উজানের ঢল ও টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি কমার সাথে সাথে ভোগান্তিতে পড়ছে বানভাসি মানুষ। এদিকে জেলার পানি উঠায় ১৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ দান বন্ধ রয়েছে।
গতকাল সোমবার সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। জানা গেছে, রোববার রাত থেকে তিস্তার পানি কমতে শুরু করেছে। জেলার কিছু মানুষ ঘরবাড়িতে ফিরতে শুরু করলেও সদর উপজেলা ও আদিতমারী উপজেলার কিছু বানভাসি মানুষ পানি থাকায় এখনো ঘরবাড়িতে ফিরতে পারেনি। বন্যায় রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, পানি উঠে পড়ে রেললাইনেও।
বন্যার কারণে লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১১টি এবং আদিতমারী উপজেলার ৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। জেলার তিস্তা সংলগ্ন অনেক বানভাসিরা জানান, গত তিনদিন ধরে ঘর দুয়ারে পানি ছিল তা কমে গিয়েছে। তবে বন্যায় রাস্তাঘাট ভেঙে যায়, ফলে চলাফেরা নিয়ে খুবই কষ্টে পড়েছে ভুক্তভোগীরা। সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা এখনো পায়নি বলেও জানান অনেকেই।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, গত দুইদিন থেকে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পেয়ে অত্র ইউনিয়নের ঘরবাড়ি ডুবে গিয়েছিল। বর্তমানে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আমার ইউনিয়নে সরকারিভাবে পাঁচ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছি, তা বিতরণ চলছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের পাউবোর উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, উজানের ঢল আর বর্ষণে তিস্তায় পানির প্রবাহ বেড়েছিল। তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, বন্যাকবলিত মানুষদের ১৩ লাখ টাকা ও ৯০ টন জিআর চাল বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ শুরু হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।