পাঁচটি বিসিএসের মাধ্যমে মোট ১৮ হাজার ১৪৯ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি বলেন, এর মধ্যে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া হবে ১২ হাজার ৭১০ জন এবং নন-ক্যাডার পদে ৫ হাজার ৪৩৯ জন। গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
৪৩তম বিসিএস : ৪৩তম বিসিএসের সব পরীক্ষা শেষে ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে ইতোমধ্যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি যোগদানের তরিখ নির্ধারিত আছে। গেজেট প্রকাশের পর এই নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা সৃষ্টি হওয়ায় ক্লিন ইমেজের প্রার্থী নিয়োগের স্বার্থে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের মাধ্যমে অধিকতর যাচাই-বাছাই চলমান আছে।
৪৪তম বিসিএস- এই বিসিএসে ক্যাডার পদে ১৭১০ জন নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল।
৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময়ে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা চলমান ছিল। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল ১১ হাজার ৭৩২ জন। এর মধ্যে ৩ হাজার ৯৩০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ৫ আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতিতে গত ২৫ আগস্ট এই মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সম্প্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর অধিকতর স্বচ্ছতার স্বার্থে আগের নেয়া ৩ হাজার ৯৩০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন এই বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব প্রার্থীর অর্থাৎ ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নতুন করে নেওয়া হবে।
৪৫তম বিসিএস : ৪৫তম বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯ জনকে ক্যাডার পদে নেওয়া হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ হবে চিকিৎসায়। সহকারী ও ডেন্টাল সার্জন মিলিয়ে চিকিৎসা ক্যাডারে ৫৩৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এই বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১২ হাজার ৭৮৯ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছিল। লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রথম পরীক্ষক কর্তৃক মূল্যায়ন শেষে দ্বিতীয় পরীক্ষকের মূল্যায়নের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে ছিল। সম্প্রতি নতুন কমিশন গঠনের পর লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে এই লিখিত পরীক্ষার সব উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষককে দিয়ে মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
৪৬তম বিসিএস : এই বিসিএসে ৩ হাজার ১৪০টি ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে স্বাস্থ্য ক্যাডারে। সহকারী সার্জন ১ হাজার ৬৮২ জন, আর সহকারী ডেন্টাল সার্জন ১৬ জন নেওয়া হবে। ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল গত ৯ মে প্রকাশিত হয়। এ পরীক্ষায় ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য বৈষম্যদূর করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে সমসংখ্যক অর্থাৎ ১০ হাজার ৬৩৮ জন যোগ করে সর্বমোট ২১ বাজার ২৭৬ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৪৭তম বিসিএস : ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারে ৩ হাজার ৪৮৭টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে অধিযাচন পাঠানো হয়েছে। এখনো বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি।
বঞ্চিত কর্মকর্তাদের গ্রেড-১ দেয়া হবে : বঞ্চিত কর্মকর্তাদের গ্রেড-১ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি বলেছেন, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি দিয়ে বিদায় দেওয়া হবে। গতকাল রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সচিব।
বঞ্চিত সবাই গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি পাবেন কি না-প্রশ্নে সিনিয়র সচিব বলেন, বঞ্চিত যারা অতিরিক্ত সচিব, পদোন্নতি পেয়েছেন ১৩ দিনে তিন পদোন্নতি। এটা বিষয় না। তারা সারা বছরই বঞ্চিত ছিলেন। এই বঞ্চিত যারা অতিরিক্ত সচিব হয়ে চাকরির শেষ প্রান্তে, সিদ্ধান্ত হয়েছে গ্রেড-১ দিয়ে তাদের পদোন্নতি দেব। অনেকের এক মাস আছে, ১৫ দিন আছে, ২০ দিন আছে। এটা আমি মনে করি, অনেকের পদোন্নতি হবে এবং সামাজিক, পারিবারিক, আর্থিকভাবে তারা উপকৃত হবেন। এটার জন্য তারা চাকরি করেন। দাবি করার আগেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সবাইকে কি গ্রেড-১ পদোন্নতি দিতে পারবেন-এ বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারি যারা চাকরি করি বিধি-বিধানের মাধ্যমে করতে হয়। যদি ডিসিপ্লিনারি মামলা থাকে, ফৌজদারি মামলা থাকে, যদি কারও বিরুদ্ধে কারও যেমন এক কলিগের বিরুদ্ধে আরেক কলিগের মোটরসাইকেল চুরির মামলা; মানে মামলা-মোকদ্দমা-অভিযোগ-তদন্ত থাকে। এদের বিবেচনায় আনা হবে না। তাদের গ্রেড-১ দেওয়া হবে না।
মোখলেস উর রহমান জানান, সরকার ৪৩ থেকে ৪৭তম বিসিএসে মোট ১৮ হাজার ১৫৪ জন প্রার্থী নিয়োগ দেবে।
সচিব আরও বলেন, সরকারি ১৫ লাখ কর্মচারী। অনেকেই বুঝতে পারছেন না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক মাস বাড়িয়েছে। আমরাও চিন্তা করছি এক মাস বাড়ানোর। আমরা ওপর থেকে সিদ্ধান্ত পেয়েছি, বাড়াবো।