সব হাসপাতালে সীমিত আকারে সেবা চালুর সিদ্ধান্ত চিকিৎসকদের
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
হাসপাতালে চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনার জেরে সারা দেশের সব হাসপাতালে সীমিত আকারে আউটডোর সেবা চালুর ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। তবে জরুরি বিভাগ আগের মতো চালু থাকবে। গতকাল সোমবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।
নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, বাংলাদেশের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে সীমিত পরিসরে আউটডোর সেবা চালু করা হবে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত আউটডোর চালু থাকবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে অবস্থান কর্মসূচি থাকবে। ইনডোর সেবা রুটিন ওয়ার্ক পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত সীমিত পরিসরে চালু থাকবে। ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা যে নতুন বাংলাদেশ দেখছি, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি সেটা মূলত বিগত ১৬ বছরে সম্ভব হয়নি। এর পুরোটাই সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। এই আন্দোলনের প্রধান দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের বিদায় এবং রাষ্ট্র সংস্কার। রাষ্ট্রের বড় মন্ত্রণালয় হচ্ছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আমরা দেখেছি চিকিৎসকদের ওপরে বারংবার আক্রমণ হয়েছে। সেগুলোর কোনোটাই সুষ্ঠু বিচার হয়নি। এরই ফলশ্রুতিতে গত ৩১ আগস্ট পুনরায় হাসপাতালের নিউরোসার্জারির কর্তব্যরত দুজন চিকিৎসক ডা. ইমরান ও ডা. মাসরাফির ওপর বর্বরোচিত হামলা হয়। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন ব্যর্থ হওয়ায় সর্বস্তরের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী সমাজ চারটি যৌক্তিক দাবি নিয়ে দেশব্যাপী চিকিৎসাসেবা কমপ্লিট শাটডাউনের কর্মসূচি গ্রহণ করে।
ডা. আব্দুল আহাদ আরো বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ম্যাডাম দীর্ঘক্ষণ আমাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাকে ধন্যবাদ জানাই, আমাদের আহ্বানে সাড়া দেয়ায় এবং সময় দেয়ার জন্য। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, যার প্রমাণ হিসাবে ঢামেক হাসপাতালে হামলাকারী একজন সন্ত্রাসী ও গত রোববার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে হামলাকারী চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরো ধন্যবাদ জানাই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঢাকা মেডিকেল, মুগদা হাসপাতাল ও ঢাকা ডেন্টাল হাসপাতালে ইমার্জেন্সিতে নিরাপত্তাবাহিনী প্রদান করায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেডিকেলসহ বাংলাদেশের সব হাসপাতালের ইমার্জেন্সি চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা এবং দেশদ্রোহী সেই দালাল সরকার এ দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ষড়যন্ত্র করার জন্য এই হামলা করেছে। তাই আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি অতি দ্রুত অন্যান্য মেডিকেলসমূহ এবং জেলা উপজেলা হাসপাতালে নিরাপত্তাবাহিনী নিয়োগ না করা হয় তাহলে এই আক্রমণ আবার আসতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে আমরা দুটি দাবি পেশ করছি। যে সন্ত্রাসীরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি, তাদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যেন এই ধরনের অপরাধ আর কোথাও না হয়। অতি দ্রুত চিকিৎসক ও রোগীদের কল্যাণ নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন এবং হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগে খসড়া প্রণয়ন করতে হবে।