বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্থ খরচ হয়েছে ১৩ হাজার ২১৫ কোটি টাকা, যা মোট এডিপি বরাদ্দের ৪.৭৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে সরকারের এডিপি বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। এডিপি বাস্তবায়নের এ হার এ যাবত কালের সর্বনিম্ন। গতকাল সোমবার আইএমইডি এডিপি বাস্তবায়নের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। আইএমইডির ওয়েবসাইটে ২০১০-১১ অর্থবছর পর্যন্ত তথ্য পাওয়া যায়। দেখা গেছে, আগের বছরগুলোতে ৮-১০ শতাংশের বেশি হারে এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে। আইএমইডির কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শুরুতে সাধারণত প্রস্তুতিমূলক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ কারণে অর্থবছরের শুরুতে এডিপি বাস্তবায়ন হার কম থাকে। এ ছাড়া জুলাই মাসজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাংলা ব্লকেড ও অসহযোগ আন্দোলনের প্রভাবও এডিপি বাস্তবায়নে পড়েছে। একই পরিস্থিতি ছিল আগস্ট মাসেও। আগস্ট মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন এবং এরপর ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু আগস্ট মাসজুড়ে প্রশাসনে অস্থিরতা দেখা যায়। এতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও স্থবির হয়ে পড়ে। আবার বিদেশি প্রতিনিধি ও পরামর্শকরা প্রকল্প সাইট ছেড়ে চলে যান। এতে প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যাহত হয়। এ ছাড়া নতুন করে এডিপি অর্থছাড়ও কম করছে। সরকার শুধু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থছাড় করছে। অন্যদিকে, সরকার পাইপলাইনে থাকা প্রস্তাবিত প্রকল্পের পাশাপাশি চলমান প্রকল্পও নতুন করে পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর মধ্যে চলমান অনেক প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাবও আটকে গেছে। সব মিলিয়ে এডিপি বাস্তবায়নও স্থবির হয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, নতুন সরকার সব প্রকল্প পর্যালোচনা করছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর অনেক অগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে সরকার। এ কারণে এই মুহূর্তে অনেক প্রকল্পে অর্থছাড়ও কম হচ্ছে। এর প্রভাবে এডিপি বাস্তবায়নেও ধীর গতি দেখা দিয়েছে।