জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছে এসএমসি
আবুল বশির খান
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভনিরোধের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি এবং সবার জন্য নিরাপদ ও কার্যকর পদ্ধতির প্রাপ্যতা নিশ্চিতে সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি বা এসএমসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বর্তমানে দেশে ব্যবহৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর ৫০ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করে এসএমসি। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে জনসংখ্যা ছিল বাংলাদেশের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। সে সময় থেকেই সরকারের সঙ্গে এসএমসি দেশের পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে আসছে। আগের তুলনায় এখন দেশের তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্রিয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতা, উন্নত শিক্ষা এবং বৈশ্বিক সংযোগ তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম করে তুলেছে। ফলে, পরিবার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জন্মনিয়ন্ত্রণে তরুণদের অংশগ্রহণও দৃশ্যমানভাবে বেড়েছে।
নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও এসএমসি কাজ করছে একেবারে শিকড় পর্যায়ে। এসএমসির অধীনে কাজ করছে প্রায় ১৫ হাজার গোল্ড স্টার মেম্বার, যারা মূলত গ্রামের প্রান্তিক নারী উদ্যোক্তা। তারা স্বল্প মূলধনে জন্মনিয়ন্ত্রণ পণ্য, স্যানিটারি ন্যাপকিন, পিল, কনডম ইত্যাদি কিনে স্থানীয় নারীদের মধ্যে বিতরণ করেন। অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা দোকানে গিয়ে এসব পণ্য চেয়ে নিতে অস্বস্তি বোধ করেন, সে ক্ষেত্রে পরিচিত নারী উদ্যোক্তার মাধ্যমে সেবা গ্রহণে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এসএমসির এই উদ্যোগ নারীদের শুধু স্বাস্থ্য সচেতনই করছে না, পাশাপাশি তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বীও করে তুলছে। মাসে গড়ে ৫ হাজার টাকা আয় করছেন এমন উদ্যোক্তার সংখ্যাও কম নয়। অনেকে স্থানীয় সরকারে প্রতিনিধিত্বও করছেন- যেমন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হয়েছেন বা অন্য নেতৃত্বের ভূমিকায় এসেছেন।
এসএমসির মুনাফাভিত্তিক উইং এসএমসি এন্টারপ্রাইজ থেকে যে আয় হয়, সেটি সামাজিক কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। বিশেষ করে পরিবার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তায় এসব অর্থ কাজে লাগানো হয়। সচেতনতামূলক কার্যক্রমেও এসএমসির অবদান উল্লেখযোগ্য। মোবাইল ফিল্ম ইউনিট (এমএফইউ) নামক একটি ভ্রাম্যমাণ চলচ্চিত্র প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের গ্রামাঞ্চলে পরিবার পরিকল্পনা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সচেতনতা নিয়ে নাটিকা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এ কার্যক্রমগুলো গ্রামীণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
এ ছাড়া, দেশের কনডম ক্যাটাগরিতে সুপার ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া এসএমসির মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের আয়ক্ষমতার সঙ্গে মানানসই দামে স্বাস্থ্যসেবার পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা। প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার হলো- স্বাস্থ্য ও সামাজিক কল্যাণে কাজ করা, যা নারী, শিশু এবং পরিবারের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখে। বর্তমানে বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা ও জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় সরকারিভাবে যতটুকু চাহিদা মেটানো হয়, তার সমান বা বেশি অংশ এসএমসি পূরণ করছে। তাই বলা চলে, দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এসএমসি।
লেখক : চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লি.
