জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডলি জহুর দু’বছর পর গত জানুয়ারিতে ঢাকায় ফিরেছেন। অস্ট্রেলিয়ায় একমাত্র ছেলে রিয়াসাতের কাছে ছিলেন। বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার ঠিক আগেই তিনি চলে গিয়েছিলেন ছেলের কাছে। সেখানে গিয়েই তিনি আটকা পড়ে যান। গত দু’বছর রিয়াসাতের দুই সন্তান রইসা ও রাইয়ানের জীবনের অনিন্দ্য সুন্দর সময় কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরে আবার ছেলে, ছেলের বউ, নাতি-নাতনিদের জন্য ভীষণ মন খারাপ ডলি জহুরের। ছুটে যেতে ইচ্ছে করছে তাদের কাছে। কিন্তু ঢাকায়ও তার কিছু আনুষঙ্গিক কাজ রয়েছে। সে কাজগুলোও শেষ করাটা জরুরি। এদিকে ঢাকায় ফিরে ‘অভিনয় শিল্পী সংঘে’র নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন ডলি জহুর। মীর সাব্বির পরিচালিত ‘রাতজাগা ফুল’ সিনেমাটিও দেখেছেন সময় করে। তবে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত বায়োপিকে অভিনয়ের জন্য ডাক এসেছিল তার। কিন্তু যে সময়টাতে ডাক এসেছিল, সে সময়টাতেই ডলি জহুরকে ছুটে যেতে হয়েছিল ছেলের কাছে। যে কারণে বায়োপিকে তার থাকার সুযোগ রইল না। তবে বায়োপিকে যারা অভিনয় করেছেন, তাদের প্রত্যেকের জন্যই শুভকামনা জানিয়েছেন বরেণ্য এই অভিনেত্রী। দীর্ঘদিন পর ঢাকায় ফিরে ডলি জহুর বলেন, ‘একমাত্র ছেলে, ছেলের দুই সন্তান অর্থাৎ আমার আদরের দুই নাতি-নাতনিকে রেখে আসতে কষ্ট হয়েছে। কিন্তু তারপরও ঢাকায় আসতে হয়েছে। ঢাকায় এসে নিজের মতো করে সময় কাটাচ্ছি। সাব্বিরের রাত জাগা ফুল সিনেমাটি দেখলাম। খুব সুন্দর একটি সিনেমা। আমি সিনেমাটি দেখে ভীষণ আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। আর কাজের কথা যদি বলতে হয়, অনেক পরিচালকই যোগাযোগ করছেন। আমি একটু বুঝেশুনে কাজ করতে চাই। গল্পটা যেন খুব ভালো হয় এবং যথারীতি আমার চরিত্রটিও।’ ডলি জহুর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র রহিম নেওয়াজ পরিচালিত ‘অসাধারণ’। ‘শঙ্খনীল কারাগার’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রথমবারের মতো তিনি শ্রেষ্ঠ চরিত্রাভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর তিনি একই পুরস্কার লাভ করেন কাজী মোরশেদ পরিচালিত ‘ঘানি’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। হুমায়ূন আহমেদ রচিত ‘এইসব দিন রাত্রি’ নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে আলোচনায় আসেন ডলি জহুর। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘আগুনের পরশমণি’, ‘বিচার হবে’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’,‘ দীপু নাম্বার টু’, ‘রং নাম্বার’, ‘নিরন্তর’, ‘ঘানি’, ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ইত্যাদি।
