সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারার দ্বন্দ্বে বাবার লাশ দাফনে সন্তানদের বাধা

প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

হাটহাজারীতে সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারার দ্বন্দে চারবার জানাযার নামাজ পেছাল এক হতভাগা বাবার। দুইদিন ধরে লাশবাহী গাড়িতে বাবার লাশ পড়ে থাকলেও মন গলেনি কারও। এলাকাবাসী স্বজনরা মৃতের খবর পেয়ে শোক জানাতে এবং চার চারবার জানাযা পড়তে আসলেও বিরক্ত হয়ে ও আফসোস নিয়ে একে একে চলে যান। হাটহাজারী পৌরসভার সেকান্দর মঞ্জিলে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহতের প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর পুত্র ও এক মেয়ে। বত্রিশ বছর আগে প্রথম স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেন নিহত সেকান্দর। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপে মাগরিবের নামাজের পর নামাজে জানাযার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সরেজমিনে এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সেকান্দর মিয়া (৭২) মারা যান। নিহতের দুই সংসারের মধ্যে দ্বিতীয় সংসারের সন্তানরা দাফন কাফনের প্রস্তুতি নিয়ে গত শনিবার সকাল ১১টায় বাড়ির ঈদগাহ ও দুপুর ২টায় নিজ বাড়ি মেখল বাদামতল এলাকা এবং গতকাল রোববার একই সময়ে নামাজে জানাজার সময় নির্ধারণ করলে বাধা প্রদান করেন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত দ্বিতীয় ঘরের ডিভোর্সি স্ত্রী ও তার সন্তানরা। তাদের দাবি শরিয়ত ও আইন অনুযায়ী ডিভোর্স হলেও সন্তানরা বাবার সম্পত্তি প্রাপ্ত। কিন্তু বাবা তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের প্ররোচনায় তাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন। তবে ঘটনাস্থলের ক্রয়কৃত সম্পত্তির কিয়দাংশ বিগত তিন বছর আগে দখল করে সেমিপাকা ঘর করে বসবাস করে আসছে বঞ্চিতরা। এর পর থেকেই পাল্টাপাল্টি মামলা চলছে আদালতে। জানতে চাইলে সম্পত্তি বঞ্চিত পরিবার জানান, স্ত্রী সন্তানদের প্ররোচণায় তাদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেন যা সম্পূর্ণ আইন পরিপন্থি। দ্বিতীয় ঘরের এরশাদ নামে এক পুত্রকে চার শতক জায়গা দিলেও দ্বিতীয় সংসারের ইমতিয়াজ সে জায়গা দেখিয়ে ব্যাংক থেকে মোটা অঙ্কের লোন নিয়েছেন কয়েকবছর আগে। এদিকে এলাকাবাসী ঘটনাটি জানতে পেরে আইন অনুযায়ী সম্পত্তি বণ্টনে উভয় পক্ষের মধ্যে স্ট্যাম্প করে লাশ দাফনে অনুরোধ করলেও তারা রাজি হননি। এক পক্ষের দাবি প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে আগে স্ট্যাম্প অন্য পক্ষের দাবি ছিল আগে লাশ দাফন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, স্থানীয় ও পুলিশের সমন্বয়ে উভয় পক্ষে আলোচনা সাপেক্ষে মাগরিবের পর লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত হয়।