
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নামটি এই উপমহাদেশে প্রায় সব মানুষেরই জানা। শুধু ভারতবর্ষে নয়; সারা বিশ্বেই তার পরিচিতি রয়েছে। তবে নামটি জানা থাকলেও এবার তিনি কী ছিলেন এবং তার স্বরূপ নিয়ে তেমন একটা গবেষণা হয়েছে বলে মনে হয় না। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তি নেতা সুভাষ চন্দ্র বসু আপন বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জল ও মহান চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। ১৮৯৭ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার (বর্তমানে ওড়িশ্যা রাজ্য কটকে জন্মগ্রহণ করেন। প্রখ্যাত আইন প-িত জানকীনাথ বসু ও প্রভাবতী বসু (দত্ত) দম্পতির ১৪ সন্তানের ৯ম সন্তান ছিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু। জানকীনাথ বসু ইংরেজ সরকারের আইনজীবী হিসেবে ব্যাপক খ্যাতির অধিকারী ছিলেন। তার সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্রিটিশ ভারতীয় নামি-দামি স্কুলে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা করেন। সুভাষ চন্দ্রকে কটকের প্রোটেস্ট্যান্ট ইউরোপীয় স্কুলে (বর্তমানে স্টুয়ার্ট স্কুল) ভর্তি করান। জানকীনাথ চেয়েছিলেন তার সন্তানরা যেন ত্রুটিহীন ইংরেজি শিখতে পারে। কিন্তু বসু পরিবারের মাতৃভাষা বাংলার প্রতিও যথেষ্ট অনুরাগ ছিল। বাড়িতে সবাই বাংলায় কথা বলত। সুভাষ চন্দ্রের মাতা প্রভাবতী বসু বাড়িতে দেবী-দুর্গা ও মা কালীর উপাসনা করতেন। মহাভারত ও রামায়ন থেকে গল্প বলতেন এবং বাংলা ভক্তিগীতি গাইতেন। মায়ের কাছ থেকে সুভাষ চন্দ্র বসু উদার ও স্নেহশীল স্বভাব লাভ করেন। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের প্রতি ছিল প্রচ- ভালোবাসা। ছোটবেলা থেকেই দরিদ্রদের সাহায্যের স্বভাব গড়ে উঠে। অত্যন্ত মেধাবী ও প্রতিভাবান সুভাষ বসু শিক্ষার সবস্তরেই বিস্ময়কর ফল লাভ করেন। শিক্ষা জীবন শেষে ভারতীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি নিয়োগপত্র পেয়েও বিপ্লব সচেতন দৃষ্টিভঙ্গিতে তা প্রত্যাখ্যান করেন। ইংরেজ শাসকদের শোষণের হাত থেকে ভারতীয়দের মুক্তির লক্ষ্যে সংগ্রাম গড়ে তোলেন। ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে বিকশিত করতে তিনি স্ব-রাজ পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। সেইসঙ্গে বঙ্গীয় প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের মূলমন্ত্র প্রচারে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার রাজনৈতিক গুরু ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস। ১৯২৪ সালে দেশবন্ধু যখন কলকাতা পৌর সংস্থায় মেয়র নির্বাচিত হন, তখন সুভাষ বসু পৌর সংস্থার প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পালন করেন গুরুর নির্দেশে। ১৯২৫ সালে অন্যান্য জাতীয়তাবাদী নেতাদের সঙ্গে সুভাষ বসুকেও জেলে যেতে হয়। সুভাষ চন্দ্র বসু ১৯২১ সালে ১৬ জুলাই মাত্র ২৪ বছর বয়সে ইংল্যান্ড থেকে ফিরে ভারতের বোম্বেতে আসেন। অবিলম্বে কংগ্রেস নেতা গান্ধীজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ৫১ বছর বয়সি গান্ধী তখন অসহযোগ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। গান্ধীর আন্দোলন ভারতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। গান্ধীকে নানা প্রশ্নবাণে জর্জড়িত করেছিলেন সুভাষ বসু। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গান্ধীর মতবাদের সঙ্গে সুভাষ চন্দ্র বসু একমত হতে পারেননি। তিনি মনে করতেন, গান্ধীর লক্ষ্য উদ্দেশ্য অস্পষ্ট। স্বাধীনতা অর্জনে গান্ধীর সুচিন্তিত পরিকল্পনা ছিল না বলেই সুভাষ বসুর ধারণা। গান্ধীর আন্দোলন ছিল অহিংস। এ অহিংস আন্দোলনে গান্ধী ছিলেন আপোষহীন। বসুর মতে ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে যে কোনো উপায়ই যুক্তিযুক্ত। আন্দোলনের পরিণতির প্রশ্নে বসুর সঙ্গে গান্ধীর দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা দেখা দেয়। গান্ধী অবশ্য সুভাষ বসুর মধ্যে এক উজ্জ্বল সম্ভবনা দেখতে পান। তিনি বসুকে দেশবন্ধু সি আর দাশের পথে পরিচালিত করেন। চিত্তরঞ্জন দাশ ছিলেন গান্ধীর চেয়ে নমনীয় তবে চরমপন্থার প্রতি অধিক সহানুভূতিশীল। ইংরেজবিরোধী আন্দোলনে সে সময় বসুর মতবাদ ও সি আর দাশের আদর্শ যুবসমাজকে আকৃষ্ট করেছিল। চিত্তরঞ্জন সুভাষ বসুকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ করান। সুভাষ বসুর রাজনীতির পথে হাঁটেন চিত্তরঞ্জন দাশের হাত ধরেই। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে বসু ২০ বছর সম্পৃক্ত থেকে শীর্ষ নেতৃত্বের আসনও অলংকৃত করেন। কিন্তু তিনি গান্ধীজির সঙ্গে নিজেকে কখনও খাপ খাওয়াতে পারেননি। উভয়ের বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে গান্ধীর পরামর্শেই বসু ভিন্ন একটি দল গঠন করেন। ভারতীয় তরুণ যুবাদের নিয়ে ফরোয়ার্ড ব্লক নামে দল গঠন করে হিন্দু আজাদ ফৌজ গড়ে তোলেন। এ সময় তাকে আবার কারাগারে যেতে হয়। তবে তাকে কারগারে বেশি দিন আটকে রাখা সম্ভব হয়নি। ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে সুভাষচন্দ্র বসু ইউরোপ ভ্রমণ করেন। এ সময় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অধ্যয়নরত ভারতীয় ছাত্র ও ইউরোপীয় রাজনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি সেখান থেকে দলীয় সংগঠন এবং কমিউনিজম ও ফ্যাসিবাদ প্রয়োগ পর্যবেক্ষণ করেন। এ অভিজ্ঞতার আলোকে তার দ্য ইন্ডিয়ান স্ট্রাগল বইয়ের প্রথম অংশ রচনা করেন। ১৯৩৫ সালে বইটির লেখা সমাপ্ত হলে লন্ডন থেকে তা প্রকাশিত হয়। এ বইয়ে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপরেখাসহ নানা বিবরণ রয়েছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ভয়ে ব্রিটিশ সরকার বইটি নিষিদ্ধ করেন। ১৯৩৮ সালে সুভাষচন্দ্র বসু জাতীয় কংগ্রেস সম্পর্কে তার অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ এবং একটি সমাজতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার দ্বিমাত্রিক উদ্দেশ্য নিয়ে বৃহত্তর সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ফ্রন্টে সংগঠিত হওয়া উচিত।’ এ সময় তিনি ভারতীয় জাতীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। তিনি ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগসহ শর্তহীন স্বরাজের পক্ষে অবস্থান নেন। তিনি বিশ্বাস করতেন স্বাধীন ভারতের অন্তত: দুই দশক পর্যন্ত তুরস্কের কামাল আতার্তুক’র অনুরূপ সমাজতান্ত্রিক একনায়কতন্ত্র প্রয়োজন। তার এ বিশ্বাসের প্রতি অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা ছিল।
যাহোক, সুভাষ বসুর ফরোয়ার্ড ব্লক ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয় ভারতে। ১৯৪১ সালে সুভাষ বসুকে ইংরেজ সরকার গৃহবন্দি করে। গোয়েন্দা সংস্থা তার বাড়ি নজরদারিতে রাখে। কিন্তু কৌশলে তিনি আফগানিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়ন হয়ে জার্মানীতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পালিয়ে যাওয়ার কয়েকদিন আগে তিনি নিঃসঙ্গ থাকার অজুহাতে ব্রিটিশরক্ষীদের এড়িয়ে চলেন এবং লম্বা দাড়ি রেখে ছদ্মবেশ ধারণ করেন। এ সময় তিনি কোলকাতার এলিগণ বাড়িতে থাকতেন। জার্মান পালিয়ে গিয়ে জার্মান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আনওয়ের সাহায্যে পেশোয়ার পৌঁছান। সেখানে তিনি আক্বর শাহ মোহম্মদ শাহ এবং ভগতরাম তলওয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাকে আকবর শাহর বিশ্বস্ত বন্ধু আবেদ খানের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯৪১ সালে ২৬ জানুয়ারি তিনি আফগানিস্তান সংলগ্ন ব্রিটিশ ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ দিয়ে রাশিয়া পৌঁছানোর জন্য যাত্রা শুরু করেন। যাত্রায় তাকে সাহায্য করেন ফরোয়ার্ড ব্লক নেতা মিঞা আকবর শাহ। শাহ তাকে একটি অভিনব ছদ্মবেশ ধারণের প্রস্তাব দেন। যেহেতু বসু পশতু ভাষার একটি শব্দও জানতেন না, ব্রিটশদের জন্য কর্মরত পশতু বক্তাদের পক্ষে তাকে সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব ছিল। এজন্য শাহ তাকে বধির এবং বোবার অভিনয় করার পরামর্শ দেন এবং সেখানকার উপজাতিদের অনুকরণে তাকে দাড়ি বড় করতে হয়। তার পথপ্রদর্শক ভগতরাম তলওয়ার একজন সোভিয়েত গোয়েন্দা ছিলেন, তবে সুভাষচন্দ্র বসু তা জানতেন না। সুভাষ চন্দ্র বসুর রাজনৈতিক জীবন ছিল অনেকটাই ছন্ন ছাড়া। তিনি ছিলেন এক রহস্যময় নেতা। জনশ্রুতি আছে ইংরেজ শাসক তাকে জেলে রেখেছেÑ কিন্তু তিনি দিব্যি রাজপথে জনসভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন। এ দৃশ্য দেখে সবাই হতবাক। তরিঘরি জেলখানায় গিয়ে দেখা যায় সুভাষ চন্দ্র বসু ঠিকই জেলখানায়। ভারতীয় মানবসমাজের সীমাহীন বৈষম্যের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন একমাত্র প্রথম কাতারের যোদ্ধা। তিনি যখন জার্মানে অবস্থান করেন, তখন জার্মান পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত আজাদ হিন্দু রেডিওর সম্প্রচারের দায়িত্বে থাকা ভারতের স্পেশাল ব্যুরোর সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি বার্লিনে ফ্রি ইন্ডো সেক্টর প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভারতীয় যুদ্ধবন্দিদের মধ্য থেকে সৈন্য নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন। অপশক্তির হাতে বন্দি হওয়ার আগে এ সৈন্যরা আফ্রিকায় ব্রিটিশদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিল। ভারতীয় বাহিনী শুরুতে ভেরমাখট (নাৎসি জার্মানীর ঐক্যবদ্ধ সামরিক বাহিনী) এর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল। পরে তা ওয়াফেন এসএস বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
এ বাহিনীর সদস্যরা হিটলার এবং সুভাষচন্দ্র বসুর প্রতি আনুগত্যের শপথগ্রহণ করে। শপথের ভাষা ছিল এরকম ‘আমি শপথ করে বলছি যে, সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে, ভারতের জন্য যুদ্ধে আমি জার্মান জাতি ও রাষ্ট্রের নেতা অ্যাডলফ হিটলারকে জার্মান সামরিক বাহিনীর নেতা হিসেবে মেনে চলব। তিনি আজাদ হিন্দ বাহিনীর নেতৃত্বে নাৎসরি সৈন্যদের দ্বারা সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে ভারত আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন। অনেকেই তার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, কারণ এ ধরনের আগ্রাসনের পর জার্মানদের সহজে ভারত ছেড়ে যেতে রাজি করানো যেত না; যার ফলে যুদ্ধে অক্ষশক্তির বিজয়ও হতে পারত। এদিকে ৩০০০ ভারতীয় যুদ্ধবন্দি আজাদ হিন্দ বাহিনীতে যোগদানে সুভাষ চন্দ্র বসু খুশির পরিবর্তে চিন্তিত হয়ে পড়েন। বামপন্থি রাশিয়ার একজন ভক্ত হিসেবে হিটলারের ট্যাংকের সোভিয়েত সীমান্ত অতিক্রম দেখে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। হিটলারের কর্মকা-ের প্রতি তার সন্দেহ সৃষ্টি হয়। তিনি হিটলারের প্রতি আস্থা রাখতে না পেরে জার্মান ইউ-বোটে করে জাপান চলে যান। এর ফলে জার্মানীতে তার সৈন্যরা নেতৃত্বহীন এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমনি অবস্থায় বসুর সৈন্যরা আর দাঁড়াতে পারে না। এদিকে বসুর হিন্দ আজাদ ফৌজও ভেঙে দেওয়া হয়। অন্যদিকে প্রবাসী জাতীয়তাবাদী নেতা রাসবিহারী বসুর নেতৃত্বে পরিচালিত তৎকালীন ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের কারণেই ভারতীয় বাহিনীতে বিচ্ছিন্ন পরিবেশ তৈরি হয়। ১৯৪৩ সালে সুভাষ চন্দ্র বসুর পুনরায় ভারতে আগমনের পর স্বাধীনতার জন্য সেনাবাহিনী গঠনের ধারণাটি আবারও পুনরুজ্জীবিত হয়। জুলাই মাসে সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত একটি সভায় রাসবিহারী বসু সুভাষ চন্দ্র বসুর হাতে স্বাধীনতা লীগের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করেন। সুভাষ চন্দ্র বসু সেনাবাহিনী পুনর্গঠন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রবাসী ভারতীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন সংগঠিত করতে সমর্থ হন। প্রবাসী ভারতীয়রা একই সঙ্গে জাতীয় সেনাবাহিনীতে তালিকাভুক্ত হয়ে এবং স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেন। আজাদ হিন্দ ফৌজ এ একটি পৃথক নারী ইউনিট ছিল যার নাম ঝাঁসি রাণী রেজিমেন্ট (রানী লক্ষ্মী বাঈয়ের নামে নামকরণ হয়) ক্যাপটেন লক্ষ্মী সেহগলের নেতৃত্বে এ বাহিনী গঠিত হয়। এটি এশিয়ার প্রথম দৃষ্টান্ত।
১৯৪৭ সালে ভারত রক্তপাতহীনভাবে স্বাধীনতা লাভ করে বিভক্তির মধ্য দিয়ে। তবে স্বাধীনতা লাভের ক্ষেত্রে নেতাজী সুভাষ বসুর আন্দোলন সংগ্রামই কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। ইংরেজ শাসক ভারত ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। সুভাষচন্দ্র বসুর বিখ্যাত উক্তি তাকে অমর করে রেখেছেÑ ‘তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।’ ‘জয় হিন্দ, তার ব্যবহৃত একটি সেøাগান যা ভারতীয় রাষ্ট্রীয় সেøাগানের স্বীকৃতি লাভ করেছে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট সুভাষ চন্দ্র বসুর অন্তর্ধ্যান ঘটে। কারও কারও মতে, সুভাষ চন্দ্র জাপানি বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। কার্যত : কীভাবে মৃত্যু হয় কারও জানা নেই বা সঠিক কোনো তথ্যউপাত্ত ছাড়াই মৃত্যু রহস্য ঘুরাঘুরি করছে। যুগ যুগ এভাবেই চলবে। তবে তিনি যদি ৪৭ সাল পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকতেন তবে ভারতবর্ষ হয়তো ভাগ হত না। এ ধারণা অনেকে এখনও পোষণ করেন। গোটা ভারতবাসীকে এক মঞ্চে সন্নিবেশ করার ক্ষমতা তারই ছিল। সুভাষ চন্দ্র বসু বাঙালির গর্ব ও আলোকবর্তিকা। তিনি গোটা ভারতবাসীর আবেগ ও অনুভূতির নাম নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু। তার জন্মদিনে জানাই অকৃত্রিম লাল গোলাপের ভালোবাসা ও সালাম।