প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর হানাদার পশ্চিম পাকিস্তানিদের কবর থেকে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে আত্মপ্রকাশ করে। বিজয় দিবস বাংলাদেশের মানুষের কাছে এক গভীর তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। বাংলাদেশ এই দিনটি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তিকামী মানুষের বিজয়ের স্মারক। এই দিনটি লাখ লাখ শহিদের আত্মত্যাগ এবং মা-বোনের সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জন লক্ষ্যে, গভীর আবেগ এবং অনুপ্রেরণামূলক বাচনভঙ্গির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে প্রস্তুত করেছিলেন। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী এর নেতৃত্বে বীর উত্তম জিয়াউর রহমান ও অন্যান্য সেক্টর কমান্ডার, মুক্তিযোদ্ধাগণসহ দেশের সব মুক্তিকামী মানুষ জীবনবাজি রেখে সুশৃঙ্খলভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যান।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে যখন দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন সমগ্র জাতি দিশাহারা। কিন্তু ঠিক তখনই, বাঙালি জাতির মহানায়ক, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। বিশেষত ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, যা প্রতিটি বাঙালির মনে স্বাধীনতার বীজ বুনে দিয়েছিল।
শুধু বাংলাদেশেই নয়, প্রতিটি দেশের বিজয় দিবস ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা (যুদ্ধ, ঔপনিবেশিক মুক্তি, বা জাতিগঠন) উদযাপন করে। বিজয় দিবস বিশ্ব মানুষের কাছে জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের বিজয়ের এক মূর্ত প্রতীক। বিজয় দিবস বিশ্বের সব নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। বিশ্বের প্রতিটি জাতির নিজস্ব বিজয় উদযাপনের দিবস রয়েছে। প্রতিটি দেশের জন্য আলাদা আলাদা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও উদযাপনের বিবরণ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজয় দিবস এবং তাদের প্রেক্ষাপট সংক্ষিপ্ত রূপে নিম্নে উল্লেখ করা হলো- রাশিয়া ও প্রাক্তন সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলো- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়কে স্মরণ করে এই দিনটি পালিত হয়। ইউরোপ (৯ মে)- ইউরোপে জার্মানির আত্মসমর্পণের ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি (VE Day) হিসেবে পালিত হয়, যদিও কিছু দেশ ভিন্নভাবে পালন করে। যুক্তরাষ্ট্র (১৪ আগস্ট)- রোড আইল্যান্ড (Rhode Island) রাজ্যের মতো কিছু জায়গায় ১৪ আগস্ট, জাপানের আত্মসমর্পণের দিনে (V-J Day) বিজয় দিবস পালিত হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে ‘বিজয় দিবস’ নামে নির্দিষ্ট জাতীয় ছুটি নেই। তবে, বাংলাদেশ, ভারত ও আফগানিস্তান ১৯৭১ সালের যুদ্ধের বিজয়কে স্মরণ করে এবং কয়েকটি দেশ বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত দিন উদযাপন করে। দেশ অনুযায়ী বিজয় দিবসের তারিখ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো- আফগানিস্তান ২৬ জুলাই কার্গিল যুদ্ধের বিজয়কে স্মরণ করে ‘কার্গিল বিজয় দিবস’ পালিত হয়। ২৮ এপ্রিল, মুজাহিদিন বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হতো, যা ১৯৯২ সালে কমিউনিস্ট সরকারের পতনের স্মারক। ১৫ আগস্ট ২০২১ সালে তালেবানরা ক্ষমতা দখলের দিনটিকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে। পাকিস্তান- ১৬ ডিসেম্বরের ঘটনাকে ‘বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করে না। বরং, এই দিনটি তাদের জন্য একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়। নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ এবং ভুটান- এই দেশগুলোতে সাধারণত ‘বিজয় দিবস’ নামে কোনো নির্দিষ্ট জাতীয় দিবস নেই, কারণ তাদের ইতিহাস ভিন্ন এবং তারা স্বাধীনতা বা জাতীয় দিবস উদযাপন করে। উদাহরণস্বরূপ, ভুটানের জাতীয় দিবস ১৭ ডিসেম্বর এবং নেপাল দশইন উৎসবের ১০ম দিনকে বিজয়া দশমী বলা হয়, যা একটি ধর্মীয় উৎসব। ঊর্ধ্বভাগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বৈচিত্র্যময় বিজয় দিবস উদযাপন সম্বন্ধে আলোকপাত করা হলো। এ পর্যায়ে আবার ফিরে আসছি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের বিজয় প্রসঙ্গে- ডিসেম্বরের শুরু থেকেই মিত্রবাহিনীর সমন্বিত আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী দুর্বল হতে থাকে।
১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটলেও, মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করে। সমগ্র বাংলাদেশকে ভৌগোলিক ও কৌশলগত কারণে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি সেক্টরের নেতৃত্বে ছিলেন একজন সাহসী সেক্টর কমান্ডার- যারা আদর্শে উজ্জীবিত ছিলেন। এই কমান্ডারগণ সুশৃঙ্খলভাবে সাধারণ জনগণ, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকদের নিয়ে গঠন করেন দুর্ধর্ষ গেরিলা বাহিনী। তারা তাদের নিজ নিজ সেক্টরে যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ করেন। সম্মুখযুদ্ধ থেকে শুরু করে গেরিলা হামলা, অ্যামবুশ, ব্রিজ ধ্বংস- প্রতিটি কার্যক্রম পরিচালিত হতো নিখুঁত পরিকল্পনা মাফিক। তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ধীরে ধীরে কোণঠাসা হতে শুরু করে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে লক্ষাধিক মানুষের আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিজয় অর্জিত হয়েছে এবং বহু ব্যক্তি অসামান্য অবদান রেখেছেন। এই বীরত্বগাঁথা ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করা কঠিন, কারণ অবদানকারীদের সংখ্যা অনেক বেশি। তবুও, আমরা কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অবদান সংক্ষেপে তুলে ধরতে পারি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রধান রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব-
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান : তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি এবং জাতির পিতা। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিল। যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকলেও, তার নেতৃত্বেই প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম : মুজিবনগর সরকারের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে সরকারের নেতৃত্ব দেন।
তাজউদ্দীন আহমদ : তিনি ছিলেন মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সংগঠক।
জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী (এমএজি ওসমানী) : তিনি ছিলেন মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক। তার সামরিক নির্দেশনায় সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল।
জিয়াউর রহমান : তিনি একজন সেক্টর কমান্ডার (সেক্টর ১ ও ১১) ছিলেন এবং চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন, যা মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিল।
ক্যাপ্টেন মনসুর আলী : মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
এএইচএম কামারুজ্জামান : মুজিবনগর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী ছিলেন।
বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত সাতজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা- এরা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ লাভ করেছেন তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য। ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর-৭ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে শহিদ হন। হল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ- ইপিআর-এ কর্মরত ছিলেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের বুড়িঘাট এলাকায় শহিদ হন। সিপাহী হামিদুর রহমান- ৪ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং সিলেটের আমশাগ্রামে শহিদ হন। ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ- ৮ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং যশোরের গোয়ালহাটি যুদ্ধে শহীদ হন। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান- পাকিস্তান বিমান বাহিনীর বাঙালি বৈমানিক ছিলেন। তিনি বিমান ছিনতাই করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে গিয়ে শহিদ হন। ইঞ্জিন রুম আর্টিফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন- নৌ-বাহিনীর সদস্য ছিলেন। খুলনার রূপসা নদীতে শহিদ হন। সিপাহী মোস্তফা কামাল- ২ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দরুইন গ্রামে শহিদ হন।
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সেক্টর কমান্ডার এবং সামরিক ব্যক্তিত্ব : মেজর খালেদ মোশাররফ (বীর উত্তম)-২ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। মেজর কেএম শফিউল্লাহ (বীরউত্তম)-৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। মেজর সি আর দত্ত (বীরউত্তম)-৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। মেজর মীর শওকত আলী (বীর উত্তম)-৫ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। উইং কমান্ডার এম কে বাশার (বীর উত্তম)-৬ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান (বীরউত্তম)-৭ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। মেজর এম এ মঞ্জুর (বীরউত্তম)-৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। মেজর এম এ জলিল (বীর উত্তম)-৯ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার। মেজর আবু তাহের (বীরউত্তম)-১১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার (পরবর্তীতে মেজর জিয়াউর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হন)। মুক্তিযুদ্ধে আরও হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী এবং সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখেছেন, যাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। এছাড়াও, অনেক সামরিক কমান্ডার ও নেতা রণাঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির মনে সাহস ও অনুপ্রেরণা জোগাতে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ থেকে প্রচারিত গানগুলো অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছিল। বিজয়ের আনন্দ উদযাপনের জন্য ১০টি জনপ্রিয় গানের তালিকা নিচে দেওয়া হলো- জয় বাংলা, বাংলার জয়- গাজী মাজহারুল আনোয়ার রচিত ও আনোয়ার পারভেজ সুরারোপিত। পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে- গোবিন্দ হালদার রচিত ও সমর দাস সুরারোপিত। মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি- গোবিন্দ হালদারের কথায় ও আপেল মাহমুদের সুরে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে- গোবিন্দ হালদারের কথায় ও শাহীন সামাদের সুরে। শোনো একটি মুজিবরের থেকে- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার রচিত ও অংশুমান রায় সুরারোপিত। সব কটা জানালা খুলে দাও না- নজরুল ইসলাম বাবু রচিত ও আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল সুরারোপিত।
মা গো ভাবনা কেন- গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার রচিত ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সুরারোপিত। নঙ্গর তোলো তোলো- নইম গহর রচিত ও সমর দাস সুরারোপিত। তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর- গোবিন্দ হালদার রচিত ও আপেল মাহমুদের সুরে। কারার ওই লৌহ কপাট- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত। আমি বাংলায় গান গাই- প্রতুল মুখোপাধ্যায় রচিত। জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো- নইম গহর রচিত ও সমর দাস সুরারোপিত। ও আমার দেশের মাটি- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ- দেশাত্মবোধক গান।
জন্মভূমির বিজয়ে যারা আনন্দিত হয় না বা জন্মভূমির প্রতি যাদের ভালোবাসা নেই, তাদের মনীষীগণ ও কবি সাহিত্যিকগণ বিভিন্নভাবে ভর্ৎসনা করেছেন। দেশপ্রেমকে মানব চরিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এর অনুপস্থিতিকে হীনতা বা পশুর প্রবৃত্তির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
আমরা যারা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক, আমাদের হৃদয়ে এই প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে এই অর্জনের জন্য আমরা কার কাছে কৃতজ্ঞ হবো। এর উত্তর হলো- আমাদের এই বিজয় সম্ভব হয়েছে স্রষ্টার অশেষ রহমত, যিনি আমাদের অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীন ভূমির আলো দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্ব ও ত্যাগের বিনিময়ে, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জে ওসমানী, সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানসহ সকল বীরাঙ্গনা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। তাদের আদর্শ ও সাহস কোটি বাঙালিকে এক করেছিল এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করেছিল।
এই মহান বিজয়ের জন্য আমরা অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সবার নিকট চিরকৃতজ্ঞ থাকব। তাদের অবদান ভোলার নয় এবং এই কৃতজ্ঞতা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বয়ে চলবে।
ড. মো. আনোয়ার হোসেন
প্রাবন্ধিক, কথা সাহিত্যিক, প্রেসিডেন্ট আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী সংগঠন ফ্রিডম ইন্টারন্যাশনাল এন্টি অ্যালকোহল