পুলিশে সংস্কার আনা হবে
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ভ্যানে লাশের স্তূপ সাজানোর ১৪ সেকেন্ডের যে ভিডিওটি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, সেটি গত পাঁচই আগস্ট সাভারের আশুলিয়া বাইপাইল এলাকার একটি ঘটনা। সেদিন দুপুরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পরে বাইপাইল এলাকায় বিজয় মিছিল বের হয়। মিছিল শেষে বিকাল উত্তেজিত জনতা আশুলিয়া থানা ঘেরাও করে। কেউ কেউ গেট ভাঙতে এগিয়ে যান। এক পর্যায়ে পুলিশ ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই অনেকে নিহত হন।
পুলিশ মরদেহগুলো একত্রিত করে ভ্যানের উপর স্তূপ করে রাখে, যা ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা গেছে। পরে মরদেহগুলোতে আগুন দেয়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়। এ ঘটনার পর পুলিশ বাহিনীর সংস্কার নিয়ে কথা বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের তদন্ত দলের প্রস্তাব অনুযায়ী পুলিশের সংস্কার আনা হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি পুলিশের যে ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। সেই ভিডিও দেখার পর পুলিশ বাহিনীকে কোনোভাবেই সংস্কার সম্ভব কি না, কিংবা মানুষের আস্থা ফেরানো সম্ভব কি না- এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের যে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন আসবে, আপনি যদি তাদের কার্যপরিধি দেখেন, সেখানে উল্লেখ আছে এই ঘটনা যাতে আর কখনো না ঘটে, সেজন্য সিকিউরিটি রিফর্মস কি কি নিতে হবে সেগুলোর ব্যাপারেও তারা আমাদের বলবে। এছাড়া একটা পুলিশ কমিশনের কথা বলা হয়েছে। এগুলোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে যা ঘটে গেছে সেটা তো আমরা আনডু (ফিরিয়ে নেয়া) করতে পারব না। যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। তিনি আরো বলেন, আমরা ছোটবেলায় পড়েছিলাম দুষ্ট লোকেরা পুলিশ দেখলে ভয় পায়, কিন্তু আমরা এমন একটা সমাজে বাস করেছি যে ভালো লোকেরাই পুলিশকে দেখলে ভয় পায়। পুলিশ যে মানুষের বন্ধু- এটা প্রমাণ করা এখনো সম্ভব হয়নি। পুলিশ হয় এই দলকে দিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে, না হয় ওই দলকে দিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশের পুলিশ আর তাদের হয়ে ওঠা হয়নি। পুলিশের মধ্যেও কিন্তু পরিবর্তনের একটা বিশাল তাড়া আছে। তারা বুঝতে পারছে জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করতে অনেক কাজ করতে হবে। জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলো নিয়ে উপদেষ্টা আরো বলেন, আপনি ১৮৬১ সালের ব্রিটিশ আমলের পুলিশ আইন দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশ চালাচ্ছেন। ব্রিটিশরা কি বাংলাদেশে এসেছিল জনমুখী একটা পুলিশ দিতে? তা তো তারা আসেনি। সবকিছুই আলোচনা হয়েছে, পুলিশ কমিশন যখন হবে, যখন জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলো আমরা পাব, সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে কেমন করে একটা জনমুখী পুলিশ গড়ে তুলতে পারি সেটাই আমাদের ইচ্ছা।