ভেজাল খাদ্যে জীবন বিনাশ
মুসাহিদ উদ্দিন আহমদ, প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক
প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২২, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

কয়েক দিন হলো দেশে ভেজাল ঘিয়ের এক রমরমা ব্যবসার খবর প্রকাশ পেয়েছে সংবাদ মিডিয়ায়। ঘি তৈরিতে ডালডার সঙ্গে মেশানো হতো কৃত্রিম রং ও এসেন্স। কারখানায় উৎপন্ন বিপুল পরিমাণ ভেজাল ঘি দেশের বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্র থেকে অবলীলাক্রমে পৌঁছে যায় ভোক্তার কাছে। সারা বছর ধরে বিশেষ করে ঈদ উৎসবের মতো পার্বণের দিনে এসব ভেজাল ঘি বিক্রি হতো দেদারসে। অসাধু ব্যবসায়ী হাতিয়ে নিতো বিপুল পরিমাণ অর্থ। আর ভোক্তা সাধারণ এসব ভেজাল ঘি খেয়ে নানা রোগ ব্যাধির শিকার হতেন। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে নিত্যব্যবহার্য প্রায় সব ধরনের পণ্যে ভেজাল মেশানোর সংস্কৃতি আজকে যে পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে তা সত্যি ভয়াবহ। ওষুধ, প্রসাধনী কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না ভেজালের কবল থেকে। মহামারি করোনাকালে বিপর্যস্ত মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে দেশের অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল পণ্যের ব্যবসায় মেতে উঠেছে। ভেজালের দৌরাত্ম্যে আজ অসহায় গোটা বাংলাদেশের মানুষ। বাজারের তৈরি খাদ্য থেকে শুরু করে খাবার তৈরির অনেক কাঁচামালই বিশুদ্ধ নয়। রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের খাবারের দোকানে, রেস্তোরাঁয় রয়েছে ভেজালমিশ্রিত খাদ্যের ছড়াছড়ি। অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে ভোক্তাদের অখাদ্য-কুখাদ্য পরিবেশন করা হয় বাধাহীনভাবে। খাবার রান্নার জন্য ব্যবহার করা হয় পুরোনো নিম্নমানের তেল। পোড়া একই তেল ব্যবহার করা হচ্ছে রান্নার কাজে। খাদ্য প্রস্তুতের উপাদান মশলায়ও থাকে বিষাক্ত রংসহ নানা ধরনের ভেজাল। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ ভেজাল ও দূষিত খাদ্য গ্রহণের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে মারা যায় প্রায় ৪ লাখ ৪২ হাজার মানুষ।
এছাড়াও দূষিত খাবারজনিত কারণে ৫ বছরের কম বয়সের আক্রান্ত হওয়া ৪৩ শতাংশ শিশুর মধ্যে মৃত্যুবরণ করে ১ লাখ ২৫ হাজার শিশু।
সম্প্রতি দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, দেশে প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। ভেজাল খাবার এবং নকল ও ভেজাল ওষুধ সেবন কিডনি রোগ বাড়িয়ে তুলছে। অতিরিক্ত ওষুধ সেবনও কিডনি রোগ প্রসারের অন্যতম কারণ।
শস্য ও সবজিতে কীটনাশক ও প্রিজারভেটিভের ব্যবহারের কারণে খাদ্যে হেভি মেটাল অ্যালমিয়া, অ্যাডমিয়া বা অর্সেনিকের প্রবেশ ঘটছে। অনেকদিন এসব বিষাক্ত দ্রব্য মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণের ফলে ক্রনিক কিডনি রোগ দেখা দিচ্ছে। ‘বাংলাদেশে খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারকরণে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা প্রকল্প’ বিষয়ক নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে আয়োজিত এক কর্মশালায় পাঁচটি পৃথক গবেষণায় বেশকিছু তথ্য উঠে এসেছে, যা দেশের জন্য ভীষণ উদ্বেগজনক। গবেষণায় দেশের উত্তরাঞ্চলের চাল, বাদাম, ভুট্টার ৬০টি নমুনার মধ্যে ৯টিতে যকৃত ক্যান্সারের জন্য দায়ী অ্যাফ্লাটক্সিনের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এসবের চারটিতে ছিল নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আদর্শ মাত্রার বেশি অ্যাফ্লাটক্সিন থাকলে তা হতে পারে ক্যান্সার ও কিডনি রোগের কারণ। ২০২১ সালজুড়ে পরিচালিত এ গবেষণায় বাদাম ও ভুট্টাতে বিষাক্ত পদার্থের বেশি উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ময়মনসিংহের কিছু এলাকার গরুর দুধে সামান্য পরিমাণে অ্যামোক্সিসিলিন নামক অ্যান্টিবায়োটিকের সন্ধান মিলেছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের লইট্টা শুঁটকিতে পাওয়া গেছে ক্ষতিকারক ‘ই কোলাই’ ব্যাকটেরিয়া।
গবেষণা অনুসারে, ৪৫টি নমুনার ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। আর ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ নমুনায় অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীল ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া যায়। ঈশ্বরগঞ্জ থেকে সংগ্রহকৃত প্রস্তুত দুগ্ধজাত খাবারে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখা যায়।
গবেষণায় ব্যবহৃত নমুনায় ১৯ দশমিক ২ শতাংশ শসা, ১০ শতাংশ টমেটো ও ৩ দশমিক ৪ শতাংশ গাজরে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। দুগ্ধজাত পণ্যের মধ্যে ৭ দশমিক ১ শতাংশ, আইসক্রিম এবং ৪ শতাংশ দইয়ে লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনিস ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান মেলে।
বিশুদ্ধ খাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম প্রধান। দূষিত বা ভেজালমিশ্রিত খাদ্য মানুষের জন্য স্বাস্থ্যহানিকর। অথচ আজকের বাংলাদেশে সেই বিশুদ্ধ খাবার খুঁজে পাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য পানিও আজ বিশুদ্ধ নয়। বোতলজাত পানির প্রায় ৫০ শতাংশ দূষিত। অফিস-আদালতে, বাসাবাড়িতে সরবরাহকৃত বড় বড় জারের পানির ৯৮ শতাংশই জীবাণুপূর্ণ। বাজারের ৮৫ শতাংশ মাছে ফরমালিন মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। শুকিয়ে যাওয়া শাক রাসায়নিক পদার্থে ডুবিয়ে তাজা দেখিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া পুরোনো কাঁচা মরিচে সবুজ রং মিলিয়ে বাজারে আনা হচ্ছে। ফলমূল দ্রুত পাকিয়ে রঙিন বানাতে সর্বত্রই কার্বাইড, ইথোফেন, আর ফরমালিন প্রয়োগ করা হচ্ছে। আটায় মেশানো হচ্ছে চক পাউডার বা ক্যালসিয়াম কার্বনেট। পোলট্রিফার্মের ডিমে ট্যানারি বর্জ্যস্থিত বিষাক্ত ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। আটায় মেশানো হচ্ছে চক পাউডার বা ক্যালসিয়াম কার্বনেট। আনারসে হরমোন প্রয়োগ করে দ্রুত বৃদ্ধিও প্রক্রিয়া চলে আসছে বহুদিন ধরে। আম গাছে মুকুল ধরা থেকে শুরু করে আম পাকা পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে রাসায়নিক ব্যবহার এখন ওপেনসিক্রেট। মিষ্টিজাতীয় খাবারে ব্যবহার করা হয় বিষাক্ত রং, সোডা, সেকারিন, মোম। মসলায় কাপড়ের বিষাক্ত রং, ইট ও কাঠের গুড়া মেশানো হয়। নকল ও ভেজাল ওষুধে ছেয়ে গেছে বাজার। অপারেশনের কাজে ব্যবহৃত প্যাথেডিন, নরম্যাল স্যালাইনসহ নানা ধরনের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ বাজারজাত করে চলেছে ভেজালচক্র।
এর আগে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এক পরীক্ষায় কোনো কোনো পণ্যে ৬৬ শতাংশ থেকে ৪৩ শতাংশ, কখনও ২৫ শতাংশ থেকে ২৮ শতাংশ ভেজাল পাওয়া গেছে। নিত্যপণ্য চালেও ভেজাল মিলেছে ৯ শতাংশ। চাল, ডাল, আটা, লবণ, সয়াবিন তেল, হলুদ, মরিচ থেকে শুরু করে ঘি, গুড়, মধু এমনকি শিশুখাদ্যেও রয়েছে ভেজালের ছড়াছড়ি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শতাধিক ধরনের পণ্যের ১ হাজার ৫৮টি নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করে ভেজালের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এসব পণ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ ভেজাল পাওয়া যায় ঘিতে ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এরপরেই গুড়ে রয়েছে ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মধুতে রয়েছে ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ ভেজাল। শিশুখাদ্য গুঁড়াদুধে রয়েছে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ ভেজাল। ভেজাল থেকে বাদ যায়নি অতি প্রিয় মিষ্টি চমচম, রসগোল্লা, কালোজামে। এসব খাদ্যে রয়েছে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ ভেজাল। মিষ্টির সঙ্গে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত টেক্সটাইলের রং। এ ছাড়া বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে মেশানো হয়- ইউরিয়া, হাইড্রোজ, কার্বাইড, ফরমালিন, পারাথিয়ন। বিভিন্ন মশলার গুঁড়ায় মিশছে ধানের তুষ, ইট বা কাঠের গুড়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় তেল, সাবানসহ অন্যান্য প্রসাধনীসামগ্রীও ভেজালমুক্ত নয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহকৃত ৪৩ ধরনের খাদ্যপণ্যের মোট ৫ হাজার ৩৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়, যার মধ্যে ২ হাজার ১৪৭টি নমুনাতেই মাত্রাতিরিক্ত ভেজালের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহাখালিস্থ পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউটের খাদ্য পরীক্ষাগারে দেশের ৫৪ ভাগ খাদ্যপণ্য ভেজাল ও দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করা হয়।
দেশের ও আন্তর্জাতিক গবেষণায় বাংলাদেশের খাবারের বিষয়টি বারবার উঠে এসেছে। পরিবেশ বাঁচাও অন্দোলনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু ভেজাল খাদ্য গ্রহণের ফলে প্রতি বছর দেশে ৩ লাখ লোক ক্যান্সার নামক মরণব্যাধিতে, ২ লাখ লোক কিডনি রোগে এবং দেড় লাখ লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক জটিলতাসহ ১৫ লাখ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মদান করেন। ভেজাল খাদ্যগ্রহণের ফলে দেশে হেপাটাইটিস, কিডনি, লিভার ও ফুসফুস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও দিনদিন বেড়ে চলেছে।
১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে খাদ্যে ভেজাল দেওয়া ও ভেজাল খাদ্য বিক্রির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ বছরের কারাদণ্ডেরও বিধান রয়েছে সেই আইনে। ২০১৫ সালে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানো হলেও ভেজাল দানকারী চক্রকে দমন করা যাচ্ছে না। খাদ্যপণ্যে ভেজাল প্রতিরোধের মূল দায়িত্ব বিএসটিআই-এর। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, র্যাব, পুলিশসহ ৬টি মন্ত্রণালয়ের ১০টি বিভাগ ভেজাল বন্ধের দায়িত্বে নিয়োজিত। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার স্বাস্থ্য বিভাগেরও এব্যাপারে ভূমিকা রয়েছে।
কিন্তু এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অভাবে ভেজাল প্রতিরোধ কার্যক্রম সফল হচ্ছে না। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামান্য জেল, জরিমানার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে ভেজালবিরোধী কার্যক্রম। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভেজাল পণ্য উদ্ধার ও পরীক্ষা-সংক্রান্ত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতায় ভেজাল প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা আজ থমকে আছে।
খাদ্যকে বিষমুক্ত রাখতে ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ বিল-২০১৫’-এ ফরমালিনের ব্যবহার রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ২০ লাখ ও সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান হয়েছে। এ আইনে ফরমালিন বিক্রয়ের দোকান সাময়িকভাবে বন্ধসহ সংশ্লিষ্টবিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। আইন অনুসারে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন উৎপাদন, আমদানি, মজুত, বিক্রয়, পরিবহন এমনকি ব্যবহার বা দখলে না রাখার নির্দেশনা দেওয়া আছে। কিন্তু এসবের কার্যকারিতা খুবই সামান্য পরিলক্ষিত হচ্ছে।
নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে গণমানুষের জীবন রক্ষার্থে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল প্রদান বন্ধ করার ওপর বারবার গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনার জন্য লোকবল সমস্যা সমাধানেরও আশ্বাসসহ দেশের সর্বত্র যেন নিয়মিত ভেজাল প্রতিরোধে ব্যবস্থা গৃহীত হয়, সে ব্যাপরেও আশ্বস্ত করা হয়েছে। তারপরও খাদ্যে ভেজাল পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। দেশব্যাপী ভেজালমুক্ত খাদ্যপণ্য সরবরাহের লক্ষ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তবে ভেজালের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি অতি মুনাফালোভী, অসাধু খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী ও বাজারজাতকারীদের কঠোর শাস্তির আওতায় এনে দেশব্যাপী ভেজালমুক্ত খাদ্য পণ্য সরবরাহের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ভেজারকারীদের মানবিক মূল্যবোধ ফিরিয়ে আনা। এ ব্যাপারে মসজিদ, মন্দির, উপাসনালয়ে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালানো দরকার। ভেজাল মিশ্রণ মহাপাপ। ভেজালমিশ্রিত খাদ্য উৎপাদন, সরবরাহ মেশানো মানুষকে তিলে তিলে মেরে ফেলার মতো অপরাধ।
ভেজালকারী, মুনাফাখোরদের মধ্যে এ উপলব্ধি জেগে উঠলে ভেজাল এমনিতেই কমে আসবে। সুস্থ দেহমন নিয়ে বেঁচে থাকতে সারাজীবন মানুষের বিশুদ্ধ খাদ্য গ্রহণের নিশ্চিয়তা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কেননা, বিশুদ্ধ খাদ্য গ্রহণ মানুষের জন্য বিশেষ কোনো বাড়তি সুবিধা নয়, জন্মগত অধিকার।
