দীপু হত্যা নৃশংস অপরাধ, কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য নয়
বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা
প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
কাউছার পারভেজ শাকিল, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগে গণপিটুনিতে নিহত পোশাক শ্রমিক দীপু চন্দ্র দাসের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গতকাল মঙ্গলবার তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মোকামিয়াকান্দা গ্রামে নিহতের বাড়িতে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, দীপু চন্দ্র দাসের হত্যাকাণ্ড একটি নৃশংস অপরাধ, এর পেছনে কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়। দীপুর পরিবার একা নয়; রাষ্ট্র তার স্ত্রী, দেড় বছরের সন্তান ও পুরো পরিবারের আর্থিক ও আইনিসহ সব দায়ভার গ্রহণ করবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সিআর আবরার বলেন, বাংলাদেশ একটি আইন শাসিত রাষ্ট্র। মতভেদ বা গুজব কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কাউকে দেয় না। তিনি আরও বলেন, একটি দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠী বিভাজন সৃষ্টি করে এসব উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে কোনো চাপের কাছে সরকার নতিস্বীকার করবে না। বাইরের কোনো উস্কানি বা এসব অপকর্ম নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না। এরইমধ্যে এই ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আশ্বাস দেন যে, তদন্তের মাধ্যমে জড়িত প্রত্যেকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এদিকে উপদেষ্টার সফরের আগে দুপুরে নাগরিক কোয়ালিশনের ব্যানারে ১৮ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল দীপুর বাড়িতে পৌঁছান। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলমের নেতৃত্বে এই দলে ছিলেন- নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, জাকির হোসেন ও দীপায়ন খীসাসহ আরও অনেকে। শহিদুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন- আমরা বৈষম্যহীন যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেখানে বিনা প্রমাণে একজনকে হত্যা করে লাশ পোড়ানো হবে, তা কাম্য নয়। বিভিন্ন মব সহিংসতার ঘটনায় রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলা আজ দৃশ্যমান। তিনি দ্রুত ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে বলেন, দীপুর এই শূন্যতা পূরণ অসম্ভব, কিন্তু সমাজকে বার্তা দিতে হবে, যে এমন ঘটনা আর দ্বিতীয়বার ঘটতে দেওয়া হবে না।
গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকায় ‘পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড’ কারখানায় ধর্ম অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে দীপুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বিবস্ত্র করে মহাসড়কের পাশে গাছে ঝুলিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই অপু দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
