ডক্টর গোলাম মঈনউদ্দিন, নিমগ্ন জীবনসন্ধানীর জীবনাবসান

মো. মনিরুল ইসলাম

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

গোলাম মঈনউদ্দিন- একজন আলোকিত মানুষের নাম। একজন প্রাবন্ধিক, গবেষক, কবি ও গ্রন্থ বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাঁর নাম দেশজুড়ে বিস্তৃত। পেশায় তিনি ছিলেন বাংলা একাডেমির পরিচালক, নেশায় ছিলেন জীবনসন্ধানী গবেষক। ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা রচনাবলী’ সংকলন ও সম্পাদনার মতো একটি দারুণ প্রশংসনীয় কাজ তিনি করেছিলেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। গতকাল ১৯ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই সাহিত্য-নিমগ্ন মানুষটি মৃত্যুবরণ করেছেন। ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম জাগরণের নির্মোহ বিশ্লেষক, শুদ্ধাচারী সাহিত্যিক এবং বিশেষ করে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা গবেষক হিসেবে নক্ষত্রমানুষরূপে প্রোজ্জ্বল হয়ে থাকবেন।

গোলাম মঈনউদ্দিন ১৯৪৪ সালে সাতক্ষীরা জেলার নলতা শরীফে জন্মগ্রহণ করেন। নলতা শরীফ আগে থেকেই উপমহাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও ছুফি-দার্শনিক হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)-এর জন্মভিটে হিসেবে বিখ্যাত। গোলাম মঈনউদ্দীনের জন্ম আহ্ছানউল্লার জন্মভিটেতেই। শৈশব ও কৈশোরের পুরোটাও কেটেছে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)-এর সংস্পর্শে। মঈনউদ্দীনের পিতা এম. জওহর আলী একজন সমাজ-মনস্ক ও সমাজ-সমাদৃত ব্যক্তি ছিলেন। তিনি নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাকালীন সম্পাদক ছিলেন। মা নূরুন্নেসা খাতুন। সাত সন্তানের একটি সুখী ও সচ্ছল পরিবারে গোলাম মঈনউদ্দিন ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান।

নিজ গ্রামের নলতা প্রাইমারি স্কুলে গোলাম মঈনউদ্দিনের লেখাপড়ার সূত্রপাত। নলতা হাইস্কুল থেকে তিনি ১৯৬০ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন ও খুলনা বি.এল কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে আই. এ পাশ করেন। এরপর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে তিনি বি.এ (সম্মান) এবং ১৯৬৬ সালে এম.এ পাস করেন। ২০০২ সালে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট ছুফি-সাধক খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার জীবন-কর্মণ্ডসাহিত্যের ওপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা প্রথম মানুষটি ছিলেন তিনি। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.) এর জীবন-কর্মণ্ডঅবদান যে পরবর্তীতে দেশের মূল সারির চিন্তকের গবেষণার উপাদান হয়ে উঠেছিল, সেই উপাদানের পথ নির্মাণ করেছিলেন গোলাম মঈনউদ্দীন। তিনি খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার একজন পূর্ণাঙ্গ জীবনসন্ধানী গবেষক ছিলেন।

গোলাম মঈনউদ্দিনের সমগ্র চাকরি-জীবন কেটেছিল বাংলা একাডেমির মতো একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানে। ১৯৬৭ সালে তিনি বাংলা একাডেমির এসিসট্যান্ট সেল্স এন্ড পাবলিকেশন অফিসার পদে যোগদান করেন। এরপর নানা গুরুত্বপূর্ণ পদ ও দায়িত্বপালন শেষে তিনি পরিচালক পদে উন্নীত হন। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে, অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে তিনি বাংলা একাডেমির সেক্রেটারি ও মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। তিন দশকেরও অধিক সময় তিনি এ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। ২০০০ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

চাকরি-জীবনে ইউনেসকো বৃত্তি নিয়ে তিনি দু’বার জাপান যান। এখানে ১৯৭৫ সালে ‘বুক প্রোডাকশন’ বিষয়ে এবং ১৯৭৯ সালে ‘বুক ডেভলপমেন্ট’ বিষয়ে তিনি উচ্চতর শিক্ষালাভ করেন। তাঁর এজাতীয় শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাঁর প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর রচিত ‘গ্রন্থ উন্নয়ন’ বইতে। বাংলা একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের এক সভায় এই বইটি ‘মেরিটারিয়াস পাবলিকেশন’ হিসেবে বিবেচিত ও অনুমোদিত হয়। এজন্য গোলাম মঈনউদ্দিন একটি অতিরিক্ত বেতন ইনক্রিমেন্ট লাভ করেন।

গবেষক ও লেখক গোলাম মঈনউদ্দিনের লেখালেখির সূত্রপাত হয় বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা ও দৈনিক প্রত্রিকার সাহিত্য পাতায়। বাংলাদেশে যখন গ্রন্থ উন্নয়ন ও পাঠ প্রসারণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মনোযোগ তেমন করে আকৃষ্ট হয়নি, সে সময়ে তিনি এ সম্পর্কিত নানা গুরুত্বপূর্ণ লেখার মাধ্যমে গ্রন্থজগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। একজন ‘গ্রন্থ বিশেষজ্ঞ’ হিসেবে তিনি এখনো দেশে ও বিদেশে বিশেষভাবে সমাদৃত। এশিয়ান কালচারাল সেন্টার ফর ইউনেসকো, জাপান কর্তৃক প্রকাশিত ‘এশিয়া-প্যাসিফিক বুক ডেভলপমেন্ট জার্নাল-এর জন্য তিনি বাংলাদেশের পক্ষে ‘ন্যাশনাল করেসপন্ডেন্ট’ হিসেবে নিয়োগ পান। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক মনোনীত ও ইউনেসকো অনুমোদিত এই বিশেষ দায়িত্ব তিনি এক দশকেরও অধিক সময় দক্ষতাঁর সঙ্গে পালন করেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি বাংলাদেশের গ্রন্থ প্রকাশনা, বিপণন, পাঠ প্রসারণ ও লেখক সম্পর্কে যে সকল তথ্যচিত্র এই জার্নালে তুলে ধরেন তা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের গ্রন্থ উন্নয়ন কর্মীদের নজর কাড়ে এবং অনুসন্ধিৎসা মেটায়। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে, কখনও প্রধান হিসেবে তিনি দেশের বাইরে বেশ কিছু আঞ্চলিক ও বিশ্ব গ্রন্থমেলায় যোগদান করেন।

গোলাম মঈনউদ্দিনের লেখালেখির ক্ষেত্র ও পরিমন্ডল সততই বিস্তৃত ও বিচিত্রমুখী। তিনি মূলত: গবেষক ও প্রাবন্ধিক। তাঁর প্রবন্ধের বিষয়বস্তু সাহিত্য মূল্যায়ন ও সাহিত্য সমালোচনা, গ্রন্থ উন্নয়ন, গ্রন্থ প্রকাশনা, গ্রন্থ বিপণন ও পাঠ উন্নয়ন। তাঁর কবিতার জমিনজুড়ে আছে মানুষের মনোভাবনা, নর-নারীর হার্দিক সম্পর্ক, নিটোল নিবিড় আবেগ-অনুরাগ এবং নিসর্গ। কবিতায় তিনি প্রায়শই আশাবাদী। জীবনকে তিনি গভীর মমতা, বিশ্বাস ও স্বপ্ন-সুখ নিয়ে অবলোকন করেন। তাঁর প্রতিটি কবিতার বই দ্বিভাষিক। বাংলায় রচিত কবিতার পাশাপাশি ইংরেজি অনুবাদও লিপিবদ্ধ হয়েছে। সৃষ্টিশীল লেখার পর্যায়ে তিনি কিছু ছোটগল্পও রচনা করেন, যা শুধুই পত্র-পত্রিকার পাতায় দৃশ্যমান; বই আকারে প্রকাশিত হয়নি।

তিনি প্রবন্ধ, কবিতা, শিশুতোষ অনুবাদ ও সম্পাদনা মিলে অন্তত ৩০টি গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর সাহিত্য পর্যালোচনাবিষয়ক প্রবন্ধ সংকলনগুলো হলো- ‘কবি ফররুখ আহমদ: ঐতিহ্যের নবমূল্যায়ন’ ‘প্যারীচাঁদ মিত্র ও অন্যান্য প্রবন্ধ’ ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা: জীবন ও সাহিত্য’ ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা: বিশ্বাস ও জীবন দর্শন’। একজন গ্রন্থ বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি বেশ কিছু গ্রন্থবিষয়ক প্রবন্ধ সংকলনের রচয়িতা। ‘গ্রন্থ উন্নয়ন’ ‘বই সংরক্ষণ ও বিপণন‘ ‘বই‘ ‘বাংলাদেশে গ্রন্থ উন্নয়ন’ ‘গ্রন্থনীতি ও বিবিধ প্রসঙ্গ’ ‘পাঠানুরাগ ও বইয়ের বাজার’ ইত্যাদি তাঁর এ সংক্রান্ত রচনা।

সাহিত্যের উর্বর ক্ষেতজুড়ে তাঁর পরিশ্রমী কলমের লাঙলে বেশ কিছু কবিতা চাষাবাদ হয়েছে। সেখানে জন্ম নেয়া তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলোর নামও ছন্দময়। ‘বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে’ ‘জ্যোৎস্নায় পুড়ে পুড়ে’ ‘আকাশের পথে পথে’ ‘শিশিরের কানে কানে’ ‘বাতাসের পায়ে পায়ে’ ইত্যাদি গ্রন্থে তাঁর কাব্যপ্রতিভার পরিচয় মেলে। ‘মহৎ জীবন’ ‘আমাদের সমিতি’ ‘বাংলাদেশের ফল’ ‘এসো দল গড়ি’ ‘মাটির মানুষ সোনার ছেলে’ ইত্যাদি তাঁর শিশুতোষ গ্রন্থ। অনুবাদেও তাঁর সব্যসাচী দখল। প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রবার্ট ডাল রচিত রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অত্যন্ত জনপ্রিয় ‘মডার্ন পলিটিক্স’ বইটিকে তিনি ’আধুনিক রাষ্ট্রনীতি বিশ্লেষণ’ শিরোনামে বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেন।

ড. গোলাম মঈনউদ্দিন বেশ কিছু গ্রন্থ ও স্মারকগ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন। ‘বাংলাদেশের পুস্তক বিপণন ব্যবস্থা উন্নয়ন’ ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা: স্মারক গ্রন্থ’, ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা: নির্বাচিত প্রবন্ধ’ ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা রচনাবলী’ ‘সোহেল সামাদ স্মারক গ্রন্থ’ ‘ড. শহীদুর রহমান স্মারক গ্রন্থ’ ‘হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা: একান্ত অনুভব’, ‘মো. দরবেশ আলী স্মারক গ্রন্থ’ ‘খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা: নির্বাচিত পত্র’ ইত্যাদি তাঁর সম্পাদনা কর্ম।

সাহিত্য কৃতির স্বীকৃতি হিসেবে গোলাম মঈনউদ্দিন দেশে বিদেশে বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। এর মধ্যে সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার, সাতক্ষীরা, ১৯৯৫; মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার, কলিকাতা, ১৯৯৫, যুক্তরাষ্ট্র সাহিত্য পরিষদ সংবর্ধনা- পুরস্কার, নিউইয়র্ক, ১৯৯৭; নারায়নগঞ্জ সাহিত্য সম্মেলন সংবর্ধনা- পুরস্কার, ১৯৯৮; সোনালী রোদ সংবর্ধনা- পুরস্কার, হুগলী, ১৯৯৮ ও চোখ সাহিত্য পুরস্কার কলিকাতা, ২০০০ অন্যতম।

বাংলা একাডেমির চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর, গোলাম মঈনউদ্দিন বেশ কিছুদিন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন পরিচালিত আহ্ছানিয়া মিশন বুক ডিস্ট্রিবিউশন হাউসের পরিচালক পদের দায়িত্ব পালন করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি তাঁর স্বপ্ন ও পরিকল্পনার আলোকে নির্মিত হয়। দেশে একটি মনোলোভা ও অভিজাত বই বিপণিকেন্দ্র নির্মাণ এবং লেখক-প্রকাশক-পাঠকের সঙ্গে নিবিড় ও আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে দেশের গ্রন্থ বণ্টন ও বিপণনের ক্ষেত্রে একটি বিজ্ঞান সম্পন্ন পথের সূচনা করাই ছিল এই প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এই স্বপ্ন-সাধ প্রায় অধরা রেখেই তিনি আমেরিকা পাড়ি দেন। সেখানে প্রথমাবস্থায় তিনি সিটি হসপিটাল বেলভিউ-এর ‘রীচ্ আউট এন্ড রীড’ প্রজেক্টে বেশ কয়েক বছর কাজ করেন। এরপর নিরবচ্ছিন্নভাবে তিনি বিভিন্ন লেখালেখির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সেখানে বসেই তিনি সম্প্রতি সম্পাদনা করেছেন ‘এম জওহর আলী: আহ্ছানিয়া মিশন ও সমাজকর্মে নৈবেদ্যজীবন’ এবং ‘দাদুর স্মৃতি’। আমৃত্যু তিনি খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউটের সম্মানিত উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।

গোলাম মঈনউদ্দিন ছিলেন হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)-এর স্নেহাশীষ প্রাপ্ত ধন্য মানুষ। তাঁর শৈশব-কৈশোরজুড়ে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার কত শত স্মৃতি! শৈশব থেকেই তিনি খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লার ব্যক্তিগত পত্রলেখক হিসেবে কাজ করেছেন।

খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.) গোলাম মঈনউদ্দিনকে মানুষের মতো মানুষ হওয়া স্বপ্ন দেখাতেন। ১৯৫৪ সালে মাত্র ১০ বছরের বালক মঈনউদ্দিনকে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা একটি আশীর্বাদপত্রে লেখেন- ‘তুমি দুগ্ধপোষ্য বালক হয়ে এতাধিক মহব্বত হাছেল করেছ, যার ফলে তুমি অতি পবিত্র স্বর্গীয় সুষমা লাভে সমর্থ হয়েছ। তোমার স্বপ্নটি তোমার ভবিষ্যৎ উন্নতির সূচিকা। প্রিয় আবুল! দয়াময় আল্লাহ তোমার প্রতি সন্তুষ্ট। তাই অত সুন্দর খোয়াব দেখতে সমর্থ হয়েছ। মনোযোগ দিয়ে বিদ্যা শিক্ষা করো, প্রত্যহ প্রাতে একটু কোরআন শরীফ তেলাওত করবে, চরিত্রকে পাক রাখবে, খোদার উপর নির্ভরশীল থাকবে। ইন্শাআল্লাহ খোদা তোমার প্রতি প্রসন্ন থাকবেন। হজরত খাজা ছাহেবের নাম ধারণ করেছ, তোমাকে বুজর্গী হাছেল করতে হবে। তোমার দৃষ্টান্তে লোককে মুগ্ধ করতে হবে।’

হজরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)-এর আর্শিবাদ সত্যই দৃষ্টান্ত হয়ে পরিস্ফুটিত হয়েছিল। গোলাম মঈনদ্দীন সত্যই মানুষকে মুগ্ধ করতে পেরেছিলেন। তাঁর লেখালেখিতে মানুষ আজও মুগ্ধ হন আর তাঁর বক্তৃতায় মানুষ হতেন মন্ত্রমুগ্ধ। আহ্ছানিয়া মিশন পরিবারে অগণিত ভক্ত অনুসারী অন্তত বছরান্তে তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতেন। এই মুগ্ধময় মানুষটিকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি। তাঁর মিষ্টি মুখাবয়বে আর দেখা যাবে না বিনয়মিশ্রিত মুগ্ধতাঁর প্রভাস, তাঁর সুললিত কণ্ঠস্বরে আর বেজে উঠবে না মন্ত্রমুদ্ধ সেই বাণী। কিন্তু গোলাম মঈনউদ্দীন আমাদের স্বরে উচ্চারিত থাকবেন একজন শুদ্ধাচারী সাহিত্যিক হয়ে, আমাদের স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে থাকবেন একজন জীবনসন্ধানী গবেষক হিসেবে। তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপণ করছি।

মো. মনিরুল ইসলাম,পরিচালক, খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা ইনস্টিটিউট