করাত কল গিলে খাচ্ছে বনের গাছ

প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রাঙামাটি প্রতিনিধি

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় পরিচালিত কোনো করাত কলেরই বৈধ লাইন্সেস নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। অবৈধভাবে নির্বিচারে পাহাড় ও বনাঞ্চল হতে গাছ কেটে কাঠ সরবরাহ করা হচ্ছে, যা বনের কাঠ উজার হচ্ছে ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ বিষয়ে উল্টাছড়ি রেঞ্জ এক কর্মকর্তা মুঠোফোনে জানান, লংগুদুতে আমার জানামতে করাত কলের কোনো বৈধ লাইন্সেস নেই। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে লংগদুতে রিজার্ভ ফরেস্ট কাঠশূন্য হয়ে পরিবেশ বিপর্যয়ে আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় নুরুননবীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অবৈধ করাত কল মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কয়েকটি অবৈধ করাত কল মালিককে জরিমানা ও কিছু করাত কল সিলগালা করা হয়, অল্প সময়ের মধ্যেই সেগুলো পুনরায় চালু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে আবারও চালু হচ্ছে অবৈধ করাত কলগুলো। এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক মোমিনুল ইসলাম বলেন, আমরাও অভিযোগ পেয়েছি, স্থানীয় প্রশাসন ও বনবিভাগ অবৈধ করাত কলের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে। পরবর্তী পরিবেশ অধিদপ্তর রাঙামাটি সতর্কীকরণ নোটিশ প্রেরণ করবে। লংগদু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, আমার জানা মতে করাত কলের বৈধ লাইন্সেস নেই। প্রয়োজনে বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে এবং অবৈধ করাত কলের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করেছি। তিনি আরও জানান, পরিবেশ ও বন রক্ষায় প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। ঝুম নিয়ন্ত্রণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম কুদ্দুস ভুঁইয়া বলেন, এটা আমাদের ঝুম নিয়ন্ত্রণ বনবিভাগের অধীনে উল্টাছড়ি রেঞ্জ থেকে কার্যক্রম দেখা হয়। সেখানে অবৈধ লাইন্সেসবিহীন করাত কল রয়েছে, সেগুলো স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান বা মোবাইল কোর্ট চলছে। এমনি প্রত্যেকটা করাত কলের বিরুদ্ধে আমার অধীনে যেই সমস্ত উপজেলায় করাত কল রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন নিয়মিত কার্যক্রম চলছে। সেখানে উপজেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্টে জরিমানা সিস্টেম আছে। কিন্তু আমরা যেইটা চাইবো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে উচ্ছেদ করা হবে। লাইন্সেস ব্যতীত করাত কল চালাইতে যেন না পারে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা ও মামলা করব। তিনি আরও বলেন, করাত কল বিধিমালা-২০১২/৭ (১) ধারায় ১০ কিলোমিটার সীমানায় করাত কল থাকতে পারে না। আগামী ২০-২৫ বছর পাহাড়ে রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় পানীয় জলের সংকটে পড়বে। গাছ না থাকলে পানি থাকবে না।