অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমের বিষয়ে জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, মানুষ কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। এখন যারা দায়িত্বে আছেন, তারা এ দেশেরই মানুষ। আর আমরা দেশবাসী মিলে ঐকমত্যের ভিত্তিতে তাদের ওপর দায়িত্ব দিয়েছি। সুতরাং তারা যদি ভালো কিছু করেন, তাহলে দেশবাসী উপকৃত হবে, আমি উপকৃত হবো, আপনিও উপকৃত হবেন। কিন্তু তার আগে যদি কোনো ভুল করেন, আমরা তা ধরিয়ে দেব, সংশোধন করে দেব। তিনি বলেন, কিছু বিষয়ে এরকম আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে। আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছি, এতে আমরা ইতিবাচক ফল পেয়েছি। মানুষ হিসেবে তাদের জন্য আমাদের দোয়া করা উচিত। তারা যেন জাতির প্রত্যাশা ও আবেগের বাইরে কোনো কাজ না করেন। জাতির চেতনাকে তারা যেন ধারণ করে ২৪ বিপ্লবের চেতনাকে সম্মান করেন। আমরা তাদের কাছে এইটুকুই আশা করি। তবে আবেগবশত মাঝেমধ্যে দুই একটা জিনিস হয়ে যাচ্ছে, এটা হওয়া উচিত না। কী হয়ে যাচ্ছে এটা আপনারা (সংবাদকর্মী) সব বুঝেন, আমি সব কিছু ভেঙে বলতে চাচ্ছি না। গতকাল শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা শহরের হোটেল সাহিদ প্যালেসের কনফারেন্স রুমে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াত আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. শফিকুর রহমান। এর আগে তিনি কোরআনের আলোকে জীবনযাপন এবং মহানবীর আদর্শ প্রতিপালনে দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে সবার কাছে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিতে নির্দেশনা দেন।
ড. শফিকুর রহমান বলেন, দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আমাদের একটাই বক্তব্য, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করি। কোনো বিভক্তি নয়, ঐক্যই হোক এ জাতির সৌন্দর্য ও শান্তির প্রতীক। ভারত প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, আলাদা করে ভারতের ব্যাপারে আমরা কিছু বলব না। ভারত যেমন একটি দেশ, আমরাও একটি দেশ। ভারত ছাড়া আমাদের আরও প্রতিবেশী আছে এবং বিশ্বসভায় আরো অনেক দেশ আছে। সবার প্রতি আমাদের একই কথা, বিশ্বের সবাই আমরা মিলেমিশে পারস্পরিক মর্যাদা ও সমতার ভিত্তিতে আমাদের সম্পর্ক সামনে এগিয়ে নেব।
রাষ্ট্র সংস্কারে বর্তমান (অন্তর্বর্তী) সরকারকে কতদিন সময় দিতে চান সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবিলম্বে আপনারা দেখতে পাবেন, কতটুকু সময় তারা পাবে বা আমরা কী চিন্তা করছি, ইনশাল্লাহ জানতে পারবেন। গতদিন খুলনাতে আয়োজিত রুকন সম্মেলনে ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিদায় নিতে হবে’ এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ড. শফিকুর রহমান বলেন, ‘এটা আমরা আগে থেকেই বলছি, যৌক্তিক সময়ে আমরা হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেব। দেরি করব না ইনশাল্লাহ।’ চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মোবারক হোসাইন। এতে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমীন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা আমির মাওলানা তাজউদ্দীন খান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাশেম, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুবুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলার সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান, মেহেরপুর জেলার সেক্রেটারি ইকবাল হোসাইন, চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আনোয়ারুল হক মালিক, চুয়াডাঙ্গা জেলার সহ-সেক্রেটারি আব্দুল কাদের, মাসুদ পারভেজ রাসেল, ইসলামী ছাত্র শিবিরের চুয়াডাঙ্গা জেলার সভাপতি হাফেজ মোহসিনসহ অন্যান্য নেতারা।
সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার ৪২০ জন রুকন উপস্থিত ছিলেন।