আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায়ে বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রোহিঙ্গা গণহত্যার তদন্ত নিয়ে আলোচনা করেছেন। করিম খান চলতি বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। খবর আনাদোলুর।
করিম খান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে করিম খান রোহিঙ্গা গণহত্যার চলমান তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে বাংলাদেশের নেতাকে অবহিত করেন। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আইসিসি এই তদন্ত শুরু করে। বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় তিন দফা প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাবগুলো হলো: - ১। জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বে জরুরি সম্মেলন আয়োজন করে বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং সমাধান নির্ধারণ।
২। রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট মোকাবিলায় যৌথ উদ্যোগকে পুনরুজ্জীবিত করা। ৩। রাখাইনে ২০১৭ সালে সংঘটিত গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা গড়ে তোলা। ইউনূসের এই প্রস্তাব সম্পর্কে করিম খান বলেন, এই তিনটি প্রস্তাব যথার্থ। এর আগে, গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ সফরের সময় করিম খান রোহিঙ্গা গণহত্যার তদন্তে মিয়ানমারের সীমিত অংশগ্রহণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল বৃদ্ধির আহ্বান জানান এবং রোহিঙ্গাদের কল্যাণ শুধুমাত্র বাংলাদেশের দায়িত্ব নয় বলে জোর দেন। এছাড়া বৈঠকে মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের সাম্প্রতিক জুলাই-আগস্টের বিদ্রোহের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের জন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া সম্পর্কেও জানতে চান। এই বিদ্রোহে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ২০ হাজারেরও বেশি আহত হয়। বিদ্রোহটি শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের মাধ্যমে শেষ হয়।
জবাবে করিম খান জানান, বাংলাদেশ এই ধরনের অভিযোগ হেগ-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দায়ের করতে পারে। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়েরের জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।