সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানকে স্বাগত
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন সামনে রেখে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নতুন নতুন কৌশল প্রণয়ন করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় সরকার। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশে সংসদ নির্বাচন সকলের আরাধ্য। সে লক্ষ্যে সামগ্রিক প্রস্তুতি ও আয়োজনও চলছে। রাজনৈতিক দলগুলো তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার, নির্বাচন কমিশন-ইসি কাজ করছেন এই লক্ষ্যে। এ নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সশস্ত্র বাহিনীর একটি ভূমিকা থাকবে সবার আশা। সেই লক্ষ্যে কাজও চলছে। আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান শীর্ষক খবরে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও জাতি গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান সত্যিই প্রশংসনীয়। দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আপনারা যে ত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন, তা দৃষ্টান্তমূলক।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। একইসাথে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা, অগ্রগতি, জাতি গঠন এবং সংকটকালে জনগণের পাশে দাঁড়ানোয় সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের প্রশংসা করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশের নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও জাতি গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান সত্যিই প্রশংসনীয়। দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আপনারা যে ত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন, তা দৃষ্টান্তমূলক।’ ৩ ডিসেম্বর রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স (এএফডব্লিউসি) ২০২৫-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা ব্যক্ত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মহামারির মতো সংকটে সশস্ত্র বাহিনীর অব্যাহত প্রচেষ্টা দেশের জনগণের কল্যাণে তাদের প্রস্তুতি ও অটল নিষ্ঠার প্রমাণ বহন করে।’ তিনি বাহিনীর সদস্যদের জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তিতে অবদান রাখার জন্যও ধন্যবাদ জানান, যা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতি বাড়িয়েছে। আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমাদের জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে সত্যিই একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে। এটি শুধু একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে না, বরং শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করবে। ভোটাররা যখন ভোট দিতে বের হবেন, তা উৎসবমুখর হবে এবং জাতি গর্বের সঙ্গে স্মরণ করবে যে তারা দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে অংশ নিয়েছেন।’
এদিকে নির্বাচন অবাধ করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পূর্ববর্তী নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কোনো কর্মকর্তাকে এবার আর দায়িত্ব না দেওয়া, দেশের সব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনার পাশাপাশি রাজনৈতিক পক্ষপাত ছাড়াই সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো; পাশাপাশি নির্বাচনের আগে বেহাত হওয়া সব অস্ত্র উদ্ধার এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রাজনৈতিক দলগুলো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে। আমরা মনে করি প্রধান উপদেষ্টার এ আহ্বান সময়োপযোগী। আর তার ডাকে সাড়া দিয়ে উক্ত বাহিনীর সদস্যরা জনগণের দীর্ঘদিনের নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা পূরণ করবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করবে বলে আমরা আশাবাদী। আমরা মনে করি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি মানুষের যে আস্থা রয়েছে তার প্রতিদান দেওয়ার সুযোগ তারা পাবেন। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানকে স্বাগত জানাই। সেই সঙ্গে আশা করি ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণ হবে।
