বাংলাদেশ এখন একটি অনিরাপদ দেশ
জিএম কাদের
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ এখন অনিরাপদ দেশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, দেশে মানুষের কোনো নিরাপত্তা নেই। সড়কে, কর্মক্ষেত্রে এমনকি ঘরেও নিরাপত্তা নেই। সম্পদের নিরাপত্তা নেই, ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই, মানুষের জীবনেরও নিরাপত্তা নেই। বেঁচে থাকার জন্য মানুষ যেখানে নিরাপত্তা খোঁজে, সেখানেই করুণ মৃত্যু হচ্ছে মানুষের। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর নর্থ সাউথ রোডে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। জিএম কাদের বলেন, ২০২২ সালের ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে ৫০ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ৬০ জন। এ বছর গেল ৪ মার্চ (শনিবার) সীতাকুণ্ডে সিমা অক্সিজেন লিমিটেডের কারখানায় বিস্ফোরণে সাতজন নিহত হন। আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। ৫ মার্চ রাজধানীর সাইন্সল্যাব এলাকায় একটি মার্কেটে বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ২৫ জন। গতকাল বুধবার রাজধানীর সিদ্দিক বাজার নর্থ সাউথ রোডের ভবনে বিস্ফোরণে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য। এখন দুর্ঘটনা যেন স্বাভাবিক ঘটনা।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা জানতে পারলাম না কেন গেল বছর চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। কারণ, সেখানে সরকারদলীয় লোকজন জড়িত। আমরা চাই, সব বিস্ফোরণের ঘটনায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক এবং তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হোক। কাদের ব্যর্থতায় এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, দেশের মানুষ তা জানতে চায়। গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, চরম অব্যবস্থাপনার জন্য পুরো দেশ নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। অব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ যেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। বিস্ফোরক সংরক্ষণ করতে হলে লাইসেন্স থাকতে হয়। লাইসেন্স পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। দুর্নীতি ও দলীয়করণের কারণে সব শর্ত পাশ কাটানো হচ্ছে। আমরা দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ সময় বিস্ফোরণে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। পাশাপাশি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিহত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কার ব্যর্থতায় এবং কেন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটছে দেশবাসী তা জানতে চায়। ভবিষ্যতে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা আর হবে না- এই নিশ্চয়তা সরকারের কাছে আমরা চাই। একের পর এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের জীবন যাচ্ছে। দুর্ঘটনায় হতাহতের দায় সরকার এড়াতে পারে না। নিরাপদ বাংলাদেশ সৃষ্টিতে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা রোধে সরকারের সাফল্য নেই। পরিদর্শনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক এ আদেল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফারুক আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে, যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমসহ জাতীয় পার্টির স্থানীয় নেতারা।
