ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মহান বিজয় দিবস

আমরা তোমাদের ভুলব না
মহান বিজয় দিবস

আজ ১৬ ডিসেম্বর, আমাদের বিজয় দিবস। জাতীয় বিজয় অর্জিত হয়েছিল এই দিনে। ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর কাছে রমনা উদ্যানে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। দেশ শত্রুমুক্ত হয় এবং স্বাধীনমুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রকাশ ঘটে। ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, যে ডাকে বাঙালিরা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ শুরু করে, সেই ডাকের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৬ ডিসেম্বর। বিজয় উল্লাসে মেতে ওঠে দেশ। পরের বছর ১৯৭১ সালে সরকারিভাবে দিনটিকে বিজয় দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই থেকে দিবসটি মহাসমারোহে পালিত হয়ে আসছে।

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য অনেক। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর লাখো মানুষের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল ১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনী মুক্ত হয়ে মিত্র বাহিনীতে পরিণত হয়। এই মিত্র বাহিনীর তৎপরতায় বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়। এই দিবসটিতে আমরা আমাদের মুক্তি বাহিনীর সঙ্গে মিত্র বাহিনীকেও স্মরণ করি। ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় আমাদের সর্বোচ্চ বিজয়। এমন বিজয় কোনো জাতির জীবনে বারবার আসে না। সে জন্যই দিবসটিকে শ্রদ্ধায়, মর্যাদায়, আনন্দে ধরে রাখা হয়। এটা কখনোই ভোলার নয়। মুক্তিযুদ্ধ এবং তার বিজয়ের সঙ্গে যারা জড়িত, আমরা তাদের কাউকেই ভুলব না, ভুলতে পারব না। ভোলা যায়ও না। কিন্তু খুবই দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এই দিবসটির গুরুত্ব কমিয়ে আনার জন্য এদেশেরই একটি শ্রেণি অপচেষ্টা চালিয়েছে। তারা শুধু এতেই ক্ষান্ত হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু কেউ ছোট করার চেষ্টা করেছে। আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা হয়েছে। বিজয়ের পরেও আমাদের সেসব পরাজিত অপশক্তির বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হয়েছে এবং এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। ১৬ ডিসেম্বরে যারা পরাজিত হয়েছিল তারা বসে থাকেনি। পরে সুযোগ বুঝে তাদের অপকর্ম চালাতে তৎপর হয়েছে এবং এ তৎপরতাকে সহায়তা দিয়েছে এদেশেরই কিছু মানুষ। বিভিন্নভাবে তারা এখনও তৎপর রয়েছে। আমাদের তাদের সঙ্গেও লড়াই করতে হচ্ছে। এ লড়াই চালিয়ে যাবো আজীবন।

১৬ ডিসেম্বরের শিক্ষা হলো বিজয়কে ধরে রাখো। যে বিজয় লাখো জীবনের বিনিময়ে অর্জিত সেই বিজয় ধরে রাখার কর্তব্য সবার। সবাই সেটা মনেও করেন। এ জন্যই তো এখনও বিজয় বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি। এখনও বিজয় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে বিজয় বার্তা ঘোষণা করছে। মাঝেমধ্যে পরাজিত শত্রুরা এতে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশেষ করে ডিসেম্বর মাস এলেই তারা নানাভাবে তৎপর হয়ে ওঠে। কিন্তু বিজয়ের মাস নিতান্তই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারণাকারীদের মাস। এ চেতনা যেমন কেউ কেড়ে নিতে পারবে না, তেমনি এই পবিত্র বিজয়ের মাসে কেউ অপতৎপরতা চালিয়েও সফল হবে না। রাজাকার, আলবদর, আলশামস, পাকিস্তানি দালাল, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সবাইকে পরাজিত করে দিবসটি অর্জন করতে হয়েছে। এই পরাজিতরা যদি আবার কোনোভাবে এই অর্জনকে কলুষিত করার চেষ্টা করেম তা হলে তার উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। আমরা আশা করব, বাঙালির এ বিজয় কেউ আসম্মান করার চেষ্টা করবেন না এবং যারা করবে, তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। জয় বাংলা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত