিলের ব্রিজ রয়েছে। কয়েক বছর আগে মৃর্ত্তিঙ্গা ব্রিজের উত্তর পার্শ্বে প্রায় ২০০ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে বন্যার সৃষ্টি হয়।
এতে আশপাশ এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করে। একই সময়ে পাশাপাশি স্থান এবং ব্রিজের সন্নিকট থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করায় নদীর বাঁধ ও দুটি ব্রিজ হুমকির মুখে পড়েছে।
মাটি ও বালি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অমান্য করে বালু উত্তোলনের ফলে ধ্বংস করা হচ্ছে দেশের সম্ভাবনাময়ী সম্পদ। বালু মহাল নয় এমন কিছু জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জনজীবনে দেখা দিচ্ছে মারাত্মক হুমকি। তবে বালু উত্তোলনকারী ইজারাদার দাবি করছেন ইজারা নিয়ে বৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। অভিযুক্ত বালু মহাল ইজারাদার খোরশেদ আলম বলেন, আমার ইজারার স্থান হচ্ছে ব্রিজের কাছাকাছি ও ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায়। তাই ব্রিজ রক্ষা করেই বাধ্য হয়ে এখান থেকে বালু উত্তোলন করছি। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. খালেদ বিন অলীদ জানান, ব্লকের পাশ থেকে কোনোভাবেই বালু উত্তোলন করা যাবে না।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ব্রিজের নিকট থেকে কোনো অবস্থাতেই বালু উত্তোলন করা যাবে না। এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে মৌলভীবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোসা. শাহীনা আক্তার বলেন, ইউএনওকে বলে দিচ্ছি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
