স্বাগত তারেক রহমান দেশ গড়ার অভিযাত্রা সফল হোক
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

পাকিস্তানি শাসনের ২৪ বছর ভাষার ওপর আঘাত, বৈষম্য-বঞ্চনা ও সেনাশাসনের বিরুদ্ধে লাগাতার সংগ্রাম করেছিল এ দেশের মানুষ। যার চূড়ান্ত পর্যায়ে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। দুর্ভাগ্যজনক যে এই দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারীদের হাতেই দেশে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছিল। ১৯৭৫-এর ফেব্রুয়ারিতে শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল গঠন করেন। অন্য সব দল নিষিদ্ধ হয়। অথচ আধুনিক বিশ্বে গণতন্ত্রই সবচেয়ে জনপ্রিয় শাসনপদ্ধতি। জনগণের জন্য, জনগণের দ্বারা, জনগণের সরকারই গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র ও সৌন্দর্য। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। গঠন করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। নব্বইয়ে এরশাদের স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের পর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন করেন। এরপর ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন। এগুলো দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার একেকটি মাইলফলক। এসবের সূত্রেই বিএনপির ওপর গণমানুষের আস্থা তৈরি হয়েছে যে এদের হাতে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। অতীতে তিনবার ক্ষমতায় বসেও দলটি স্বৈরাচারী হয়ে ওঠেনি। সেজন্যই জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটেও, বিএনপির ওপর গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা আকাশছোঁয়া। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জিয়া-খালেদার যোগ্য উত্তরসূরি তারেক রহমান আসীন হয়েছেন কোটি কোটি মানুষের ভরসার কেন্দ্রে।
দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশের ছেলেটি আজ ফিরছেন। তার এ ফেরাকে শুধু একজন রাজনীতিকের দেশে ফেরা নয়, বাংলাদেশের রাজনীতির নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে দেখছেন বিএনপির অগণিত নেতাকর্মী, সমর্থকসহ দেশবাসী। তারেক রহমান এমন একটা সময় দেশে ফিরছেন, যখন সামনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং তার মা বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, দলীয় এবং দেশের এ কঠিন পরীক্ষার ক্রান্তিকাল তাকে মোকাবিলা করতে হবে। স্বভাবগতভাবে ধীরস্থির, শান্ত প্রকৃতির মানুষ তিনি।
এক-এগারোর লাঞ্ছনা-গঞ্জনার পর দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়ে দীর্ঘ নির্বাসিত জীবনে নিরন্তর অধ্যবসায়, চর্চা ও সাধনায় যে গভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা তিনি অর্জন করেছেন- তার জাদুকরী প্রয়োগ এখন প্রদর্শনের সময়। পিতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মা তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে থেকেছেন, তিনিও অভিন্ন আদর্শে দেশ-জাতির সর্বোচ্চ কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করবেন বলে আশা করে সবাই। জনগণও নিশ্চয়ই তাকে বুকে টেনে নেবে, যেভাবে তার পিতা-মাতাকে আস্থা ও ভালোবাসার সর্বোচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করেছিল। স্বাগত তারেক রহমান। আপনার নতুন করে দেশ গড়ার অভিযাত্রা সফল হোক।
