পড়াশোনার পাশাপাশি কেন জীবন দক্ষতাগুলো শেখানো উচিত
তোহসিন খান
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা মূলত একাডেমিক বিষয়গুলোর উপর কেন্দ্রীভূত; কিন্তু বর্তমান যুগের চাহিদা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের জন্য জীবন দক্ষতা শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু জীবন দক্ষতা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনে সফল হতে সাহায্য করবে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতার আলোচনা করা হলো যা আমাদের স্কুলে শেখানো উচিত।
যোগাযোগ দক্ষতা : যোগাযোগ দক্ষতা একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতা। এটি মৌখিক এবং লিখিত উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে কথা বলা, লিখতে শেখানো এবং বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কীভাবে যোগাযোগ করতে হয়, তা শেখানো উচিত। এটি তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
সমস্যা সমাধানের দক্ষতা : সমস্যা সমাধানের দক্ষতা শিক্ষার্থীদের চিন্তা করার এবং সৃজনশীলভাবে সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। স্কুলে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প এবং গ্রুপ কাজের মাধ্যমে এই দক্ষতা উন্নয়ন করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলো সমাধান করতে উৎসাহিত করা উচিত।
সময় ব্যবস্থাপনা : সময় ব্যবস্থাপনা একটি অপরিহার্য দক্ষতা। শিক্ষার্থীদের শেখানো উচিত কীভাবে তাদের সময়কে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করতে হয়, যাতে তারা পড়াশোনা, খেলা এবং বিশ্রামের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পারে।
আর্থিক শিক্ষা : আর্থিক শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবন দক্ষতা যা শিক্ষার্থীদের অর্থ পরিচালনা করতে শেখায়। বাজেট তৈরি করা, সঞ্চয় করা এবং বিনিয়োগের মৌলিক ধারণা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জানানো উচিত।
মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা : মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা এবং তাদের মানসিক চাপ মোকাবিলার কৌশল শেখানো উচিত।
নেতৃত্বের দক্ষতা : নেতৃত্বের দক্ষতা শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব দিতে এবং দায়িত্ব নিতে শেখায়। স্কুলে বিভিন্ন ক্লাব এবং সংগঠনের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্বের সুযোগ দেওয়া উচিত।
প্রযুক্তিগত দক্ষতা : বর্তমান যুগে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অপরিহার্য। শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার, ইন্টারনেট এবং অন্যান্য প্রযুক্তির ব্যবহার শেখানো উচিত। এটি তাদের আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশের স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি এই জীবন দক্ষতাগুলো শেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত এই দক্ষতাগুলোকে শিক্ষার অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা, যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আরও সক্ষম এবং আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে।
লেখক : তোহসিন খান, প্রধান শিক্ষক, সিজিএস জাতীয় পাঠ্যক্রম ও মানবসম্পদ বিশেষজ্ঞ।
