সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাবতার শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমি আজ। মন্দিরে মন্দিরে চলছে নানা আরাধনা। সেখানে সমবেত হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সি মানুষ। ধর্মীয় সঙ্গীতের পাশাপাশি চলছে আলোচনা সভা। জাগতিক ও পরলৌকিক কল্যাণ কামনায় নিমগ্ন থাকবেন সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দিনের কর্মসূচি। শাস্ত্রমতে, দ্বাপর যুগের শেষ দিকে এই মহাপুণ্য তিথিতে মথুরা নগরীতে অত্যাচারী রাজা কংসের কারাগারে বন্দি দেবকী ও বাসুদেবের বেদনাহত ক্রোড়ে জন্ম নিয়েছিলেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। মূলত দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্যই ওই সময়ে পৃথিবীতে আগমন ঘটে শ্রী কৃষ্ণের ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, ঈশ্বরতত্ত্বের মহান প্রতীক হলেন শ্রীকৃষ্ণ। বেদে তিনি ঋষিকৃষ্ণ, দেবতাকৃষ্ণ। মহাভারতে রাজর্ষিকৃষ্ণ, শাসক ও প্রজাপালক কৃষ্ণ, অত্যাচারী দমনে যোদ্ধাকৃষ্ণ। ইতিহাসে যাদবকৃষ্ণ, দর্শনশাস্ত্রে সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ কৃষ্ণ। শ্রীমদ্ভগবদ গীতায় অবতারকৃষ্ণ, দার্শনিক কৃষ্ণ, পুরুষোত্তম কৃষ্ণ ও ঈশ্বরায়িত কৃষ্ণ।
ঐতিহাসিকদের বিবেচনায় খ্রিস্টপূর্ব ৯০০-১০০০ সালে সনাতম ধর্মের প্রাণপুরুষ শ্রীকৃষ্ণের অবির্ভাব ঘটে। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের সময় বিশ্ব পাপ ও অরাজকতায় পরিপূর্ণ ছিল। তাই মানবজাতিকে রক্ষার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, শ্রীকৃষ্ণ তার জীবনাচরণ এবং কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের আরাধনা করেছেন।
আজ সরকারি ছুটি। জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান। রাজধানীতে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরসহ সারা দেশে দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে মহা ধুমধামে। জন্মাষ্টমী পালন উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নানা ধর্মীয় আড়ম্বর-আনুষ্ঠানিকতার আয়োজন করেছে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), রাজধানীর স্বামী ভোলানন্দ গিরি আশ্রম, প্রভু জগদ্বন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ, রাধামাধব জিউ দেব বিগ্রহ মন্দির, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, রাধাগোবিন্দ জিউ ঠাকুর মন্দির, শিবমন্দির, রামসীতা মন্দির, মাধব গৌড়ীয় মঠসহ বিভিন্ন মন্দির, পূজামণ্ডপ ও ধর্মীয় সংগঠন জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।