সাংবিধানিক শূন্যতার পর অবশেষে যাত্রা শুরু করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এস এম মো. নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল রোববার নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এস এম মো. নাসির উদ্দীন ও চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনুষ্ঠানিক শপথের মধ্যে দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু হলো। এখন তাদের সমনে নতুন বাংলাদেশের নতুন চালেঞ্জ।
গতকাল রোববার দুপুর দেড়টার পর সুপ্রিমকোর্টের জাজেস লাউঞ্জে তাদের শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শপথ নেয়া চার কমিশনার হলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। এর আগে শপথ নিতে দুপুরের দিকে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে আসেন সিইসিসহ চার নির্বাচন কমিশনার। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রথমে নতুন সিইসিকে শপথ পাঠ করানো হয়। এরপর শপথ নেন চার নির্বাচন কমিশনার। সংবিধানের ১১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন সিইসি এবং চার নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেন।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর আড়াই মাস পর গত বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন।
এরআগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের লক্ষ্যে গঠিত ছয় সদস্য বিশিষ্ট সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নতুন ইসি গঠন করা হয়। গত ২৯ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘দ্য চিফ ইলেকশন কমিশনার অ্যান্ড আদার ইলেকশন কমিশনারস অ্যাপয়েনমেন্ট অ্যাক্ট, ২০২২’ এর ধারা-৩ অনুযায়ী এই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা ছিলেন-হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশের মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম।
এই অনুসন্ধান তথা সার্চ কমিটির কাছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল ও পেশাজীবী সংগঠনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত পর্যায়েও আগ্রহী ব্যক্তিরা নাম প্রস্তাব করেন। সার্চ কমিটির আহ্বানে নতুন ইসি গঠনের লক্ষ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ মোট ১৭টি দল-জোট নাম প্রস্তাব করেছিল। বিভিন্ন দলের ও সংগঠনের প্রস্তাব থেকে সার্চ কমিটি গত বুধবার ২০ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম সুপারিশ করে।
৭৯ দিন পর সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণ : অবশেষে আড়াই মাস পর সাংবিধানিক শূন্যতা কাটল নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন ৭৯ দিন পর যোগ দিলেন নির্বাচন ভবনে। এর আগে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন গত ৫ সেপ্টেম্বর সরকারের পট-পরিবর্তনের পর পদত্যাগ করলে সৃষ্টি হয়েছিল সাংবিধানিক শূন্যতা।
নাসির কমিশনকে এর আগে প্রধান বিচারপতি সুপ্রিমকোর্টে গতকাল রোববার দুপুর দেড়টায় শপথ পাঠ করান। এরপরই তারা আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আসনে পৌনে তিনটার দিকে। এ সময় ইসি কর্মকর্তারা তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
সংবিধান অনুযায়ী, কোনো কমিশন শপথ পাঠ করে দায়িত্ব নেওয়ার পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পান। এক্ষেত্রে অন্য কোনো সংকট সৃষ্টি না হলে পরবর্তী পাঁচ বছর এ কমিশন দায়িত্ব পালন করেন। এদের অধীনেই হবে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচন। সংবিধান অনুযায়ী, কোনো কমিশন শপথ পাঠ করে দায়িত্ব নেয়ার পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পান। এক্ষেত্রে অন্য কোনো সংকট সৃষ্টি না হলে পরবর্তী পাঁচ বছর এ কমিশন দায়িত্ব পালন করেন। এদের অধীনেই হবে এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচন। গত বৃহস্পতিবার সিইসিসহ চার কমিশনার নিয়োগ দেন।