কার্যকর প্রশিক্ষণ পদ্ধতির বাস্তব অভিজ্ঞতায় আত্মউন্নয়ন ও নেতৃত্ব বিকাশ
নাজমুল হাসান (পিআরএস, উডব্যাজার)
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

আজকের প্রশিক্ষণ, আগামীর সম্ভাবনা। প্রশিক্ষণ মানে শুধু তথ্য গ্রহণ নয়; প্রকৃত প্রশিক্ষণ হলো জানা, শেখা এবং বাস্তবে প্রয়োগ করার সক্ষমতা অর্জন। প্রশিক্ষণ হলো শৃঙ্খলা, আত্মউন্নয়ন এবং নেতৃত্ব বিকাশের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে থাকা একটি প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তিকে দক্ষ, দায়িত্বশীল ও অনুপ্রাণিত করে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ স্কাউটস-এর জাতীয় সদরদপ্তরের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মৌচাক, গাজীপুরে সম্প্রতি (১৮-২৪ ডিসেম্বর ২০২৫) অনুষ্ঠিত হয়েছে ৫১তম কোর্স ফর অ্যাসিসট্যান্ট লিডার ট্রেনার। কোর্সটির মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষ, দায়িত্বশীল ও ভবিষ্যতমুখী স্কাউট প্রশিক্ষক তৈরি করা, যারা বাংলাদেশ স্কাউটস-এর প্রশিক্ষণ টিমের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
সহকারী লিডার ট্রেনার হওয়ার জন্য এটি একটি আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ কোর্স এবং বাংলাদেশ স্কাউটস-এর প্রশিক্ষণ কাঠামোয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যানেজারিয়াল প্রশিক্ষণ হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সাত দিনের এই কোর্সে শৃঙ্খলা, দলবদ্ধ কাজ এবং ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শেখার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রতিটি দিন ছিল চ্যালেঞ্জ, আনন্দ এবং আত্মউন্নয়নের সমন্বয়ে গঠিত। ভোরের নিস্তব্ধতা ভেদ করে বাঁশির শব্দে ঘুম ভাঙা, নামাজ শেষে শারীরিক ব্যায়ামে অংশগ্রহণ এসবই প্রতিদিনের রুটিনের অংশ ছিল, যা আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করত। এই কোর্স আমাকে শুধু প্রশিক্ষণ শেখায়নি, বরং শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ এবং নেতৃত্বের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত মোট ৫১ জন উডব্যাজপ্রাপ্ত স্কাউট লিডার এই কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।
অংশগ্রহণকারীদের ছয়টি টিমে বিভক্ত করা হয় এবং প্রতিটি টিমের জন্য একজন করে ফ্যাসিলিটেটর নিয়োজিত ছিলেন। ফ্যাসিলিটেটররা দলগুলোকে সার্বক্ষণিক গাইডিং ও মোটিভেশন প্রদান করে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এছাড়া কোর্সে মোট ১৪ জন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করেন। কোর্স পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল, কোষাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ স্কাউটস এবং পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।
কোর্সের প্রতিটি দিন ছিল সময়ানুবর্তিতা, আত্মশৃঙ্খলা এবং দায়িত্ববোধের বাস্তব অনুশীলন। প্রতিদিন ভোর ৫টায় নামাজের মাধ্যমে দিনের সূচনা হতো, যা আমাদের মানসিক স্থিরতা ও আত্মিক শক্তি জোগাত। এরপর সকালের শারীরিক ব্যায়াম শরীরকে চাঙা করার পাশাপাশি দলগত চেতনা ও শৃঙ্খলার গুরুত্ব উপলব্ধি করাত। সকাল ৭:৩০ মিনিটে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হতো, যা স্কাউটিং মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধকে আরও দৃঢ় করত। প্রতিটি দিনের জন্য নির্দিষ্ট একটি থিম নির্ধারিত থাকত এবং সেই থিমকে কেন্দ্র করেই সেশন ও প্রশিক্ষণ পরিচালিত হতো। সকাল ৮টায় ‘রিফ্লেকশন’ ও ‘গতকালকের শিখন’ সেশনের মাধ্যমে আগের দিনের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ ও আত্মমূল্যায়নের সুযোগ তৈরি হতো।
সকাল ১০টায় চা-বিরতির পর পুনরায় সেশন শুরু হতো। দুপুর ১২:৩০ থেকে ২টা পর্যন্ত নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের বিরতি থাকত। এরপর দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪:৩০ পর্যন্ত এবং সন্ধ্যায় নামাজের বিরতির পর আবার সেশন পরিচালিত হতো। প্রতিটি সেশনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমরা আমাদের রানিং খাতায় লিপিবদ্ধ করতাম, যা পরবর্তী রিভিউ ও মূল্যায়নে সহায়ক ছিল। প্রতিদিন রাত ৮:৩০ মিনিটে অনলাইনে দৈনিক মূল্যায়ন অনুষ্ঠিত হতো, যা একটি আধুনিক ও কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে আমাদের শক্তি, দুর্বলতা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করতে সহায়তা করেছে।
কোর্সের প্রথম দিন শুরু হয় ‘ইন্টিগ্রেশন ইন স্কাউটিং’ সেশনের মাধ্যমে। এরপর আইস-ব্রেকার্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পরিচয় ও পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা হয়। এ সময় কোর্সের নিয়মণ্ডকানুন, শৃঙ্খলা, করণীয় ও নিষিদ্ধ বিষয়, অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যাশা এবং কোর্সের উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরবর্তী সেশনগুলোতে ম্যানার্স ও এটিকেট, ফান্ডামেন্টালস অব স্কাউটিং, ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম পলিসি, সেইফ ফ্রম হার্ম পলিসি, স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান এবং ওয়ার্ল্ড স্কাউট মুভমেন্টের কাঠামো ও ইতিহাস বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যোগাযোগ দক্ষতা উন্নয়নের অংশে যোগাযোগের নীতিমালা, শ্রবণ ও ফিডব্যাক স্কিল, মৌখিক, লিখিত ও প্রেজেন্টেশন স্কিল, পাশাপাশি আইসিটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের শিক্ষা বিষয়ে আলোচনায় শিক্ষার নীতিমালা, তত্ত্ব, শৈলী এবং লার্নার-সেন্ট্রিক অ্যাপ্রোচ তুলে ধরা হয়। প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও কৌশলের অংশে ব্রেইনস্টর্মিং, বাজ গ্রুপ, গ্রুপ ডিসকাশন, প্যানেল প্রেজেন্টেশন, রোল প্লে, কেস স্টাডি, ডেমনস্ট্রেশন এবং বেস পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাত্ত্বিক আলোচনার পাশাপাশি কোর্সে ব্যবহারিক ও ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ম্যানেজমেন্ট স্কিলের অংশে অ্যাটিটিউড ও মোটিভেশন, ঝুঁকি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, সৃজনশীলতা, সময় ব্যবস্থাপনা এবং কনফ্লিক্ট রেজুলেশন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া ব্যাকডেটিং ও চেকলিস্ট, কোর্স ভেনু নির্বাচন, সেশন পরিকল্পনা, স্টাফিং, বাজেটিং, কোর্স প্রশাসন, মূল্যায়ন ও প্রতিবেদন প্রণয়ন সম্পর্কেও হাতে-কলমে ধারণা দেওয়া হয়। কাউন্সেলিং ও জেন্ডার ইস্যু সম্পর্কিত আলোচনা প্রশিক্ষণের মানবিক দিককে আরও সমৃদ্ধ করেছে। অধ্যাপক মোজাহেদ হোসেন, লিডার ট্রেনার, বাংলাদেশ স্কাউটস-এর সেশনের মাধ্যমে আমরা সোয়াট বিশ্লেষণ পদ্ধতি ব্যবহার করে নিজস্ব প্রশিক্ষণ চাহিদা বিশ্লেষণের কৌশল শিখেছি। এই পদ্ধতিতে শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ ও হুমকি বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিজের সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হয়, যা প্রশিক্ষণ পরিকল্পনাকে আরও বাস্তবভিত্তিক ও কার্যকর করে তোলে। একই সঙ্গে স্মার্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সেশনের উদ্দেশ্য নির্ধারণের কৌশল শেখানো হয়, যেখানে উদ্দেশ্য হয় সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, প্রাসঙ্গিক ও সময়সীমাবদ্ধ। এছাড়া কার্যবাচক ক্রিয়া বা অ্যাকশন ভার্বের যথাযথ ব্যবহার শেখানো হয়, যা প্রত্যাশিত শেখার ফলাফলকে আরও স্পষ্ট ও পরিমাপযোগ্য করে।
এই কোর্সের মাধ্যমে আমরা উপলব্ধি করি যে স্কাউট প্রশিক্ষণে ব্যবহারিক বিষয়গুলো বাস্তবভাবে শেখা ও প্রয়োগ করার জন্য বেস পদ্ধতি এবং ডেমনস্ট্রেশন পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর প্রশিক্ষণ মাধ্যম। এই দুটি পদ্ধতির মূল শক্তি হলো প্রশিক্ষণার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং শেখা-দেখা-করা-এই তিনটি ধাপকে সমন্বিতভাবে প্রয়োগ করা। বেস পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণার্থীদের সাধারণত ৬-৮ জনের ছোট ছোট দলে বিভক্ত করা হয়। প্রতিটি দল নির্দিষ্ট সময় পর পর ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে পর্যায়ক্রমে স্টেশন পরিবর্তন করে ঘুরে ঘুরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। প্রতিটি বেসে একজন বা একাধিক প্রশিক্ষক নির্দিষ্ট একটি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত, সুসংগঠিত ও ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। একই সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ থাকায় এই পদ্ধতিকে মোবাইল স্কুল বা ট্রাভেলিং স্কুল বলা হয়।
অন্যদিকে, ডেমনস্ট্রেশন পদ্ধতি একটি সুশৃঙ্খল ও কার্যকর দক্ষতাণ্ডহস্তান্তর পদ্ধতি, যেখানে একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক কোনো কাজ নিজে করে দেখিয়ে শেখান এবং প্রশিক্ষণার্থীরা তা অনুশীলনের মাধ্যমে আয়ত্ত করে। এই পদ্ধতিটি স্কাউটিংয়ে বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়, কারণ স্কাউট কার্যক্রমের অধিকাংশই ব্যবহারিক ও দক্ষতাভিত্তিক। ডেমনস্ট্রেশন পরিচালনার সময় প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীরা সাধারণত একই দিকে মুখ করে অবস্থান করে এবং প্রশিক্ষকের দুই পাশে প্রশিক্ষণার্থীরা দাঁড়ায়, যাতে সবাই স্পষ্টভাবে কাজটি পর্যবেক্ষণ করতে পারে। একটি কার্যকর ডেমনস্ট্রেশন পরিচালনার জন্য টিএসডিআর পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রথমে টি-টেলিং ধাপে বিষয়টি সম্পর্কে সংক্ষিপ্তভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এরপর এস-শোয়িং ধাপে প্রশিক্ষক নিজে কাজটি করে দেখান। তৃতীয় ধাপে ডি-ডুয়িং প্রশিক্ষণার্থীদের দিয়ে কাজটি করানো হয়, যাতে তারা হাতে-কলমে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। সবশেষে আর-রিভিউইং ধাপে কাজটি পর্যালোচনা করা হয়, ভুল সংশোধন করা হয় এবং প্রয়োজনীয় মতামত প্রদান করা হয়। এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও ফলপ্রসূ হয়।
কোর্সের পঞ্চম দিনে আমরা প্র্যাকটিকামে অংশগ্রহণ করি, যা দুই ধরনের ছিল, একটি তাত্ত্বিক এবং অন্যটি ব্যবহারিক। এই প্র্যাকটিকামে আমরা নিজেদের সেশন প্ল্যান তৈরি করি এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে সেশন পরিচালনা করি। প্রতিটি সদস্যকে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক বিষয় উপস্থাপনের জন্য ১৫ মিনিট করে সময় দেওয়া হয়। এই সময়ে আমাদের সেশন প্ল্যানের যথার্থতা, শেখানোর পদ্ধতি, উপস্থাপনার দক্ষতা এবং অংশগ্রহণকারীদের সম্পৃক্ততা মূল্যায়ন করা হয়। পাশাপাশি ব্যবহারিক কার্যক্রমগুলো সঠিকভাবে সম্পাদিত হচ্ছে কি না, তাও পর্যবেক্ষণ করা হয়। কোর্সের ষষ্ঠ দিন বিকালে আমরা মতবিনিময়ের মাধ্যমে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকারে অংশ নিই। এই সময়ে কোর্সে শেখানো পদ্ধতি, স্কাউটিংয়ের মূল বিষয়গুলো, বিশ্ব স্কাউট মুভমেন্টের মিশন, ভিশন, পলিসি এবং অন্যান্য আপডেট তথ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়। ব্যবহারিক বিষয়ের অংশ হিসেবে দড়ি ও পাইওনিয়ারিং সম্পর্কিত বিষয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া আইসিটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং পাওয়ার পয়েন্ট ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়েও মতবিনিময় করা হয়। সন্ধ্যায় সোশ্যাল নাইটে প্রতিটি টিম তাদের দলীয় পরিবেশনা উপস্থাপন করে এবং পরবর্তীতে আমরা ফেলোশিপ ডিনারে অংশগ্রহণ করি।
এই কোর্সে অংশগ্রহণকারী সকল প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ ও যোগ্য। তারা সবাই উডব্যাজপ্রাপ্ত এবং উডব্যাজ অর্জনের পর কমপক্ষে দুই বছরের বেশি সময় দক্ষতার সঙ্গে ইউনিট পরিচালনার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। পাশাপাশি দুইজন স্কাউটকে সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড অর্জনে সহায়তা এবং দুইটি ইউনিট লিডার বেসিক কোর্স-এর প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ৩০ বছরের বেশি এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম স্নাতক বা সমমানের হওয়ায় প্রশিক্ষণের গুণগত মান নিশ্চিত হয়েছে। আমাদের টিমের নাম ছিল ‘চ্যাটার হাউস’, যা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত মোট ৯ জন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত ছিল, যার মধ্যে দুইজন মহিলা লিডারও ছিলেন। এই টিমের সদস্য হিসেবে আমরা দলগত কাজ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পারস্পরিক সহযোগিতার বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আমাদের ফ্যাসিলিটেটর স্কাউটার মো. ফসিহ উর রহমান, লিডার ট্রেনার, বাংলাদেশ স্কাউটস মহোদয়ের প্রাজ্ঞ দিকনির্দেশনা ও উৎসাহ আমাদের আত্মবিশ্বাস ও নেতৃত্বগুণ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
সর্বকনিষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে এই কোর্সটি ছিল আমার স্কাউটিং জীবনের এক গভীর শিক্ষণ ও আত্মউন্নয়নের অধ্যায়। একজন উডব্যাজধারী স্কাউটার হিসেবে এই কোর্সে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমি কেবল জ্ঞান অর্জনই করিনি, বরং একজন দায়িত্বশীল, দক্ষ ও ভবিষ্যতমুখী প্রশিক্ষক হিসেবে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করার সুযোগ পেয়েছি। এই কোর্স আমাকে উপলব্ধি করিয়েছে, প্রশিক্ষক হওয়া মানে শুধু তথ্য দেওয়া নয়, বরং মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তোলা, দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেওয়া এবং নেতৃত্বের পথে অনুপ্রাণিত করা।
নাজমুল হাসান (পিআরএস, উডব্যাজার)
রোভার স্কাউট লিডার
