ঢাকা বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সততাই সম্পদ

মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম সাদিক
সততাই সম্পদ

সৎ লোক বৈষয়িকভাবে দরিদ্র থাকতে পারে। সে স্বেচ্ছায় ওই রকম দারিদ্র্যকে বেছে নিয়েছে। সৎ লোক নিজে জীবনচারিতায় কী আনন্দ পায়, সেটা একজন অসৎ লোক বুঝবে না। অসৎ লোকদের ধারণাই হলো, সমাজে সব লোকই অসৎ। আবার অসৎ লোক নিজের অসততার পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়েও বলে, সমাজে সব লোকই অসৎ। আর সে নিজে যা করছে তাই স্বাভাবিক। কিছু অসৎ লোক এমনও বলে যে, ওসব পদে বসে সৎ থাকা যায় না। সৎ থাকতে গেলে চাকরি হারাতে হবে। ব্যক্তি পর্যায়ের কিছু লোক বলে, ট্যাক্স অফিসে গিয়ে সৎ হতে গেলে ট্যাক্সম্যানরা আপনার কাছ থেকে শুধু বেশি ট্যাক্সই চাইবে। অসৎ ও দুর্নীতিবাজ লোকদের আরেক কৌশল হলো কী করব, ওপরের সবাইকে খুশি করতে হয়! অসৎ লোক কাউকে নিয়ম ভেঙে কিছু সুবিধা দিতে গিয়ে বলে, ওপরের নির্দেশ আছে। অসৎ লোকেরা আবার সংঘবদ্ধ থাকে। তাদের পাশ কাটিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত কেউ দিতে গেলে তারা তা ঠেকিয়ে দেবে।

দুর্নীতিবাজদের কৌশল হচ্ছে, সৎ লোকগুলোকেও দুর্নীতিবাজ বলা। তারা বলতে থাকে- ও, ওই লোকটা সৎ আছে, কারণ সে তো দুর্নীতি করার সুযোগই পায়নি। সুযোগ পেলে দেখতেন, সে হতো দুর্নীতির গডফাদার! আসলে দুর্নীতিবাজরা সৎ লোকদের এসব বলে একটু হলেও কাদা মেখে দিতে চায়। তবে যারা সৎ আছে, তারা এসব নিন্দাবাদের পরোয়া করে না। তারা সৎ থাকে নিজের বিশ্বাসকে মূল্য দেয়ার জন্য। তাদের বিশ্বাস, সততা তাদের অন্যদের থেকে শুধু আলাদাই করবে না, প্রকৃতপক্ষে তারাই সফল হবে। তাদের কাছে সফলতার মাপকাঠি হলো সততা আর পরিশ্রম। তাদের আরেক গুণ হলো- তারা বিনয়ী। দুনিয়ার মিথ্যা-লোভ তাদের তাড়িয়ে ফিরতে পারে না। তারা হলো এক অনন্য মানুষ। সৎ লোকের সুনাম ও সুখ্যাতি চিরদিন অব্যয় অক্ষয় থাকে।

সৎ লোকদের কেউ তোষামোদও করে না। সৎ লোকের পরিচয় প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে যারা আল্লাহকে ভয় করে, সব ধরনের অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকেন- তারাই সৎলোক। কারণ তারা অপরের এ ব্যবহার অপছন্দ করে। গৌরব-গরিমা এসব হলো তাদের সৃষ্টিকর্তার জন্য। মহান শুধুই তাদের রব তাদের সৃষ্টিকর্তা। এ লোকগুলো সমাজের কাদায় থাকলেও কাদা যেন গায়ে মাখতে না পারে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকে। চাওয়া-পাওয়ার উৎস তাদের কাছে একটিই। সেই উৎস হলো- তাদের সৃষ্টিকর্তা এবং বিশ্বাস করে, তিনি চাইলে তারা ভালো থাকবে। দুনিয়ার ভালো থাকার উপকরণগুলো তারা ততটাই মূল্য দেয়, যতটা না হলে ন্যূনতম জীবন ধারণ করা যাবে না। এরা অন্য লোককে সম্মান করে। এরা এ-ও জানে, প্রকৃত জ্ঞানী হওয়ার জন্য প্রকৃতির পাঠই অনেক উপকারী, যদি সেই পাঠ সঠিকভাবে গ্রহণ করা যায়। আর যারা একমাত্র আল্লাহকে ভয় করে, সব অন্যায় কাজ ছেড়ে দেয়, তারাই সৎলোক।

প্রাবন্ধিক ও মুদ্রণ ব্যবস্থাপক

sadiqsamsul1@gmail.com

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত