জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় তোলপাড়

প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শওকত আলী, চাঁদপুর ও নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে থামানো অবস্থায় থাকা মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের আল বাখেরাহ নামক জাহাজ থেকে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার এবং গুরুতর আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে ওই ইউনিয়নের মাঝের চর নামক স্থান থেকে নিহতদের মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ। পুলিশের ধারণা জাহাজে ডাকাতিতে বাঁধা দেয়ায় এই ঘটনা ঘটে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান। নিহতরা হলেন- জাহাজের মাষ্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রীজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত একজনের নাম জানাযায়নি। আর আহত ব্যাক্তি হলেন-জুয়েল। আহত ও নিহত ব্যাক্তিদের বাড়ী নড়াইল জেলায়। এদিকে, চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মালবাহী জাহাজ থেকে সাতজনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের অপর জাহাজ মুগনি-৩ এর মাষ্টার বাচ্চু মিয়া ও গ্রীজার মো. মাসুদ জানান, সারবহনকারী আল বাখেরাহ গত রোববার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসে। এরই মধ্যে কোম্পানীর মালিক শিপন বাখেরাহ জাহাজে ফোন করে কাউকে পায়নি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মুগনি জাহাজ থেকে যোগাযোগ করার জন্য বলে। ওই সময় মুগনি জাহাজটি মাওয়া থেকে ঘটনাস্থল দিয়ে অতিক্রম করার সময় বাখেরাহ জাহাজটি দেখতে পায়। ওই সময় তারা জাহাজের লোকদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯ কল দেয়।

এদিকে ৯৯৯ এ কলের সূত্র ধরে চাঁদপুর থেকে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান এর উপস্থিতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ জাহাজা থেকে প্রথমে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে এবং ৩জনকে আহত অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ আনিসুর রহমান বলেন, জুয়েল নামে আহত একজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা ও শ্বাসনালিও কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। আর উদ্ধার করে আন সজিবুল ও মাজেদুলকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, জাহাজে ডাকাতি করতে বাঁধা দেয়ায় তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, আহত একজন হাতের ইশারায় জানিয়েছে তারা ৮জন ছিলেন। ঘটনাটি কিভাবে হয়েছে এই মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না। ডাকাতি, কিংবা অন্য কোন কারণে হতে পারে। তদন্ত করার পরে জানা যাবে। নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সাথে নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ এই রুটে পন্যাবাহী জাহাজ চলাচল করে। যাতে করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করা হয়।

এদিকে হাসপাতালে নেয়ার পর একজন কাগজে লেখেন যে, তার নাম জুয়েল। গলা আংশিক কাটা থাকায় তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।